জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:

এই খবরের পরেও, যখন কোলকাতা, দিল্লী, মুম্বাই এবং চেন্নাই যখন নিশ্চুপ তখন বুঝতে হবে, তখন বুঝতে হবে, ধর্মান্ধতা এবং বিশ্বায়নের সর্ণবটিকা মধ্যমবর্গীয় উচ্চ শিক্ষিতদের বিপুল অংশকে হয় "খেয়ে ফেলেছে' নয়তো  'নিশ্চুপ' করে দিয়েছে। পরিনাম বিপ্লবী অংশও ক্রমে নিরপেক্ষ হয়ে যাচ্ছে। 

তাই লজ্জ্বার মাথা খেয়ে ষাট বছর ধরে শুনতে থাকা সেই ঘ্যানঘ্যানির কাদা-গোপরকে মুছে ফেলেই বলতে হচ্ছে
------ এখনো সেই 'নাবালক হয়ে' থাকা 'বুদ্ধিহীনেরা' যদি নিজেদের নিশ্চলতাকে ভেংগে দিয়ে, নিরপেক্ষতার সব দেওয়াল ভেংগে দিয়ে, মুক্ত হাওয়ায় বাইরে বেড়িয়ে আসতে সময় নষ্ট করেন
বাইরে বেরিয়ে  আ্সতে ব্যর্থ হ'ন, তবে এখনো যে দু'চারজন বুদ্ধিজীবির হাত ধরে, 
ভারতীয় সমাজ বাস্তবতার যে প্রতিচ্ছবিটি খুজে পাচ্ছিলাম, ঝর্ণা ধারার মুখও, গতকালের খবরের পর বন্ধ হয়ে যাবে।ভারত তখন অন্ধকারের রাতে হাজার দুয়ারীর গোলক ধাধায়।
----এরাই বুঝিয়েছেন, জরুরী অবস্থায়, সংবাদপত্র এবং বাক স্বাধীনতা চলে যাওয়া থেকেও হাজারগুন মারাত্মক যখন, শান্তির কালে পরাধীনতাকে স্বাধীনতা বলে মানিয়ে নেওয়া হয়।অর্থনীতির ফ্রন্টে যা দাড়ীয়েছে, এখন দল মত নির্বিশেষ সব অর্থনীতিবিদ জানিয়ে দিয়েছে, ভারতীয় অর্থনীতি,  এখন ইতিহাসের সর্ববৃহৎ সংকটের অতলে ডুবে যাচ্ছে।
তাই বলছিলাম, অন্ধকারের অতলে যখন ডুবে যাবে সব কিছু, তখন   
---- শত চিৎকার তখন প্রতিধ্বনীতে ফিরে আসবে, কোন রাস্তা খুজে পাওয়া অসম্ভব হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে, যে শ্রমিকেরাই পথে নেমে,
পুরো পরিমন্ডলটাই বদলে দিতে পারবে
----- সেকথাটাই আজ কেন, সাহারার বুকে হারিয়ে যাওয়ার পূর্বেই বুদ্ধিজীবিরা শ্রমিকদের ডেকে  কেন এই মহাপ্রান ব্যক্তিরা বুঝাচ্ছেন না, সেটাও বোঝা যায় না।হয়তো, বা তারা মনে করছেন, সেটা হবে অনধিকার হস্তক্ষেপ। 
বিপরীতে বলবো, উদারবাদ নিজেই যখন অপ্রাসংগিক এবং এই অপ্রাসংগিকতা, শ্রমিক নেতাদের নে্তৃত্ব দায়ী ভূমিকাকেও কুজ্ঝটিকায় ঢেকেছে, তখন
----- তারাই পারেন, নেতাদের মাথার উপর দিয়ে শ্রমিকদের সংগঠিত অংশকে আজকের পরিস্থিতিতে , শ্রমিক আন্দোলনের ইতিকর্ত্যব্যকে বুঝিয়ে দিতে।  এসব  কথাতো এখন কোন রাজনৈ্তিক ভাবাদর্শের বিষয় নয়,
----- কারখানা বা খনিমুখ, অথবা অফিস গেট কিংবা বন্দর ব্যত্তিত অন্য কোন স্থান রয়েছে, যেখান থেকে 'মিডিয়ার' ধর্মান্ধদের কাছে মিডিয়ার আত্মসমর্পণ প্রকৃয়া্কে নিশ্চল করে দিতে পারে? আমরা অতীত দিনের ট্রেড ইউনিয়ন কর্মীরা যখন বোঝাতে ব্যর্থ হচ্ছি, তখন বুদ্ধিজিবীদের কোনক্রমে টিকে থাকা বুদ্ধিজীবীরাই নেতাদের সেই মর্মে বোঝাতে পারন

----  জীবন থেকে শিখেই অতীতের অক্টোপাশ ভাবনায় শ্রমিকদের বর্ণজ্ঞানে বিবেচনা করাকে, সরে আসা যেতেই পারে।

প্রসংগে আসা যাকঃ
গতকাল ভারতীয় গনতন্ত্রের বিগত সত্তোর বছরের  সব থেকে ধ্বংসাত্মক সংবাদটি এই কম্পিউটারে হুমরীখেয়ে পরেছে। ভারতের প্রেস কাউন্সিল, নাকি  সুপ্রিমকোর্টে এক যাটিকায় 
------ সদস্যভুক্ত সব  সাংবাদিকদের এমন এক  নির্দেশ দিয়েছেন, যা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বজ্রাঘাত সম।কাশ্মীরের সংবাদে প্রতিবন্ধকতা নির্মান, সাংবাদিক নির্য্যাতন ইত্যাদির উপরে, সুপ্রিম কোর্টে যে সব আবেদন বিচারের জন্য জমা পরেছে, প্রেস কাউন্সিলের নির্দেশ সেই সব আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে। কাউন্সিল নির্দেশ দিয়েছেন
------- সংবাদ মাধ্যমের সাথে যুক্ত সব  সাংবাদিক যাতে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরনের বিপরীতে যেসব রিট জমা পরেছে, সেগুলিকে বাতিল করার পক্ষে যেন তারা এফিডেবিট জমা দেন।

প্রশ্নটা এখান  থেকেই উঠে, যা ভূ-স্বর্গের সীমানা ছাড়িয়ে ভারতীয় গনতন্ত্রের ভবিষ্যতের উপরে প্রশ্ন  তুলেই ক্ষান্ত থাকছে না
----- সংবাদের স্বাধীনতাকেই চিরতরে কেড়ে নেওয়া হোল।

নিজেকে সমেত শ্রমিক নেতাদের বার বার প্রশ্ন  করছিলাম
------ আমরা যেন, সেই চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে গল্পটার মহরা দিয়ে চলছিলাম।
--- অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সেই নব্বই এর প্রাক্কালেই শ্রী নরসিমহা রাও-মনমোহন দ্বৌত্ত পাক্কা করেছিলো।বাজপায়ী সরকার, দাসত্বের নিয়মগুলি পত্তন করেছেন, ব্যক্তি এবং রাষ্ট্রীয় স্তরে, পরি মোদি আমলের সারে পাচ বছরে, সব বাধানিষেধ আইন করেই তুলে দিয়ে
---- অর্থনীতির উপরেই লুঠ-তরাজকে মুক্ত করে দেওয়া হোল তাই নয়,
শিক্ষা সহ সব  জ্ঞানলোক সমেত, সব সামাজিক প্রতিষ্ঠানে নর্দমার জলের মতোই সব রকম অসাধুতা এবং বন্দুকের নলের সামনে দাড় করিয়ে দেওয়া হোল।
শ্রী মনমোহন সিং এর আমল থেকেই, আইনের দিক দিয়ে সংসদকে, নর্দমা সাফাই এবং চিকিৎসার মতো দায়হীনতার দায় পালনের সংস্থায় বদলে দেওয়া হয়েছিলো। শ্রীমোদির আমলে হেরুয়া ধারী এবং অন্যান্য মহাগুরুদের দাপটে, লেনিনের সংঘ্যা অনুযায়ী সংসদ এখন কার্য্যত 'শুয়োরের খাওয়ার'। এখন অনেক  ক্ষেত্রেই ১০০ কোটির কমে কোন লোক সভা আসনে পা' ফেলা যায় না।  ভদ্র-পড়াশুনা জানা কম মানুষই সংসদে ঢুখতে পাড়বেন এখন।
--- ক্রমে এই খোয়ারের ক্ষপ্পরেই চলে গেলো, ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবন, অধিকাংশ রাজ্যপাল
----- ক্রমে বিধান সভাগুলিও একই পথে যখন হাটাদিলো, তখন ব্যুরোক্রাসি সমেত সব সাংবাধানিক ব্যবস্থা চলে গেলো একই পথে।

এসব মুক্তমনা বুদ্ধিজীবিদের ছোট অংশ, ক্রমাগত যখন বলে আসছিলেন
---- এখন সব সাংবিধানিক কাঠামো কার্য্যতঃ ফ্যাসিস্তদের হাতে, তখনো আমরা ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা বিদ্যার প্রদর্শনীর সাথে সাথে পুজিপুথি থেকে মাঝে মাঝে শ্লোগান সর্বস্ব জিকীর মেরেই নিজেদের পবিত্র মনে করছিলাম। 
----- লেখক নিজের চোখে দেখা, এখন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নয়, সমাজটাই সমাজ বিরোধীদের হাতে চলে গেছে। বিপুল সংখ্যক থানা এরাই চালাচ্ছে। 
গতকাল দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় এবং প্রবীন আইনজীবি, প্রশান্তভূষন -  কোলকাতায় এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন। নিজেও বিচলিত। তিনি উল্লেখ করেছেন
----- বিচার ব্যবস্থাও কার্য্যতঃ ফ্যাসিস্তদের দাপটে চলে যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারছে না।
এদিকে শ্রীযুক্ত কান্নন গোপিনাথন নামে, একজন আই এস অফিসার, এই বলে চাকরি ছেরেছেন - " নিজের কথা প্রকাশ করার স্বাধীনতা চাই"।
এক্জন আই পি এস অফিসার, গুজরাট গনহত্যার তদন্ত করার 'অপরাধে' ইতিহাসের আবর্জনা স্তপ থেকে তুলে এন এক মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।

এই সামগ্রিকতা থেকেই বুঝতে হবে, 
---- সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরনের সমর্থনে সুপ্রিম কোর্টে, প্রেস কাউন্সিলের এফিডেভিট করার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতটি তাই এক বিপুল চালচিত্রে সমাহিত। কাশ্মীরের বিষয় তো কোনমতোই নয়। সম্প্রতি ম্যাগাসয় (এসিয়ার নোবেল হিসেবে পরিচিত) পাওয়া সাংবাদিক শ্রী রাবিশ কুমারের একটি বিবৃতির পরিপ্রেক্ষীতে এই ঘটনাকে
----- সারা দেশ তথা বিশ্বে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা এবং গনতন্ত্রের চরম বিপদ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত হবে। শ্রী রাবিশ কুমার ন্যাশানাল  হেরাল্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলছেনঃ" 
Unfortunately, the media have been serving only the powers that be and generating controversies that serve their purpose. There are diversions being created to take attention away from serious issues. The Aligarh Muslim University controversy is a case in point. It is an engineered controversy and so was the controversy around JNU"
সব শেষে অন্যদের নয়, শ্রমিক আন্দোলনের নেতাদের (নিজেকে সমেত) সবিনয়ে জিজ্ঞাসা করতে চাই
----- কালকের প্রেস কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের পর, "চোরের' আর কোন অধিকার নিয়ে পালানোর কি আর বাকি রয়েছে? এতো ভয়ংকর সংবাদ সংবাদের শিরোনামায় আসার পর ধরনী কেন দ্বি-খন্ডীত হয় নয়াই।?
---- তারাকি এখনো সেই বুদ্ধিবাবুদের জন্য অপেক্ষা করছেন, যারা শ্রমিক আন্তর্জাতীকতাকে শ্রমিক শ্রেনীর হাত থেকে  কেড়ে নিয়েছেন। তারা বুঝি এসে আপনাদের, চামচা দিয়ে মধু খাইয়ে দেবেন। 
এই নিশ্চুপতায়, রাজনীতিতে কী লেখা হোল? এই তো - প্রেস কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত, কেবল কাশ্মীরের জন্য প্রযোজ্য।
নেতা হিসেবে না হলেও,  একজন শ্রমিক হিসেবে প্রশ্ন করতেই পারি .
---- কেন আজ, কোলকাতা, দিল্লী, মুম্বাই,, চেন্নাই এবং ব্যাঙ্গালোরের রাজপথ প্রেস কাউন্সিলের এই চরম অসভ্যতার বিরুদ্ধে লালে লাল হয়ে যায় নাই ।
FINALLY I MUST SAY, IF WE LEADERS FEEL THAT WE HAVE SERVED OUR JOB, WHY DO WE NOT SURRENDER BEFORE THE WORKING CLASS OF THESE GREAT AND THEY ARE THE GREATEST LOOSER OUT OF SLAVERY AND ALSO  WOMEN.

কারখানা স্তরের শ্রমিক নেতাদের কাছেও একটা আবেদন রাখতেই পারি
----  এখনো তো আপনাদের বোঝো উচিত, আমরা নেতারা  নিশ্চিত ভয় পেয়েছি। তখন আপনাদের কি উচিত নয়, নতুন সাহসে আমরা নেতাদের    উজ্জ্বীবিত করা। 
গতকাল দিদি, পিটিয়ে ধর্মঘটি অর্ডিনেন্স শ্রমিকদের কারখানায় ঢুকিয়েছেন। ওসব উনি করবেন, আর প্রচার চালিয়ে যাবেন - তিনি ফ্যাসিস্তদের রুখবেন। প্রমান করার সময় এসেছে, বাঙ্গালার শ্রমিকদের সব দাত এখনো অক্ষুন্য। সেখানে যদি ভয় আমাদের পেয়ে বসে থাকে
----   সরাসরি শ্রমিকদের এগিয়ে এসে সেই ভয় ভাংগানো প্রয়োজন হবে।     
----  এটাই তো এককালে আমাদের প্রজন্ম শ্রমিকরা  করেছে এবং সে কারনেই তারা একদিন ইতিহাস নির্মান করেছিলো। প্রয়োজন যদি হয়,  দলবেধে ইউনিয়ন কেন্দ্রে  কামানো দাগদে  হবে
------ বাচার দাবী এবং গনতন্ত্রের দাবী আজ এক বিন্দুতে মিশেছে।এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।



Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours