শামা আরজু, ফিচার রাইটার, বাংলাদেশ:
টাউনহলের মোড়ের ঠিক দক্ষিণ -পশ্চিম পাশের দোকানগুলোর সামনে বিশাল বিশাল সাইনবোর্ডে আরও বিশাল নেতাদের ছবি সংবলিত বিজ্ঞাপন!দোকানের নাম দেখাই যায় না।এই দোকানের মালিক গুলির ঘাড়ে কয়টা মাথা? তারা নেতাদের সম্মানে তাদের দোকানের আকামা সাইনবোর্ডগুলি নামায় না কেন!
লেখক সাংবাদিকদের কী সামাজিক দায়বদ্ধতা বলে কিছুই নেই! তাঁরাই বা কেন নামাতে বলেন না!প্রশাসন? সবই হচ্ছে তো তাঁদের নাকের ডগাতেই।তাঁদেরই বা বলি কোন সাহসে!
সুপার মার্কেট নামের একখান মার্কেট আছে শহরে।ইত্তেফাকে নিউজ হয়েছিলো এটা নাকি এশিয়ার ৩য় বৃহত্তম শপিং মল।
শপিং মল বৃহত্তম না হলেও এখানে মানুষ জন নেহায়েত কম আসেন না।কিন্তু, সবাই কী অন্ধ হয়ে গেলো নাকি!একটা লোক, যার পা কাটা,সম্ভবত একটা। লোকটা বৃষ্টিতে ভিজে কাদা মাখামাখি করে গড়িয়ে গড়িয়ে ঈশ্বরের নাম করে ভিক্ষা চায়।আমি ভালো করে এদের দিকে তাকাতেও পারিনা।আমার এসব দেখলে প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট হয়,বুক ধড়পড় করে। তবু দেখতেই হয়।ঝাপসা চোখে তাকিয়ে ফেলি কখনও কখনও।দ্রুতই চোখ সরাই কিন্তু কান সরাই কি করে! পঙ্গু লোকটা অবিরাম এমন স্বরে কান্না করে যা প্রতিদিন সহ্য করাটা আমার জন্য প্রচন্ড কষ্টের! আমাকে প্রতিদিন এই পথেই যাতায়াত করতে হয়, আমার জীবিকার তাগিদে নইলে ভুলেও এই পথ মাড়াতাম না আমি। তাকে এখানে ভিক্ষার জন্য রেখে যায় কে বা কারা!কেন তার মতো মানুষকেও ভিক্ষা করতেই হয়!
এ কথাটা হয়তো খুবই হাস্যকর আমার কাছেই লাগে।কারন এদেশে পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাকে ও ফাঁসীতে ঝুলতে হয়।
এদেশে এমন লোক ভিক্ষা করে আবার এতো বড় শপিংমলও হয়।মানুষজন দিব্যি হাসিমুখে এখানে আসে, কেনাকাটা করে, ভালো ভালো খাবার খায়। যাবার সময় কেউ কেউ ভিক্ষা দিয়ে যায়। ভিক্ষা দিয়ে ধন্য হয় অনেকেই। ভিক্ষুকেরা এখানে থাকেই। এখানে ভিক্ষুকরা কেমন ভাবে হাত পাতে যেন, হাত পাতা খুব গর্বের কাজ। এমন ভাবে দোয়া করে যেন ভিক্ষা দেনে ওলার কপাল খুলে গেল। ভিক্ষুকের দোয়ায় তার দিব্যি চলে যাবে দিনগুলি তার।তাকে করে খেতে হবে না। যেমন ভিখারী, তেমন জনগণ। লজ্জা কারোই নেই। সুপার মল কে এখানে আমার আমেরিকা মনে হয়, যেটা কে একসময় ধনী দেশ এবং একই সঙ্গে শোষকদের দেশ বলেই জানতাম। যদিও এখন প্রেক্ষাপট অনেক পাল্টে গেছে নতুন প্রেক্ষাপট বিষয়ে আমার খুব ভালো জ্ঞান নেই।
আমি মানুষ হয়ে ভুল করেছি,যন্ত্র হতে চাই।
আমি বিস্মিত হতে চাইনা আর !
Post A Comment:
0 comments so far,add yours