জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:
নেহেরু
নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের পক্ষে , মিশ্র অর্থনীতি সত্বেও যে,কোন রুপান্তরের
পথে ভারতকে টেনে নেওয়া সম্ভব ছিলো না, জানা সত্বেও
--- রুপান্তরের মূল কারিগর হিসেবে যাদের মাথা তুলে দাড়ানোর ছিলো এবং মানুষ বিশ্বাস রাখতে শুরু করেছিলো
-----,
কদ্যাপি নিজেকে রুপান্তরের প্রধান শক্তি হিসেবে নিজের আত্মশক্তি খুজে
পাওয়ার চেষ্টা করে নাই। তাই কংগ্রেসেরই মতো না হলেও, নিজের সব কিছু পাওয়া
সত্বেও
----- বিগত ৭২ বছরের স্বাধীনতাত্তোর কালের
কোন কালগত মূল্যায়নের গভীরে তো যেতে পারেই নাই। নিজের বিপুল ত্যাগ এবং
পরিনতিগুলিরো যুক্তিনিষ্ট মুল্যায়ন করার সুযোগ ও করে নিতে পারে নাই।
এভাবেই, শ্রেনী নির্ভর দল হয়েও, শ্রেনীকে পঙ্গু করে রেখেছিলো।
-----
উন্নাউ এবং আজকে প্রচারিত ঝারখন্ডের ঘটনাঃ এইভাবে বিজ্ঞান এবং অখন্ড
জ্ঞান কোনঠাসা হয়ে যাওয়া, আদি-ভৌতিকবাদ এবং ইতিহাসবোধহীনতার এক একটি
লোমহর্ষক পরিনাম। অতিদ্রুত মিটবার নয়।
----- এই অন্ত
সম্পর্কগুলি, যত সময় দেশের শ্রমিক শ্রেনী নিজেতে এবং তারপর জনগনকে বুঝাতে
পারবে না, ততদিন চক্রবৃদ্ধির মতো বর্তমান অন্ধকার গাঢ় থেকে গাঢ়তর হতেই
থাকবে।
------এই সুত্রেই
বলা যায়, বাংলার পরিস্থিতি যতই খারাপ হোক,বাংলাকে উন্নাউ এর মতো ভয়ংকর
ধরনের সভ্যতার সংকটে পৌছুতে শ্রীমতি শাসনের আরো দুই পুরুষ লাগবে, বাংলাকে
অধিবিদ্যার সেই স্তরে নিয়ে যেতে।
নোট করে নিনঃ
যেখানে অধিবিদ্যার রাজ চলে, সেখানেই, যেখানে বিদ্যা বুদ্ধির উপরে গায়ের
জোরের রাজ কায়েম করে এবং সেখানে শত এবং হাজার 'উনাও' নেমে এসবেই।
ভারতীয় রাজনীতির সব থেকে বড় সংকট এখানেই যে, রাজনীতি যে অভিমুখে চলছে,
----
ইচ্ছায় কিংবা অবচেতনতার কারণে সেই অভিমুখটাকে গোপন রেখেই প্রায় সব দলেই
কার্য্যতঃ গদা ঘুরিয়েই ভোটের রাজনীতিতে টইটম্বুর হয়ে রয়েছে। পরিনামে লাভ
হচ্ছে একপ্রান্তে, সংস্কৃতিহীনতা এবং অন্যপ্রান্তে, অধিবিদ্যা, তার সাথে
উপসংগ হিসেবে উনাউএর পর ঝারখন্ড থেকে যে সংবাদ আসছে।
---
যে রাজনীতির মূল দায়টাই হোল, রঙ্গমঞ্চের যে পর্দাটা মানুষকে অন্তরাল থেকে
আলাদা করে রেখেছে, সেটাকে নামিয়ে দেওয়া, তারাও ভোট সর্বস্বতার কারনে
অনেকটাই গোপন রাখতে রাখতে, এখন কালগত মূল্যায়নের কাজটাই ছেড়ে দিয়েই, ভেবে
চলেছেন রুপান্তরের কাজটা তারাই চালিয়ে যাচ্ছে।
----
এই ঢাক-ঢাক গুড়্গুড়টাই যে ধীরে ধীরে, শুধু রাজনীতিকেই নয়, জ্ঞান এবং
সংস্কৃতির অভিমুখটাই খন্ড খন্ড বিখন্ড করে দিয়ে চলার পথকেই কুজ্ঝটিকায়
ঢেকেছে।
---- এই সুত্রেই বাংলায় যে সামাজিক রাজনৈতিক
চরিত্রের সাথে সাথে জনজীবনে বিপর্য্যয় যে বিন্দুতে নেমেছে, সেখানেও
ট্রেজেডির শুরু সেই বিন্দুতেই
------ সব থেকে বড়
ট্র্যাজেডি, হট্টগোলের মধ্যেই চিরস্থায়ী ব্যবস্থা বাতিল এবং
তৎপরবর্তীকালের সংস্কারগুলি মুছে গেলো, দলগত চেতনাকে শ্রেনীগত চেতনার
বাইরে রেখে।ভুমি তো আমাদের দিক থেকে তৈরী হয়েছে, ইতিহাস শ্রীমতিকে দিইয়ে
প্রতিশোধটুকু নিয়েছে। রাজনৈ্তিক ও সামাজিক রীতির বিপুল বিপর্য্যয়।
সর্বভারতীয় বিচারে,
----
স্বাধীনতার কাল এবং পরবর্তী কয়েক দশকে জ্ঞান এবং অখন্ড ইতিহাসবোদের
যতটুকু পাওয়া গিয়েছিলো, সংস্কৃতির ক্রমে খন্ড বিখন্ড হয়ে যাওয়ায়
------ যেমনভাবে রাজনীতিকে, এই বিখন্ডিত রুপ সামগ্রিকতা থেকে টেনে এনেছে
-----
এমনটি যদি বিবেচনা করতে হয়, স্বাভাবিক কারনেই কংগ্রেস দলের ভেতরকার, আর
এস এস বিরোধীতার মধ্যে কোন সত্বান্বেষী অভিমুখের জন্ম নেওয়া সম্ভব না হয়ে
থাকে
---- সাম্যবাদী আন্দোলনো ক্রমে, ধারাবাহিক
কালগত মুল্যায়নের নিরিখে নিজেকে সময় সময় মূল্যায়ন না করায়, আন্দোলনের সব
অভিমুখ কেবল সংসদীয় তন্ত্র নয়, ক্রমাগত খন্ডিত দাবীর আন্দোলনে বদলে যাওয়ার
সুযোগ করে দিয়েছে। ছোট্ট উদাহারনঃ ইউ পি এ একের প্রধান জনসংযোগের ১০০ দিনের
কাজের অধিকার যদি সাম্যবাদীদের দ্বারা সর্বপ্রথম আন্দোলিত হয়ে থাকে
নতায়, এক সর্বাত্মক চেতনার বিকাশের বিপরীতে
------- ট্রেড ইউনিয়নো যেমনটি, ক্রমে, খন্ডিত আন্দোলন এবং সেখান থেকে খন্ডিত শ্রেনী সত্বা নিয়ে বেঁচে থাকতে চেয়েছে।
কাজেই যেমনভাবেই, কংগ্রেস দল ভেতরের আর এস এস এর কাছে
আত্মসমর্পন
করেছে, আর এস এস কে আদিভৌতিকবাদ এবং অখন্ডতায় আত্মসমর্পনের সাথে সাথে
আন্তর্জাতীক মঞ্চে চিনের সাথে চিরন্তন বৈ্রীতার পথকে খুলে দিয়ে
----- তাদের বর্ণযুদ্ধ এবংধর্মান্ধতার কারণে আমেরিকাকে কাছে পেতে চেয়েছে
------ তেমনভাবে, কয়েক হাজার বছরের সুপ্ত থাকা,
--- আধুনিকতা বিরোধী, বিজ্ঞান বিরোধী, জ্ঞান বিরোধী, সচেতনতা বিরোধী অবচেতন শক্তি গুলি
----- নিজেদেরকের মধ্যে এসব উপকরনের রসায়ন ঘটিয়ে, বিভ্ৎস রুপে বিস্ফোরিত করছে। তেমনটি ঘটতে, বাধ্য ছিলো।
এই সুত্রেই একটি পার্থক্যকে বুঝে নিতে হবেঃ
---- ষাটের দশকে বাংলায় হাজার বছরের শংখল মুক্তির পর শ্রেনীমুক্তির স্বতস্ফুর্ততা।
--- অন্য প্রান্তে জ্ঞনহীন, বিজ্ঞানহীন, ইতিহাসহীন। গায়েরজোয়ারীর স্বতস্ফুর্ততা।
দুই
পথের দুই পরিনাম।উন্নাউ এখন ঘটতে থাকবে, দেশের এক থেকে অন্যপ্রান্তে।
কারুর বাবার আটকানোর ক্ষমতা হবে না। সকালের খবর। ঝারখন্ডে তিন বছরের
বাচ্চার উপর বলাৎকার এবং হত্যা, তারপর পলিথিনের থলিতে, আবর্জনা স্তুপে
নিক্ষেপ।
বাংলাকে একটা কথা স্মরন করিয়ে দেবার পর ক্ষৌরকারের গল্পটা বলে লেখাটা শেষ করবো।
বাংলার জন্য বলা, বাংলার বর্ডার থেকে ঝারখন্ড বর্ডার বেশী দূরে নয়।
এবার
গপ্পটাঃ এক ক্ষৌরকার রোজ ১০০ টা অপরেশান করতো। ক্ষুর ধরতো আর ঘেচাং করে
দিতো কেটে। রোজগার চ্যুত ডাক্তাররা এক হয়ে, ক্ষৌরকারকে তার এই বাহাদুরীর
জন্য অনেক প্রসংসা করার পর, তাকে এনাটমি সম্পর্কে খুব জ্ঞান দিয়ে আরো ভালো
করে সার্জারী চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলো। ... এই শরীর তত্বজ্ঞানই,
কিছুকালের মধ্যে তাকে সার্জারীতে অকেজো করে দিলো।
----বর্তমান ভারতীয় রাজনীতিকে ২০১৯ যে তলানীতে নিয়ে গেছে, সেখানে কিন্তু, জনগনের রুপান্তরকামীতাকে জাগ্রত না করে,
কোন রকম এনাটমি জ্ঞান কাজ করবে না।
----- অধিবিদ্যা এবং ইতিহাসবিহীনতা এখানে বিশ্বের সব থেকে বড় এবং শক্তিশালী খুটিতে বেধে লড়ছে। সেই, কথাঃ "মেড়া লড়ে খুটীর জোরে"
চ ল বে
Post A Comment:
0 comments so far,add yours