মুসবা তিন্নি, ফিচার রাইটার, বাংলাদেশ: 

আমরা সবাই ডিজিটাল মুঠোফোনের রাজত্বে। হামাগুড়ি দেওয়া শিশু থেকে মৃত্যুপথযাত্রী বয়স্ক। নেট বাবাজীর দৌলতে মুঠোফোনের দোয়া পেতে যেন হামলে উঠি। 
একটি ঘরে একই সময় শিশু থেকে শুরু করে অভিভাবকদের সবাই একান্ত মনে স্মাট ফোন ব্যবহারে ভীষণ ব্যস্ত। এধরনের দৃশ্য এখন ঘরে ঘরে দেখা যায়। একবিংশ শতাব্দিতে রয়েছি আমরা , বিজ্ঞানের আর্শিবাদে এই শতাব্দিতে সবকিছুই ডিজিটাল । যখন যা চাই সবই যেনো হাতের মুঠোয় পাওয়া যায় । আর প্রতিটি জিনিষ হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে একটি ছোট ডিভাইস,যাকে বাংলায় মুঠোফোন ও ইংরেজিতে মোবাইল বলা হয়ে থাকে। প্রাথমিক পর্যায়ে এটি কেবল কথা বলা ও মেসেজ আদান প্রদানের জন্য ব্যবহার হয়ে থাকলেও কাল ক্রমে এই ডিভাইসটি এখন অনেক স্মার্ট। যাদুকরি এই ডিভাইসে যেনো পুরো পৃথিবীটাকে খুঁজে পাওয়া যায় ।
উন্নত দেশগুলোতে এরই মধ্যে গবেষণা করে দেখা গেছে স্মার্ট ফোন ব্যবহার বেশি করলে তা স্বাস্থ্যগত সহ মানসিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিষণ্নতা সৃষ্টি করে। বিশেষ করে শিশুদের বুদ্ধি বিকাশে তা প্রচণ্ড বাধার সৃষ্টি করে। এবং এসব বিষয় বিবেচনা করে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা স্মার্ট ফোনের ব্যবহার সীমিত করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু এ পরামর্শ মেনে চলার ব্যাপারে খুব সামান্যই আগ্রহ দেখা যায়। 
প্রায় ৯৯% মানুষ এখন স্মার্ট মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকে, এটি দামে সুলভ হওয়াই প্রায় সবাই এটি কিনে ফেলতে পারে। তবে বর্তমানে এর ভয়াবহ ব্যবহার দেখা যায়, ছোট শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষের মস্তিস্কে এটি জায়গা করে নিয়েছে। এই ডিভাইসে নেটের ব্যবহার যত্রতত্র হওয়াই বিভিন্ন প্রকার ভিডিও গেম,অনলাইন গেম,ডাউনলোড গেম সহজেই আওতায় আনা যায়। তাই এখন শিশুরা মাঠের খেলা ছেড়ে মোবাইলেই খেলতেই ভালোবাসে, এছাড়া ছোট শিশুর জেদ ভাঙ্গাতে বা তাকে ব্যস্ত রাখতে  মা-বাবা পর্যন্ত তাদের এই ডিভাসের প্রতি আসক্ত  করছেন । 
গণযোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এখানে অতি সহজেই পাওয়া যায় তাই মানুষ নিজেদের মধ্যে গল্প,আড্ডা কমিয়ে দিয়ে এখানেই সোচ্চার হয়ে গেছে । বিভিন্ন প্রকার ছবি তুলে তাতে পোষ্ট করা , নিজেদের রাগ,দুঃখ,অভিমান,হতাশা,হাসি, আনন্দ সবকিছু এখানেই শেয়ার করা যায় । আর তাতে অন্যেরা লাইক আর কমেন্ট দিয়ে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করে,আর এটা পাওয়ার জন্যই মানুষ ব্যকুল হয়ে থাকে । সারাদিন ফেসবুকে এক্টিভ থাকে অনেকে এতে করে মানুষ ব্যক্তিগত ভাবে একা হয়ে পড়ছে । সামনে থেকে দেখে মানুষ মানুষের জন্য আর দুঃখ বোধ করেনা ,সমস্ত দুঃখবোধ যেনো ফেসবুকে পোস্ট হওয়া ঐ অংশটার প্রতি। এই ডিজিটাল ম্যনিয়ার কারণে মানবকুল যন্ত্রে পরিণত হচ্ছে , কাছে থেকে ,পাশে থেকেও যেনো সবাই একা। ভিডিওটিতে একটি পরিবারের সবাই কিভাবে স্মার্ট ফোনে চরম আসক্তিতে আটকে পড়ে আছেন তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
আসল কথা হল নেট দুনিয়ার প্রতি আমাদের এক নাছোড় অঘোম আসক্তি। আর তার সহজলভ্য মাধ্যম হল হ্যান্ডি মুঠোফোন। চুলোয় যাক বাকি দুনিয়া। মারো গুলি সমাজ। মাই ফুট পরিবার পরিজন। এই নব্য আসক্তির নয়া নাম "আমি"। এই নতুন ম্যানিয়াকের হালফিল পরিচয় "তুমি"। আর ঝক্কাস অ্যান্ড্রয়েড মুঠোফোনের আল্ট্রা ডাইমেনশন হল "আমাদের ডিজিটাল পৃথিবী"। উমমম। আই কিস ইউ জানু মুঠোফোন। হিপ হিপ হুররে।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours