ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার , দুর্গাপুরঃ
কাত্যায়নীর স্বামী বিয়ের রাতের পর আর আসেননি, কেন কে জানে? রূপেন্দ্র নাথ বুঝতে পারেন তাঁর আদরের বোনটি চায় তার স্বামীর একবার খোঁজ নিক দাদা! রূপেন্দ্রনাথ একবার কৃষ্ণনগরে গোয়াড়ি গ্রামে খোঁজ নিতেও চেয়ছিলেন , কিন্তু জগু ঠাকরুনের তীব্র আপত্তি!কারনটা স্পষ্ট করে না জানেলেও বোঝা যায়, বাঁড়ুজ্যে বংশের অভিমান !তিনি শুধু একটা কথাই বলেছিলেন, "তাঁর মেয়ে কি ফ্যলনা?"জগু ঠাকরুন রূপেন্দ্রকে দিব্যি দিয়ে তাঁর জামাই- এর খোঁজ নিতে গোআড়ি গ্রামে যেতে নিষেধ করেন!এমনকি যা যাওয়ার জন্য দিব্যি দেন! মায়ের এমন আচরনে কাত্যায়নীর কি প্রতিক্রিয়া বোঝা না গেলেও, নিরবে আঙ্গুলে কাপড় জড়ানো দেখে রূপেন্দ্র নাথের বুঝতে অসুবিধা হয়নি বোনটি কি চাইছে!
জগুঠাকরুন নিজের মেয়ের সংসার হওয়ার থেকে ভাইপোকে সংসারী করতে বেশী সচেষ্ট ছিলেন!তিনি ভাইপো বার বার বোঝাতে চেয়েছেন কুলীন বামুনের ঘরে ২৫ বছর বয়সেও বিয়ে না করাটা সমাজে সমীচিন নয়! কিন্তু কোনভাবেই শাস্ত্রঞ্জ ভাইপোকে টলাতে পারেন নি ! তাঁর একটাই কথা আজীবন ব্রক্ষ্মচারী থাকবেন এবং আর্তের সেবা করবেন! আর সাথে পিসীকে সতর্ক করেছেন, বিয়ের জন্য খুব পীড়াপিড়ী করলে, তাঁর কাকার মতো সংসার ত্যাগ করে সন্ন্যসী হবেন!
রূপেন্দ্রনাথ পিসীর দিব্যিকে অগ্রাহ্য করে শুধু বোনটিকে সুখী করার জন্য নবদ্বীপ যাত্রা করলেন! তখন তাঁর পান্ডিত্য আর চিকিৎসার খ্যাতি নবদ্বীপ পৌঁছে গেছে! নবদ্বীপে গিয়ে তিনি সাক্ষাৎ করলেন কৃষ্ন নগর রাজ সভার সভাকবি ' অন্নদা মঙ্গল ' কাব্যের কবি রায় গুনাকর ভারতচন্দ্র!
প্রথম সাক্ষাতেই দুজনের সম্পর্ক এতটাই দৃঢ় হলো , যেন তাঁরা একে অপরের বহুদিনের চেনা!
কবিকে রূপেন্দ্রনাথ জানালেন তাঁর একটি ব্যক্তিগত সমস্যার জন্য তাঁর দ্বারস্হ হয়েছেন !কবি সমস্যার বিষয়ে জানতে চাইলে. রূপেন্দ্র ক্যাত্যায়নীর সমস্যাটি বিস্তারিত জানালেন , নয় বছর বয়সে তাঁর বোনের গৌরীদান হয়েছিল! পাত্রের নাম গঙ্গা চরন, পিতার নাম প্রয়াত বিষ্নুচরন চট্টোপাধ্যায়, বাড়ী গোয়াড়ী গাঁয়ের নেদের পাড়ায়! কিন্তু বিবাহের সাত বছর পরও জামাই বাবাজী একবারও সোঁয়াই গ্রামে স্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করতে না যাওয়ায়, তিনি একবার খোঁজ নিতে চান, যদিও খোঁজ না নেওয়ার জন্য তাঁর পিসী কঠিন দিব্যি দিয়েছেন তবুও বোনটির মুখ চেয়ে একবার খোঁজ নিতে তাঁর মন চাইছে!
( চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours