politics
স্বপন দাস, প্রবীণ সাংবদিক, কলকাতা:
খুব রেগে গেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। রেগে গেছেন না রেগে যাবার অভিনয় করছেন সেটা ভাবতেই পারেন । কেননা উপায় নেই ওনার। ইতিমধ্যেই ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছেদ করেছে পাকিস্তান। এখানেও না করে উপায় নেই। আপামর পাকিস্তানির মধ্যেকার সেই বিষয়টাকে আবার জাগিয়ে তুলে , নিজের প্রতি জনসমর্থন টিকিয়ে যে রাখতেই হবে রাষ্ট্র প্রধানকে। সেই পথকেই বেছে নিয়েছেন ইমরান। 
পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকে একদিকে ভারতের দিক থেকে পাকিস্তান বিদ্বেষ তৈরি করা , অন্যদিকে পাকিস্তানের দিক থেকে ভারত বিদ্বেষ তৈরির মধ্যে দিয়ে দু’দেশের রাজনীতি আবর্তিত হয়েছে। সেভাবেই চলে এসেছে ইতিহাস। 
দু’দেশের অর্থনীতির একটি প্রধান অংশ জুড়েই রয়েছে এই বিদ্বেষের বাতাবরণ থেকে একটি ক্রস বর্ডার টেররিজমের আবহাওয়া তৈরি। ভারতের অন্য সীমান্তের সঙ্গে পাকিস্তান সিমান্তের বিষয়টা আলাদা হয়েছে শুধুমাত্র এই ক্রস বর্ডার টেররিজম এর জন্যই। সব সময় পাকিস্তানের সঙ্গে একটা যুদ্ধকালীন পরিস্তিতির সৃষ্টি করে , প্রতিরক্ষা খাতে একটা বিশাল পরিমাণ টাকা সরিয়ে অথবা দেশের বাজেটকে ব্যালেন্স করার ক্ষেত্রেও এই পাকিস্তানের সঙ্গে বিদ্বেষের রাজনীতি সবসময়েই সামনে এসেছে। দু’দেশের অর্থনীতিকেই সাহায্য করেছে পাকিস্তান সীমান্তে জিইয়ে রাখা সন্ত্রাসবাদ থেকে যুদ্ধের আবহাওয়া।
ভারত গত কয়েক বছরে অনেকটাই এগিয়ে গিয়ে অর্থনৈতিক দিক থেকে অন্যতম শক্তিশালী দেশ হিসাবে উঠে এসেছে, আবার দেশের নিরাপত্তা ও সমরাস্ত্রের দিক থেকেও সারা বিশ্বের প্রথম ছয়টি দেশের মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ভারত  মহাকাশ গবেষণায় সাফল্যের চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছেও গেল। এর সঙ্গে তুলনায় অর্থনৈতিক দিক দিয়ে একবারে পিছনের সারিতে নিজেদের পৌঁছে দেওয়া একটা দেশ। যাঁদের কাছে পরনির্ভরতাই অর্থনীতির একমাত্র উৎস। আর দেশের জনগণের মনে ভারত বিদ্বেষের বীজ বুনে । ঘরে ঘরে সন্ত্রাসবাদী তৈরি করে , ভারত দখলের স্বপ্নকে ছড়িয়ে দিয়ে পাকিস্তান এত দিন ধরে যে ভাবে চলে আসছিল। সেই জায়গায় একটা ইতি টেনে দিল ভারত। আর তাতেই পাকিস্তানের সমস্ত রাজনৈতিক দল , একবাক্যে তাদের হাতিয়ার হারিয়ে ফেলার যন্ত্রণায় ছটফট করতে শুরু করেছে। 
একসময়ে বলা হত , নেহেরুজি ও জিন্নার মধ্যেকার অন্তর্নিহিত একটি বিষয় ছিল। দু’দেশের অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিলেই, একটা যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা করে , জরুরিকালীন পরিস্তিতি ঘোষণা করা, বাজেটকে সামাল দেওয়া হবে। এভাবনাই চলে এসেছে এতদিন। ভারত এখন অনেক স্বাবলম্বী। কিন্তু পাকিস্তান ? যে তিমিরে ছিল। সেখান থেকে তলিয়ে আরো গভীর খাদে। কেননা , আরতো কাশ্মীরের কুমিরছানা বার বার দেখানো যাবেনা। তাই ইমরান প্রশাসন এখন এক গভীর সংকটের মুখোমুখি। সেখানে সেনা অভ্যুত্থান হলেও অবাক হবার কিছু থাকবে না। এখন ইমরানের একটি লক্ষ্য , যে করেই হোক কাশ্মীরের বিষয়টাকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যাওয়া। আর নানা উস্কানি দিয়ে কাশ্মীরকে আশান্ত করে তোলা। যাতে একটা যুদ্ধের পরিস্তিতি তৈরি করা যায় । পাকিস্তান সেই লক্ষ্যে ৮৫ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে সীমান্তে।
প্রসঙ্গত আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তান এখন প্রায় একঘরে। তাই আন্তর্জাতিক সমর্থন সেই মত পাবে না। এটাও পরিষ্কার। তাই নিজেদের পীঠ বাঁচাতে । ভারতের সঙ্গে নান রকম বিচ্ছেদের রাজনীতিতে হাটছে পাকিস্তান। এতে আখেরে যে ক্ষতি হবে , সেটা বুঝতেই পারছেন ইমরান। এখন যেভাবেই হোক পাকিস্তানের মানুষের মনে নিজেদের জায়গাকে অটুট রাখার কৌশল খুজতেই ব্যস্ত ইমরান প্রশাসন।
অনেকে বলছেন। ইমরানের বিনাশকালে বুদ্ধনাশের দোরগোড়ায় এসে দাড়িয়েছেন। তাই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের রাজনীতিকেই আঁকড়ে ধরেছেন। 


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours