ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ
রূপেন্দ্রনাথের  স্বপ্নের নারী শিক্ষানিকেতনে শুধু  বালিকা  বা  কুমারী  নয়  , কিশোরী, যুবতী, বিবাহিতা এবং  বিধবারাও  শিক্ষার  সুযোগ  পাবে! তারা  শিখবে  প্রাচীন  বাংলা  হরফ, দেবনাগরী, পড়বে  কালিদাস, রামায়ন, মহাভারত, রাজ্য, সহিত্য, ব্যকরন, দর্শন, অঙ্ক,সুদকষা, হিসাবরাখা  আর  সন্তান প্রতিপালনের  পাঠ!  সোঁয়াই  গ্রামে  তিনি  সুচনা  করে  যাবেন  বাংলার  বিভিন্ন প্রান্তে সূচনা  করবেন  এক  নতুন বিপ্লবের ' নারী  শিক্ষা' ' আন্দোলনের! তিনি  সোঁয়াই  গ্রামে  নারী শিক্ষা  প্রতিষ্ঠান  গড়তে  সাহায্য  পাবেন  উদার  আধুনিকমনষ্ক  জমিদার  ভাদুড়ীবাবুর! এরপর  তিনি  যাবেন  লদিয়ারাজ  রাজা  কৃষ্ন চন্দ্রের  দরবারে! যদিও তিনি  সনাতনপন্হী, কিন্তু উচ্চশিক্ষিত, রূপেন্দ্রর  স্হির  বিশ্বাস  তাঁকে  তিনি  সপক্ষে  আনতে  পারবেন!তাঁর  উদ্যোগে  শান্তিপুর, নবদ্বীপে  স্ত্রীশিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড়ে  উঠলে, তিনি  বর্ধমানরাজের  দ্বরস্হ  হবেন! বর্ধমানের  পর  তাঁর  গন্তব্যস্হল  হবে  নাটোর , যেখানে  সদ্য  প্রয়াত  রাজা রামকান্ত রায়ের  সুযোগ্যা  সহধর্মিনী  রানী  ভবানীর  নিকট  যাবেন ! সবশেযে  মুর্শিদাবাদে  জগৎশেঠের  নিকট  উদ্দেশ্য  একটিই  নারী  শিক্ষাকেন্দ্র  গড়ে  তোলা, স্ত্রীশিক্ষার  প্রসার!
     
    রূপেন্দ্রর  মনে  আর  একটি  বাসনা  তাঁর  হৃদয়কে  ক্ষতবিক্ষত  করে!' সতীদাহ '! রূপেন্দ্রর  ইচ্ছা   গোবর্ধন মঠের  শঙ্করাচার্যের  নিকট  নারী  শিক্ষার  অনুমোদন  পেলে, তিনি  ' সতিদাহ ' -এর  বিষয়টি  উত্থাপন  করবেন! ' সতীদাহ ' হিন্দু  সমাজের  একটি  মারাত্মক  কুপ্রথা! নারী  নির্যাতনের  এতবড়ো  অমানবিক  প্রথা  অন্য  কোথাও  নেই! এই  নৃশংস  লোকাচার  মুসলিম, ক্রিশ্চান, বৌদ্ধ  ,জৈন  কোন  ধর্মে  নেই!
         সেই  ধর্ম  বা সমাজ  তো  ভেঙ্গে  পড়েনি?  আর  ভারতীয়  কোন  শাস্ত্রে   এমনকি  পৌরানিক যুগেও এই  কুপ্রথার  কোন  উল্লেখ  নেই!  তাহলে  এই  কুপ্রথা  হিন্দু সমাজে  থাকার  কি  প্রয়োজন? প্রশ্নটি  গোবর্ধন মঠের  শঙ্করাচার্যের  নিকট  রাখার  সিদ্ধান্ত  নিলেন  রূপেন্দ্রনাথ  !
(চলবে)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours