rabindranath
প্রিয়াঙ্কা সরকার, লেখিকা, বর্ধমান: 

শহরের পাঁজরে আলোর সুবাস ছেড়ে, বাঁশির মিথের মতো গ্রাম্য লাবণ্য হৃদয়স্পর্শী হয়েছে রবীন্দ্রনাথের।  কিন্তু অদ্ভুত পাংশুবর্ণ অন্ধকারে কুঠিবাড়ির বারান্দা যেন সূর্য স্পর্শ করে না। অনাবৃত অবনত পৃথিবী ছুঁতে চাইলে কি পাওয়া যায়!! ইন্দিরাই কি সেই মেয়ে যাকে আঁকড়ে থাকতে চায় এক শ্যামল মৃত্যু বিস্তৃতির পাতা ছুঁয়ে আছে সময়। অবস্থার সাথে অকাল সুখে আজ নদী হিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ৷ তমশাময় শরীরে যদি আজ আংশিকের আবেগ সং যুক্তি হয়, তবে উত্তাল হৃদয়ে যে আজ বোবা হয়ে গেছে।  স্পর্শ সুখে ইন্দিরা কতটা বাস্তববর্জিত বলে মনে হয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রকৃতি আজ মা হয়ে বড়ো উপভোগ করতে শেখায়।

আজ ইন্দিরা চায় আকন্ঠ মদিরার ফলার মতো সুখী হয়ে অনন্তের কূলে একটিবার চুপ হতে। তাঁর দুজনেই প্রান্তবর্তী সীমানার দুই মানুষ।  অশ্রুজলের ঘনঘটা তো প্রায় বর্ণহীন৷ আকাশটাই তো মেঘের রূপক আজ৷ স্তরে স্তরে জমেছে মেঘ। তন্ত্ররাজির শ্রবণমূলে কি কান্না, গীতশূন্য কূলে যাত্রা৷ সূর্যহীন আকাশে অবিশ্রান্ত ধ্বনি। ঘটনার সাথে একাকীত্বের অবহেলা, বিচ্ছেদ তো মেঘের পরিচায়ক। 

প্রিয়জনের  বিয়োগ-ই তো মেঘ বঞ্চনার কারণ। রবিকাকা বলেন, মনের গঠন না হলে তো তাঁকে ভালোবাসা অসম্ভব। নতুন বৌঠানের জন্য কষ্টের কান্নাগুলো যে আঘাতের ক্ষতচিহ্ন৷ ঘোলাটে স্মৃতির সাথে কেউ সরে যায় নি। নিঃশব্দে সাড়া দিয়ে গেছে অনিয়ন্ত্রিত আবেগ৷ এলোচুলের কপাল ছুঁয়ে আছে সাহিত্যের উঠেন। তাই তো উঠে আসে, বায়রন, শেলি।। বাউল উদাসীনতার নিস্পৃহ আধ্যাত্মিকতা হলো বায়ন, শুধু শরীর৷ জ্যাতিদাদা, ইন্দিরার কাছে নিখাদ অ্যাপোলো৷ এক এক করে উঠে আসে চাকরদের নাম, উল্লেখ্য আব্দুল। 

পায়ের ছাপ রেখে যায় ....জীবন। 
জীবন তো নদী৷ নিয়ম মেনে কি সাথী হওয়া যায়!!  শিকারের ধোয়া চাল তো প্রাপ্তির পরিণতি। বিশুদ্ধির নদীর বুকে সূর্য যখন দিগন্তরেখা ছুঁয়ে ফেলে, তখন মনে হয় "আরো একটু কি এগিয়ে যেতে পারতাম না!" দুলে পড়ছে সূর্য, রাত এসে তারাদের কোলে ভুঁই ছুঁয়ে যায় -  অবয়বী কল্পনারা স্থান নেবে, কাল। তখন ঠিকানা হয়, কর্মফল৷ অপেক্ষার চাঁদ উপুড় হয়ে একটা শরীর মাটিতে মিশে যায়৷ তাই ঠিকানা তো আলো। অপেক্ষার সেই সৌধ ছুঁয়ে আছে আমার নিজের ঘর। পরপারে দিতে হবে পাড়ি, আমার তো কাজটুকুই সম্বল৷ জৌলুস ছুঁয়ে কি হবে!  সময় যে অল্প। দাঁতাল করাল আঘাত,আর  নিঃশব্দে নিরাপদ আশ্র‍য়৷ সত্য, শিব আর সুন্দর আমার ঠিকানা.. পোড়ামাটির দেহে, আত্মাতেই আলোর সুখ আমার...  জীবনের ঠিকানা।

উভয়ের মন যেন বলতে চায়..
একান্তে কথক আমি নিজের ভাষায়,  
তোমার কিশোরসুলভ ভালোবাসার আঁচ বিছিয়ে আছে  সাময়িকী। ঘুমন্ত নিঃশ্বাসের লাইনে স্বপ্নের সিন্ধুপার। অন্ধকারের সহাস্য মূর্তিগুলো বাহান্ন তীর্থের মতো এক শরীর ভেবে ভুলে যাও৷ আজ আলোর ফুলকি ছুঁয়ে আছে শব্দ জুড়ে। গুণিনের মতো আঁকড়ে ধরে আছে মেঘ; শুভ্র মোমবাতি আলোর মতো ভদ্র হিম ছুঁয়ে আছো ভালোবাসায়। চিরজীবনের মতো ঝর্ণামুখ আত্মা তার।  "টানা চোখে ঘন পক্ষ্মচ্ছায়ায় নিবিড় স্নিগ্ধ প্রশান্তির ললাট".. তোমার৷ সুচিন্তিত যাত্রার অভিমুখে যাত্রা শুভ হোক তোমার.; রৌদ্রভরা জীবনের আহ্বানে দীর্ঘ সময় তৃপ্ত মনের করণে তুমি দিব্য প্রকাশ হয়ে ওঠবে বলেই তো প্রচেষ্টা। নিবেদনের বুকে শ্বাস... 
আলোকযাত্রা আবার। (ক্রমশ)



Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours