কাজল ভট্টাচার্য, সিনিয়র জার্নালিস্ট, কলকাতা:
সকালে হোয়াপ খুলতেই- কেমন আছিস?
কুসুমের ম্যাসেজ ঢুকলো।
- ভালো আছি।
- জ্বরটা কমেছে? ডাক্তার কী বললো?
- ফের যেতে বলেছে।
- একা যেতে পারবি?
- দেখি।
শেষ ম্যাসেজটা রিসিভড হলো। কিন্তু অদেখাই পড়ে রইলো।
মিনিট পাঁচ/ সাত পর ফেসবুকে গিয়েই চোখে পড়লো, "ফ্রেন্ডস বলো তো, এই গরমে দই খাবো না আইসক্রিম" কুসুম তখনই আপডেট দিয়েছে।
আমার ম্যাসেজ তখনও 'আনসিন'।
ডাক্তারের কাছে কিভাবে যাব, জানার ফুরসত নেই কুসুমের।
দুপুরে ফের কুসুমের ম্যাসেজ- একদম দেরি করবি না। সময় মতো খেয়ে নিবি কিন্তু। নইলে আমি খুব রাগ করবো।
- আচ্ছা।
- রে খুব চিন্তা হয় তোকে নিয়ে।
- চিন্তা করিস না।
- জানিস আমার ডগিটাও সকাল থেকে কিছু খাচ্ছে না। ভাবছিলাম ছুটি নেব।
- আচ্ছা।
- আচ্ছা বললেই হবে? কাজের যা চাপ!
- অফিস থেকে ফিরলাম রে, সান্ধ্য ম্যাসেজ কুসুমের।
জবাব দিলাম না। খানিক পরেই দেখলাম অফলাইন। মনের দুঃখে আপডেট দিলুম- "এ দুনিয়ায় কেউ কারও জন্য ভাবে না।"
অপেক্ষা কখন সে অনলাইন হয়। কী কমেন্ট করে?
আবার ভয়ও লাগছে, রেগেমেগে কথা বলা বন্ধ করে দেবে নাতো! ব্লকও করে দিতে পারে। মেজাজ আছে কুসুমের। ও অবশ্য নিজেকে দাবি করে স্পষ্ট কথার মানুষ বলে। যাদের মনে কালো নেই তারা নাকি ওর মতোই কথা বলে।
ঘণ্টাখানেক পর দেখলাম তার কমেন্ট হাজির- ঠিক বলেছিস।
রাত দশটা বাজতে মিনিট পাঁচেক বাকী।
ম্যাসেজ ঢুকলো কুসুমের- খেতে বসবো রে। তুইও সময় মতো খেয়ে নিস।
- খেতে ইচ্ছা করছে না। জ্বরটা বেড়েছে। আমি লিখলাম।
- কী যে করিস তুই বুঝতে পারি না !
কিছুক্ষণ পর ফের ম্যাসেজ- দেখ কী করবি। ডাক্তার দেখাতেও গেলি না।
মিনিট চল্লিশ পর।
ফের কুসুমের ম্যাসেজ- খুব চিন্তা হয় তোর জন্য। এই জানিস, ডগিটাকে আমি নিজে হাতে খাওয়াতেই সবটুকু খেয়ে নিয়েছে।
- বাহ ভালো তো।
- কাল ভাবছি ছুটি নেব। ডগিটাকে একবার ডাক্তার দেখিয়ে নেব।
- সেটাই ভাল।
- তুই কিন্তু আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইছিস না। কেমন যেন কাটা-কাটা জবাব।
- না বল, কী বলবি?
- আমার শরীরটাও ভালো নেই রে, কুসুম জানালো। যাই শুয়ে পড়ি। নইলে এখনই আবার চেঁচামেচি করবে ইতরটা।
ভালো থাকিস।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours