ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য, ফিচার রাইটার,দুর্গাপুরঃ অন্দরমহলে প্রবেশ করার সময় রূপেন্দ্র মনে পড়ছিল অতীতের সুখস্মৃতি! প্রথমবার বিয়ের পর পিসশ্বশুরের বাড়ী এসেছিলেন কুসুমমঞ্জরীর সাথে ! নতুন জামাইকে নিয়ে বসেছিল চাঁদের হাট! ভবতারনের দুই স্ত্রী অর্থাৎ দুই পিসিশ্বাশুড়ী, কাদের দুই জীবনের, ননদ, পুত্রবধূ, রূপেন্দ্রর শ্বাশুড়ী এবং তিন শ্যালিকা সে এখন শুধুই স্মৃতি! একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন রূপেন্দ্র!
রুপেন্দ্র অন্দর মহলে প্রবেশ করা মাত্র কেদারা থেকে উঠে দাঁড়ালো তুলসী, রূপেন্দ্রর শ্যালিকা!অপরূপা সুন্দরী! তাকে এক ঝলক দেখেই মাথা নিচু করে, কানাই-এর মাকে বললেন, " আমাকে যে বললে, বড় মা ডেকেছেন?"
তুলসীই উত্তর দিল,"আমিই ওকে মিথ্যা বলে আপনাকে আনতে বলেছিলাম ! আপনি বসুন কথা আছে "
রূপেন্দ্র সরাসরি তুলসীর কাছে জনতে চাইলেন কেন তাঁকে ডাকা হয়েছে! তাঁর হাতে সময় খুবই কম!
তুলসী আক্ষেপের সুরে বলল, " সত্যিই জামাইবাবু, সময় খুবই কম,জীবন খুব ছোট, কিন্তু জীবনের কিছু মূহূর্ত সত্যিই মুক্তোর মতো দুর্লভ কিন্তু খুব দামী ! তোমাকে বেশীক্ষন আটকে রাখার ক্ষমতা বা অধিকার কোনটাই নেই!
রূপেন্দ্র তুলসীকে থামিয়ে দিয়ে স্মরন করিয়ে দিলেন, তাঁকে তুলসী বরাবর ' আপনি ' সম্বোধন করে এসেছে! হঠাৎ ' তুমি ' সম্বোধন করায় তিনি বিস্মিত!
এরপর তুলসী রূপেন্দ্রকে ' সোনাদা ' সম্বোধন করে এবং জানায়, তাঁর সাথে তাঁর গ্রামের মিনুর সম্পর্ক এবং ফরাসী ডাঙার রাধাবোষ্টমী তাঁকে চুমু খাওয়ার বিষয়টি! তবে এটাও জানায়, তার দিদি কুসুমমঞ্জরী তাঁকে পাগলের মতো ভালবাসতো!
রূপেন্দ্র সংযম হারিয়ে বিরক্তি সহকারে বললেন," এ কথাগুলো বলার জন্যই কি আমাকে এখানে তলব করা হয়েছে?"
জিভ কেটে তুলসী বলল," ছিঃছিঃ কি করতে পারি সোনাদা? আমি তোমার শ্যলিকা ছিলাম এবং থাকবোও! তোমার সাথে ঠাট্টা করার অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না! আর একটা অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না!তোমার মেয়ের মুখের 'মা' ডাক! তোমার স্ত্রী হয়তো কোনদিন হ'ব না, কিন্তু তোমার মেয়ের মা হয়েই গেছি "
রূপেন্দ্র নরম হয়ে কেন দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবে না সেটা তুলসীকে বোঝাতে চেষ্টা করতে গেলে, তুলসী হাত দিয়ে রূপেন্দ্রর মুখ চেপে ধরে বললেন," থাক সোনাদা...একথা বহুবার শুনেছি...."আর আমি তোমার পূর্বতন প্রেমিকাদের৩ মতো বোকা নই সব মানিয়ে নিতে পারব!"
(চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours