হীরক মুখোপাধ্যায়, লেখক, হাওড়াঃ
স্বাধীনতার 72 বছর অতিক্রান্ত। অনেক রক্ত, ত্যাগ আর মহা সংগ্রাম এর মধ্যে
দিয়ে এসেছিল স্বপ্নের স্বাধীনতা। এক শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন আদর্শ দেশ গড়ার
উদ্দেশ্য
নিয়ে দেশের স্বাধীনতার জন্য হাজার হাজার মানুষ একদিন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
কিন্তু
আজ একটা প্রশ্ন বারংবার ঘুরে ফিরে আসছে তা হল, যে স্বপ্ন বুকে নিয়ে একদিন
হাজার হাজার তরুণ প্রাণ সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই
করেছিল, যে আদর্শের জন্য দেশ মায়ের এত সন্তান অক্লেশে আত্ম বলিদান
দিয়েছিল তা সত্যিই কি আজও বাস্তবায়িত হয়েছে ?
এখনো
আমরা এই 72 বছরেও বহু অমীমাংসিত বিষয়ের মীমাংসা করতে পারিনি। ব্রিটিশ
শাসনের শোষণ ও বৈষম্য আজও আমাদের দেশের প্রতিটি রন্ধ্রে রয়ে গেছে।
ব্রিটিস
শাসকেরা যেভাবে আমাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করত আজও তা একই রকম
ভাবে চলছে। শুধুমাত্র শাসক বদলেছে। শোষণ ,বৈষম্য এবং অধিকার খর্ব করার
প্রচেষ্টা এগুলো বদলায়নি।
তাইতো এখনো একদল মানুষ যখন
একটু খাবারের সন্ধানে ভিক্ষাবৃত্তি করে বেড়াচ্ছে তখন অন্যদিকে অপর একদল
মানুষ বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে। আর ইংরেজ সরকার সেদিন ভারতবর্ষে যে
সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছিল তার বিষ আজও আবার নতুন ভাবে মাথাচাড়া
দিচ্ছে অথচ এই সাম্প্রদায়িকতার বিষ যাতে সর্বত্র ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য
যে সর্বাত্মক চেষ্টা তা সে ভাবে লক্ষ্য পড়ে না।
যদিও
এসবের মধ্যেও দেশের অগ্রগতি যে একেবারেই হয়নি সে কথা বলা যায় না। বরং
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, অর্থ, শিল্প, শিক্ষা এবং সামরিক শক্তিতে আমরা প্রভূত
উন্নতি করেছি। মহাকাশ অভিযান ও গবেষণায় আজ পৃথিবীতে আমাদের দেশ এক অন্যতম
প্রধান দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে । বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম পরমাণু
শক্তিধর আমাদের ভারত। যা নিয়ে আমরা গর্ব করতেই পারি।
তবুও
শাসন ব্যবস্থায় স্বজন পোষণ ,দুর্নীতি পরায়ণতা, দল দাদাগিরি বড় বিপদজনক
হয়ে উঠেছে। যাই হোক স্বাধীনতার 72 বছর পরে আমরা আর অন্যের অদৃশ্য আঙ্গুলের
ইশারায় নিজেদের মধ্যে হানাহানি করব না ,অধিকার নিয়ে মারামারি করব না ।সব
ভুলে নিজনিজ ক্ষেত্রে নিজেদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করব এটাই হোক
আমাদের স্বাধীনতা দিবসের অন্যতম শপথ।
এই প্রসঙ্গে
হরিপুরা কংগ্রেস 1938 খ্রিস্টাব্দে দেশ নায়ক নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোসের
সভাপতির অভিবাসনের এই অংশটুকু অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয় এবং
বর্তমানেও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যপূর্ণ ।
"
আমাদের যে সংগ্রাম তা কেবল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে নয়, বিশ্ব
সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধেও যার প্রধান স্তম্ভ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। আমরা
চাই একমাত্র ভারতের জন্যই সংগ্রাম করছি না, বিশ্ব মানবতার জন্যও আমাদের
সংগ্রাম। বি মুক্ত ভারত অর্থ মানব জাতির মুক্তি।
জয় হিন্দ। বন্দে মাতরম।
অনেক ধন্যবাদ আর শুভেচ্ছা জানাই।
ReplyDelete