অঙ্কুর চক্রবর্তী, ফিচার রাইটার, কলকাতা:
আমি
আমার রাজনৈতিক ও (অ) ধর্মীয় দর্শনের জন্য যথেষ্ট বিতর্কিত। তার ওপর সেই
বিতর্কে ঘৃতাহুতি দিতে লেখার শিরোনাম দিলাম নচিকেতার গানের অংশ থেকে ঝেড়ে।
সেটা নিয়ে বিতর্ক করতেই পারেন নচি-প্রেমী কচিকাঁচার (না কি তারাও এখন আমার
মতই মধ্য বয়সের যুগার্ধের ধারেকাছে?) দল। কিন্তু বিতর্ক হবে ওই "মেকি
স্বাধীনতা" শব্দযুগলকে ঘিরে। আমার তো তাই মনে হয়।
ফ্রিডম
আর স্বতন্ত্রতা দিওয়াস "মানানো" প্রাউড ইন্ডিয়ানগন আসবেন রে রে করে তেড়ে।
"স্বাধীন বলেই এইসব লিখতে পারছেন!", "পাকিস্তান/বাংলাদেশ হলে এইসব লেখা না
পেছন দিয়ে বেরিয়ে যেত!", "বাঙালি হয়ে ভারতের স্বাধীনতাকে মেকি লিখেছেন?
ব্যাটা দেশদ্রোহী!" এইসব বলা শুরু হবে।
তা একটু বলেই
রাখি। অনেকদিন বেশি বড় লেখা নামাচ্ছি না। সময়, ধৈর্য্য ও অন্যান্য
আঁকা,লেখায় ব্যস্ত থাকার কারণেই। তা এরকম পনেরোই আগস্ট জাতীয় দিনগুলো আসলে
কেমন জানি লেখা পায়। গতবছর একটা কবিতা লিখেছিলাম, এবার ভাবলাম একটু বড়
লিখি।
যা হোক, অনেক ভণিতা করলাম। এবার লাইনে এসে খেলি বরং।
না,
ওই লতা মঙ্গেশকরের দেশপ্রেমের চপচপ করা "মেরে ওয়াতন কে লোগো" শুনে আমার
ইমানদন্ড (বা বেঈমানদন্ড) খাড়া হয় না। বরং অসহ্য একটা বিবমিষা জাগে। কেন
জাগে? কারন, বাঙালি এমন একটা দিনকে উদযাপন করে, সেলিব্রেট করে, মানায়, যে
দিনটা তাদের দুঃখের দিন। হ্যাঁ, দুঃখের দিন। আজকের দিনই শরৎ বসু, সুরাবর্দী
এবং ফজলুল হকের প্রস্তাব নাকচ হয়ে বাংলা ভাগ হয়। নৈতিক জয় হয়
শ্যামাপ্রাসাদের মত সাম্প্রদায়িক নেতার মনোবাঞ্ছার। জয় হয় নেহরু, প্যাটেল,
জিন্নাহ, গান্ধীর। পরাজয় হয় বাঙালির। কোথাকার কোন সাদা চামড়ার সাহেব
রাডক্লিফ বাংলার বুক চিরে দিয়ে টেনে দিয়ে যায় কাঁটাতারের বেড়া। সে বাংলাকে
জানতো না। তাই এক সংস্কৃতির কুষ্ঠিয়া আর নদীয়া হয় দুই ভাগ, এক উপভাষার
যশোর,খুলনা আর চব্বিশ পরগনা হয় দুটুকরো। মুর্শিদাবাদ আর রাজশাহী হয়
দ্বিখন্ডিত। ঘরছাড়া হয় দুপারের মানুষজন। যাদের সাথে একদিকে যেমন পশুর মত
ব্যবহার করে তাদের কেটে টুকরো করে পাকিস্তানী জানোয়ারের দল, তেমনই আশ্রয়
(বাঙালিকে বাঙলাতেই আশ্রয় নিতে হচ্ছে, এটাই যথেষ্ট লজ্জাজনক কথা নয় কি?)
দেওয়ার অছিলায় জীবন দুর্বিষহ করে তোলে ভারত রাষ্ট্র বা বলা ভালো,
হিন্দুস্তান।
বলা হয় "দেশ" ভাগ হয়েছিল। সত্যিই কি
তাই? মানে, অন্তত যারা ভারতকে দেশ ভাবেন তাদের জিজ্ঞাসা করছি ( এ ক্ষেত্রে
বলে রাখি, দেশ আর রাষ্ট্রের পার্থক্য না বুঝে এঁড়ে তর্ক করতে আসবেন না। আমি
বাঙালি, আমার দেশ বাংলা, রাজনৈতিক পাকেচক্রে ভারত আমার রাষ্ট্র এবং
নাগরিকত্ব প্রদানকারী একটা ব্যবস্থার নাম মাত্র); "দেশ" ভাগ হয়েছিল ঠিকই,
তবে সেটা বাঙালির দেশ, পাঞ্জাবির দেশ। উত্তেপ্রদেশী, হরিয়ানভি, গুজরাটি,
বিহারীর দেশ ভাগ হয়নি। উল্টে তাদের দেশের আয়তন বেড়েছে, তাদের জনসংখ্যার
মতোই।
বর্ডার টানা হয়েছিল কেবল সম্পদে সমৃদ্ধিশালী
বাংলা আর পাঞ্জাবের বুকে। আমরা পূর্ব পশ্চিমে ভাগ হয়ে ঢুকে গেলাম ভারতীয়
ইউনিয়নে। কাদের সিদ্ধান্তে? সেদিন আপামর বাঙালি দেশভাগ চেয়েছিল কি না
দিল্লী, করাচির প্রাসাদে বসে থাকা অধিশ্বরগণ জানতে চেয়েছিল? চায়নি, কারন
তাদের সম্পদ দরকার ছিল। মাউন্টব্যাটেন প্রস্তাবের একটা দিক মেনে যদি বাংলা ও
পাঞ্জাব নিজেরা আলাদা রাষ্ট্র হয়ে যেত, তাহলে যে ভারত পাকিস্তানের কপালে
এই দুই অঞ্চলের খনিজ, কৃষিজ সম্পদ জুটতো না। পাঞ্জাবের বাস্তুহারাদের তাও
তো এপারে এসে নেহরুর কল্যানে কিছু জুটেছিল। কিন্তু বাঙালির কি জুটলো?
দেশভাগের যন্ত্রনা! স্বজন হারানোর ব্যথা! সম্পদের অপচয় এবং বাংলার বুকে
অস্বাস্থ্যকর কলোনিগুলোয় আশ্রয়, নয়তো ভারতে আশ্রয় নেওয়ার অপরাধে
দন্ডকারণ্য, আন্দামানের মত প্রতিকূল ভূভাগে নির্বাসন, যেখানে তাদের ভাষা
কেড়ে নিয়ে তাদের হিন্দিস্তানী বানানোর পরিকল্পনা রূপায়ন শুরু হলো। বাঙালির
বাঙালিয়ানা, বাংলা ভাষা বিকিয়ে দিয়ে স্বাধীনতা? না দাসত্ব? তথাকথিত
স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যে জাতি প্রাণ দিলো, সে তার রাষ্ট্রকে তার অভীষ্ট
অর্জন করে দিয়ে কি পেল?
আন্দামানের সেলুলার জেলে
বছরের পর বছর হাড়ভাঙ্গা খাটুনি আর অত্যাচারে শারীরিক ও মানসিক ভাবে
বিধ্বস্ত হওয়া উল্লাসকর দত্ত আর বারীন ঘোষের বদলে বাঙালি অধ্যুষিত
আন্দামানের বিমানবন্দরের নামকরণ পেল ব্রিটিশদের পা চাটা, মুচলেকা দিয়ে
সেলুলার জেল থেকে বেরোনো "বীর" সভারকারের নামে।
সেলুলার
জেলে বাঙালির আত্মত্যাগের স্মারক রইল নির্বিকার, চুপ। অথচ আলোক-শব্দের
খেলায় ঝলমল করে উঠল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবাজ দলের বাবার নাম আর কুঠুরি।
বাঙালি স্বাধীনতার এই ফসল পেলো।
বাঙালি আর কি কি পেল?
কেন?
রবি ঠাকুরের জনগণমন'র "হিন্দি ভার্সন"এ যাঁরা-গাঁড়া-মাড়া পেল! অবন ঠাকুরের
বঙ্গজননী ঝাড় হয়ে রিসাইকল্ড হয়ে ভারতমাতা পেল! বঙ্কিমের বন্দেমাতরমের সপ্ত
কোটি কন্ঠের সেনসাস রিপোর্টে জনসংখ্যা বাড়িয়ে পেল কোটি কোটি কন্ঠের কলকল
নিনাদ!
বাংলাদেশ নিজের ভাষার অধিকার হারিয়ে
পাকিস্তানী গুলি পেল, বরাকে নিজের ভাষার অধিকার স্থাপন করতে গিয়ে পেল
হিন্দুস্তানী গুলি। কমলা ভট্টাচার্য তার মাথার খুলি উড়িয়ে বুঝি কাল্পনিক
ভারতমাতার পায়ে অর্ঘ্য দিয়েছিলেন?
কি পেল বাঙালির
আত্মত্যাগ? কি পেল বাঙালির দেশভাগের যন্ত্রণার ফসল? পেল বলিউডি ফিল্মে
স্টিরিওটাইপড হওয়া বটুকেশ্বর দত্ত (ভগত সিং ফিল্ম দেখুন, দেখবেন বটুকবাবু
তথাকথিত ভুল উচ্চারণে হিন্দি বলা একজন বাঙালি বাবু, যিনি সর্বদাই
হিন্দিস্তানের হাসির খোরাক), পেল একের পর এক ফিল্মে দেশভাগ নামক লজ্জার
ইতিহাসে বঞ্চনা। বলিউড কেবল পাগড়ি পরা পাঞ্জাবীদের যন্ত্রনা দেখাতে ব্যস্ত
হয়ে গেল, আর তাদের ইতিহাস গিলতে গিলতে আপনি ভুলে গেলেন যে পাঞ্জাবের থেকে
কয়েক গুণ বেশি মানুষের ওপর দিয়ে এই যন্ত্রনা কাঁটাতার হয়ে বয়ে গেছিল, যা
বলিউড কোনদিনই দেখাবে না। তাই রাজকাহিনীর মুর্শিদাবাদ-রাজশাহীর গল্প
হিন্দির বেগমজান হয়ে পটভূমি বদলে চলে গেল পূর্ব-পশ্চিম পাঞ্জাবে।
ধুর!
বাঙালি ওরকম মাচো নয়, তাই তাদের ইতিহাস দেখালে ফিল্ম চলবে না। 'তেননু,
মেননু, তেরে নাল, মেরে ভিচ" বলার মত মাচিসমো বাঙালির "আমার সোনার বাংলা"র
মধ্যে নেই। তাই ফিল্ম চলবে না। স্বাধীন রাষ্ট্র বাওয়া, টাকা চাই, টাকা!
বাঙালি
আরও পেল, স্বাধীনতার দাম। বাঙালির শিক্ষা বাঙালির অনুমতি ছাড়াই এক তথাকথিত
লৌহ-মানবী পাঠিয়ে দিলেন রাজ্য তালিকা থেকে যুগ্ম তালিকায়। ব্যাস, ঢুকে পড়ল
সিবিএসই-আইসিএসই। ঘরের ছেলে সুভাষের অবদান ধীরে ধীরে একটা অধ্যায় থেকে
পনেরো লাইন, পনেরো লাইন থেকে তিনটে বাক্যে এসে কুঁকড়ে গেল। কিন্তু বেড়ে চলল
রানাডে, গোখেল, গান্ধী, প্যাটেল এদের প্রভাব। বাঙালি সুভাষকে নয়, এদের
বলতে শিখল "আমাদের নেতা"। ব্যারাকপুর ব্যতীত আর কোথাও সম্পুর্ন প্রভাবহীন
সিপাই বিদ্রোহে উত্তরপ্রদেশ, বিহারের কিছু কুসংস্কারাচ্ছন্ন, বামুনবাদী
মনোভাবের সৈনিক হয়ে গেল বাঙালির প্রতিনিধি (বেঙ্গল রেজিমেন্ট নামের দৌলতে),
ঝাঁসি, দিল্লী, মিরাটে তাদের পরাজয়ের দায়ও তাই হল বাঙালির, যেটাকে আইসিএসই
"আমাদের পরাজয়" বলে একটা সামগ্রিক ভারতীয় রূপ দিয়ে দিলো।
বাঙালি
কি পায়নি? টি বোর্ডের সদর দপ্তর কলকাতা থেকে গুয়াহাটিতে সরে যাওয়া। পেয়েছে
একদা বেঙ্গল ব্যাংক (বর্তমান এসবিআই)এর দপ্তরের কলকাতা থেকে মুম্বাইতে
স্থানান্তরের আদেশ।
বাঙালি পেয়েছে এনআরসি। আসামে। হয়তো অদূর ভবিষ্যতে ঝাড়খণ্ডে, আন্দামানে এবং ক্রমবর্ধমান অবাঙালি অধ্যুষিত হুগলি নদীর দুই তীরে।
বাঙালি
পেয়েছে বাংলা বলে নিজের দেশে "মাতৃ-সম্ভোগী", "মাছ খেকো" তকমা। বাঙালি
পেয়েছে আসামে "অনুপ্রবেশকারী", দিল্লী, মুম্বাইতে "বাংলাদেশি/কাংলাদেশী"
তকমা। এগুলো কি কম পাওয়া?
বাঙালি পেয়েছে কাঁটাতারের
ওপর ফেলানীর লাশ। বাঙালি পেয়েছে ফারাক্কা, আর সাম্রাজ্যের আদেশে চলা রামপাল
বিদ্যুৎ প্রকল্পের রূপায়ণে সুন্দরবনের ধ্বংসের ফরমান।
বাংলা পেয়েছে উড়িষ্যার হাতে চর্যাপদ বেহাত হওয়ার সম্মান, কোনক্রমে আদায় করছে রসগোল্লার পেটেন্ট (বিরাআআট অর্জন বটে)
বাংলা
পেয়েছে বন্যার সময় কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা। বাংলা পেয়েছে বিহার, ইউপিতে
ফসলের মন্দায় নিজের গোলা ভেঙে কম দামে ধান দেওয়ার রাষ্ট্রীয় ফরমান। কিন্তু
রাষ্ট্র আপনার কানে লতা মঙ্গেশকর আর বাজপেয়ির কবিতার গীতিরূপ ঠুসে আটকে
দেবে হিন্দিস্তানী বেনিয়ার গোলায় আটকে রাখা ধানের বদলে লক্ষ বাঙালির প্রাণ
নেওয়ার কাহিনী।
এছাড়াও বাঙালি প্রায়শই পায় ধুতি
পাঞ্জাবি পরা, চুলে তেল চপচপ করা স্টিরিওটাইপ। অমিতাভ বচ্চনের "হামি
কলকাতার জামাই আছে/আমি রাসগুল্লা, মিষ্টি দয় ভালোবাসে" টাইপের স্তুতিবাক্য।
আর ইতিহাস ভোলা বাঙালি "বাংলার জামাই" নিয়ে বরণ করে নাচে।
আজ,
কাল বাঙালি অনেক কিছু পাবে। মানে দেখতে পাবে, গা ভাসাবে। যেমন দিদি নম্বর
ওয়ানে রচনার তেরঙ্গা শাড়ি, তেরঙ্গা পাঁপড়, দোসা, ঢোকলা, ভুজিয়া, হলদিরাম
হ্যানা ত্যানা।
দেশপ্রেমের ত্রিদিবসীয় জোয়ারের তৃতীয়
দিনে গাড়ি, বাইকে উড়বে ত্রিবর্নরঞ্জিত পতাকা। ফেসবুকে পাবেন সানিয়া
মির্জার পায়ের কাছে তেরঙ্গা রেখে অপমানের ছবি, পাবেন প্রোফাইল পিকচারে
তিনরঙা ফ্রেম। বিগবাজারের মুদিখানায় ছাড়। আর খবরের কাগজ, হোয়্যাৎস্যাপ
মেসেজে "জয় হিন্দ","ভারত মাতা ক্কি..." ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু
বাঙালির খবরের কাগজে স্বাধীনতার ঢক্কানিনাদে চাপা পড়ে যাবে আমার দেশ ভাগ
হয়ে যাওয়া। চাপা পড়ে যাবে উর্দুস্তানের গর্বের চোদ্দই আর হিন্দিস্তানের
গর্বের পনেরোই'এর মাঝে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দেওয়ালের বুলেটের চিহ্ন।
চাপা
পড়বে। পড়তে হবে। চাপা দিতেও হবে। নইলে যে বাঙালির মনে যদি আবার স্বদেশী
হুজুগ জেগে ওঠে। ভুল করে হলেও রামদেবের প্রোডাক্টের বদলে যদি প্রাণ, আরসি
কোলা স্বদেশী বলে মনে হয়! তাহলে কি হবে?
তাহলে ওদের
দেশপ্রেমের বেওসা হবে না যে। হবে না দেশদ্রোহী বলে দাগিয়ে দেওয়ার বেসাতি।
ধর্মাধর্ম নির্বিশেষে বাঙালির এক হওয়াকে যে ওরা বড় ভয় পায়। অতঃ কিম?
ডালমিয়া
লালকেল্লায় আগামীকাল মহাপ্রভুর কান্না দেখুন আর ভুলে থাকুন চল্লিশ লাখ
বাঙালির আর্তনাদ। ভুলে থাকুন। যেভাবে ভুলে থাকেন আপনার দেশে, আপনার প্রভুর
পায়ের সামনে ল্যাজ নাড়ানোর সময়, আপনার ভাষাকে, তেমনই ভুলে থাকুন আপনার
পরাধীনতা।
হ্যাঁ, আমরা পরাধীন। আমার রাজ্য, আমার দেশ
আমার অধীনে নয়। কিছু গুজরাটি, হিন্দিভাষী তার অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আমরা পরের অধীনে। আর আশা করি সন্ধির নিয়ম অনুযায়ী পর+অধীন=পরাধীন হয়। তাই
নয় কি?
যেদিন আমার অর্থনীতির রাশ থাকবে আমার হাতে,
আমার সংবিধান প্রতিষ্ঠিত হবে, কেন্দ্র আমার খাবার ঘরে নাক গলানো বন্ধ করবে,
সেদিন আমার অধিকারও প্রতিষ্ঠিত হবে। যতদিন সেটা হচ্ছে না, ততদিন আমরা,
বাঙালিরা, পরাধীন। মেকি যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার আড়ালে চলা হিন্দি
সাম্রাজ্যবাদের হাতে পরাধীন। অতএব এই পনেরোই আগস্টের একদিনের ম্যাচ একটা
ঢপ।
হ্যাঁ, তাই বলে কি কেউ স্বাধীন হয়নি?
হয়েছে তো?
একদিনের হুজুগে দিব্যি নোট বাতিল করে দেড়শো জনের প্রাণ কেড়ে নিয়ে কেউ স্বাধীন।
কেউ ব্যাংকের টাকা ঝেড়ে ক্যারিবিয়ান দ্বীপে স্থায়ী ছুটি কাটাতে, ফর্মুলা ওয়ান দলের মালিক হয়ে স্বাধীন।
কেউ
ভিনরাজ্যে থেকেও সেই রাজ্যের বাসিন্দাদের তাড়াতে বলে মিছিল বের করতে
স্বাধীন (অথচ আপনাকে মিছিল করে "জয় বাংলা" ধ্বনি তোলার স্বাধীনতা পেতে হলে
পুলিশের অনুমতি নিতে হবে, কারন আপনিও স্বাধীন)
মন্দিরে গরু, আর মসজিদে শুয়োরের ঠ্যাং ফেলে দাঙ্গা বাঁধানোর কাজে স্বাধীন।
ছোট খাঁচা, বড় খাঁচায় স্বাধীন।
স্বাধীন তো? স্বাধীন নয়? কি যে বলেন?
"স্বাধীন আমরা হয়েছি কেবল ফেসবুক টাইমলাইনে
আসলে আমরা পরাধীন, ভয় পাই রাষ্ট্রীয় আইনে"
("স্বাদ-হীন স্বাধীনতা"-অঙ্কুর)
"আজ বাংলা ভাগ দিবস। আগামীকাল বঙ্গবন্ধুর শাহাদত দিবসের পাশাপাশি উদ্বাস্তু দিবস। ১৪ ও ১৫ আগস্টে বাঙালির জীবনে কোনো তেরঙ্গা নাই"
-অতনু সিংহ।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours