politics
সর্বজিৎ রায়চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক, বর্ধমান:    
সাম্প্রতিক কালে একটি বিশেষ প্রবণতা যথেষ্টভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে যে বিষয়ে  প্রশাসন থেকে শুরু জনসাধারণ সকলেই নির্বিকার। এই মৌনতা অবশ্যই স্বেচ্ছাপ্রসূত। কোন একটি স্টেশন, শপিং মল, বাস স্ট্যান্ড বা অন্য কোন জনবহুল এলাকায় তা সে ধর্মস্থান হোক বা গোরস্থান, সাধারন মানুষের গমনাগমনের প্রয়োজনে সেই স্থানগুলিতে যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত বাহনের জন্য একদল যুবক পার্কিং ফি বাবদ একটি নির্দিষ্ট অর্থ প্রতিদিন সংগ্রহ করছে। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের নিজস্ব বাহন থেকে শুরু করে যাত্রীবাহী টোটো, অটো, রিক্সা প্রভৃতি কোন কিছুই পার্কিং ফি  থেকে বাদ যাচ্ছে না।
আপাতদৃষ্টিতে এটা মনে হতেই পারে কোন একটি জনবহুল অঞ্চলে যানবাহন পার্কিং করলে পার্কিং ফি বাবদ টাকা দেওয়াটা অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত এবং সম্ভবত তা জনকল্যানেও ব্যবহার করা হয়। তথাপি এ বিষয়ে কয়েকটি প্রশ্ন থেকে যায়। যেমন-
  • সরকারী স্থানে অর্থসংগ্রহে নিযুক্ত ব্যক্তিবর্গের পরিচয় কি? যারা অর্থ সংগ্রহ করছেন তারা কার অনুমতিতে তা করছেন?
  • যদি তারা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হন তাহলে তাদের পরিচয়পত্র নেই কেন?
  • তাদের সংগৃহীত অর্থ সরকারী কোষাগারে জমা হয় কি? 
  •  সরকারী অর্থসংগ্রহের সময় নির্দিষ্ট চালান দেওয়া বাধ্যতামূলক, এক্ষেত্রে তা হয় না কেন?
  • সাধারন তোলাবাজদের স্বার্থে এই অর্থসংগ্রহের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের পার্থক্যের মাপকাঠি কি?
  • অর্থসংগ্রহের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিরা অনেক সময় সাধারণ মানুষ ও যানবাহনের চালকদের শারিরীকভাবে নিগ্রহ করে থাকে। এই কাজের বৈধতা তারা কোথা থেকে পায়?
  • কোন সরকারী পরিচয় বা প্রমানপত্র ছাড়া একদল তোলাবাজ কিভাবে জনসমক্ষে এইভাবে অর্থসংগ্রহ করতে পারে?
  • প্রশাসনের এদের সম্পর্ক কি?
  • স্থানীয় রাজনৈতিক রাজনৈতিক নেতৃবর্গের সাথে এদের সম্পর্ক কি?

খুব সঙ্গতভাবেই বলা যায়, সাধারণ মানুষ এটা বুঝতে পারে যে, অর্থ সংগ্রহের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিরা কোন রাজনৈতিক দল বা নেতার ছত্রছায়ায় থেকে এই কাজটি করে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের সংগৃহিত অর্থের একটা বর অংশের ভাগীদার ওই দলের নেতা বা নেত্রী। অর্থাৎ প্রশাসনের সাথে একটি অনৈতিক গাঁটছড়ায় আবদ্ধ এই পুরো ব্যবস্থাটি। তাই সাধারণ জণসাধারণকে এই বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন যে তাদের কষ্টার্জিত অর্থের একটি অংশ তারা দেশগঠনের কাজে বা জনকল্যানে সরকারী কোষাগারে জমা করছেন না কি কোন রাজনৈতিক নেতা বা নেত্রীর ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধিতে সাহায্য করছেন। শুধু তাই নয় এর বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিবাদ ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহন না করলে অচিরেই এই রাজ্য তোলাবাজদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে। 

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours