CBI todonte mukul
কাজল ভট্টাচার্য, সিনিয়র জার্নালিস্ট, কলকাতা:

রাজ্য গোয়েন্দা প্রধান রাজীব কুমারকে ধরতে ব্যর্থ সিবিআই। ওই ব্যর্থতার থেকে চোখ সরাতেই কি গ্রেপ্তার করা হলো বর্ধমানের প্রাক্তন পুলিস সুপার এসএমএচ মির্জাকে? দেওয়ালে কান পাতলে এমনটাই শোনা যাচ্ছে নানা মহলে।

ওদিকে প্রশ্ন উঠে গেল মুকুল রায়ের সদিচ্ছা নিয়েও। বৃহস্পতিবার মির্জাকে পাঁচদিনের জন্য হেপাজতে পাওয়ার পরেই সিবিআই তলব করে বিজেপির নেতা মুকুল রায়কে। শুক্রবার সকালেই নিজাম প্যালেসে হাজির হন মুকুলের দুই প্রতিনিধি। তাঁরা জানান, দলের কাজে ব্যস্ত থাকায় আজ হাজির হতে পারবেন না মুকুল। আগামী ২ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি সময় চান। সিবিআই অবশ্য সেই আর্জিতে সম্মত হয়নি। মুকুল রায়কে আগামিকার হাজির হতে বলা হয়েছে।

মির্জাকে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের মুখোমুখী বসিয়ে জেরা করতে চান সিবিআই কর্তারা। এর আগেও মুকুল রায় এবং মির্জাকে একাধিকবার আলাদা আলাদা ভাবে জেরা করেছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। অভিযোগ, মির্জার দেওয়া তথ্যে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা হয়।

গত ৩ জুলাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জেরার মুখে পড়তে হয়েছিল আইপিএস অফিসার মির্জাকে। নারদ পোর্টাল নিউজকর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশনে মির্জাকে দেখা গেছিলো স্যামুয়েলের হাত থেকে টাকা নিতে। এর আগে জিজ্ঞাসাবাদের সময় মির্জা যে তথ্যগুলো দিয়েছিলেন, তা অসঙ্গতিতে ভর্তি ছিল বলেই সিবিআইয়ের দাবি। এছাড়াও তিনি বহু তথ্য চেপে গেছেন। স্টিংকর্তা স্যামুয়েলের কথার সঙ্গেও বেশকিছু জায়গায় অমিল ছিল মির্জার বয়ানে।

নারদ কেলেঙ্কারির ভিডিওতে মির্জাকে দেখা গেছিলো মোটা টাকা নিতে। ওই লেনদেনের সময়েই মির্জার কাছে একটা ফোন আসে। তার উত্তরে মির্জা জানিয়েছিলেন, এক কোটি সত্তর লক্ষ টাকা তিনি জায়গামতো পৌঁছে দিয়েছেন। কে ফোনে ওই কল করেছিল, আর কার কাছেই বা মির্জা ওই টাকা পৌঁছে দিয়েছিলেন, তার রহস্য উদ্ধার করাটাই এখন চ্যালেঞ্জ জেরাকর্তাদের কাছে। অভিযোগ ওঠে মুকুল রায়ের নির্দেশেই ওই লেনদেন হয়েছিল। অভিযোগ সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছেন মুকুল। তিনি বলেন, "ও বর্ধমানে ব্যবসা করতে চেয়েছিল, বলে মির্জার সঙ্গে কথা বলতে বলি। টাকা নিয়ে একটি কথাও হয়নি।"

এবার বর্ধমানের প্রাক্তন পুলিস সুপার এসএমএচ মির্জা, প্রাক্তন তৃণমূল হেভিওয়েট মুকুল রায়কে মুখোমুখী বসিয়ে ঘটনার জট খোলার চেষ্টা করবে সিবিআই, এমনটাই অনুমান করা হচ্ছে।

ঘটনার কথা কানে যেতেই খুশি স্যামুয়েল। "অপারেশনের ফল মিলতে শুরু করেছে,' বলেন তিনি।

সারদা, নারদার দুই কেলেঙ্কারিতেই জড়িয়ে পড়ে মুকুলের নাম। এরপরেই তাঁকে ছ'বছরের জন্য সাসপেন্ড করে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৭ সালের অক্টোবর। দলে ইস্তফা দিলেন মুকুল রায়। তারপরেই নভেম্বরে যোগ দিলেন বিজেপিতে।

মির্জার গ্রেপ্তারের পরেই শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক চাপান উতোর। "ঘটনার পেছনে যাঁরা রয়েছে তাঁদেরকে ধরা হোক। মির্জার মতো সরকারি পদস্থ কর্তারা তাঁদের হয়েই কাজ করেন।" বলেছেন সিপিএম নেতা তথা শহরের বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।

"তদন্তের কতটা নিরপেক্ষ, কতটা গিমিক, সময়ই বলবে।" মুকুলকে সিবিআইয়ের তলব প্রসঙ্গে

মন্তব্য তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours