মোনালিসা মুখোপাধ্যায়, ফিচার রাইটার, হুগলি:
সারাদিন
আজ গান হবে অ্যায় মেরে ওয়াতন কে লোগো/ পাল্লা,দিয়ে বন্দেমাতরম। পা দোলাতে
দোলাতে রকে বসে কেউ শুনবে জাতীয় সঙ্গীত।সারা পাড়া ফাটবে মাইকের আওয়াজে।
ফুটবল খেলবে তরুণ প্রজন্ম।তারপর বাড়ি ফিরে মাংস ভাত খেয়ে বিকেলটা পিকনিক।
পান এবং আহার। মোটামুটি এই চিত্র কমবেশি সব জায়গায়। সোশ্যাল মিডিয়া পতাকা
ভরে যাবে। নেতারা বুলি দেবেন।পার্টি অফিস ভর্তি থাকবে। কোন কোন জায়গায়
নেতাজী অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবেন মালা পরে।কত দেশ ভক্তি। ওই দূরেই ছেঁড়া
জামা পরা এক ছোট্ট কুড়িয়ে জমা করবে আর ভাববে স্বাধীনতা কি? খায় নাকি
মাথায় দেয়।হ্যাঁ এটা তো গতির যুগ।কেন নেতাজী বলেছেন তো "কদম কদম বঢ়াহে যা।"
হ্যাঁ আমরা এগিয়ে চলেছি তরতর করে। কে রইলো পড়ে পিছিয়ে দেখার কি দরকার?
দেশপ্রেম দিয়ে কি ধুয়ে জল খাবো? ও তো সীমানা পাহারাদারের দায়িত্ব। আর যারা
প্রশাসনের দায়িত্বে আছেন তারা দেশপ্রেমের জন্য জীবন দেবেন।আমরা তো পতাকা
কিনে উড়িয়েছি আবার কি? আমি বা আমরা বরং স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কোন শপিং
মলে কি ডিসকাউন্ট দিচ্ছে দেখে পূজোর বাজারটা সেরে নেব। বাইকে গাড়িতে পতাকা
বাড়ির ছাদে পতাকা উড়িয়ে প্রমানও করে দেব আমি কত বড় দেশভক্ত।
সবাই গর্বিত দেখছি ভারতীয় হিসেবে। কিন্ত ঠিক কী কারনে ?
যাদের
রক্তের বিনিয়মে দেশ স্বাধীন হলো তাদের ভুলে এই একদিন মনে করার জন্য? না
আমরা কোনো গর্বের কাজ করেছি ? চারপাশ যা বলছে তা দেখে বলবো, আমরা
প্রতিবাদের ভাষা হারিয়েছি, মানবিকতা হারিয়েছি ,হারিয়েছি মূল্যবোধ. আমাদের
কোন কাজে গর্ব করবে আমাদের উত্তরসুরীরা ?নাকি তারাও আমাদের মত সেই শহীদদের
ছবি দেখে এই একই কথা বলবে আমরা গর্বিত ভারতীয়.তারপর দেশপ্রেম ভুলে ভাষা
ভুলে ,সংস্কৃতি ভুলে নয় বিদেশে চাকরী বা দেশে বসে আপাদমস্তক সাহেব হয়ে
থাকবো.ক্ষতি কী ?
দেশপ্রেমের কী আর কেউ নেই? নাকি পালিয়ে যাচেছ স্বাধীনতা দিবস!
নচিকেতার ভাষা ধার করে বলতে পারি।
"তবু রেডিওটা টিভিটার সাথে সুর ধরে সারে যাঁহা সে আচ্ছা।"
Post A Comment:
0 comments so far,add yours