অনুপ চক্রবর্তী, নাট্যকার, কলকাতা
বাবাঃ হ্যালো –
মিনুঃ ( খুব উদ্বিগ্ন হয়ে ) হ্যালো বাবা হ্যালো –
বাবাঃ
মিনু! হ্যাঁ মা বল। কী হয়েছে রে? তুই এত আপসেট কেন? গলা কাঁপছে তোর।
কাঁদছিস কেন? কী হয়েছে? আমাকে বল। তোর শাশুড়ী কি তোকে খুব অত্যাচার করছে?
মিনুঃ না। না।
বাবাঃ তাহলে কী হয়েছে? খুলে বল মা আমাকে। কাঁদিস না মিনু। শান্ত হয়ে বল মা।
মিনুঃ বাবা, তুমি আমাকে যে ওষুধটা দিয়েছিলে আমার শাশুড়ী কে রোজ খাওয়াবার জন্যে সেটা তো বিষ ছিল?
বাবাঃ
হ্যাঁ। তুই তো বলেছিলিস তোর শাশুড়ী তোকে নিয়মিত ভীষণ অত্যাচার করে।
এমন ওষুধ দাও যেটা ওকে কিছুদিন ধরে রোজ খাওয়ালে ও মারা যাবে। তাই তো তোকে
দিয়েছিলাম ঐ ওষুধটা। আর বলেছিলাম রোজ খাইয়ে গেলে মাসখনেক পরে মারা যাবে।
এক মাস তো কেটে গেল। তোর শাশুড়ী কি মারা গেছে?
মিনুঃ না। না।
বাবাঃ তাহলে কি আরো কড়া ওষুধ দেব?
মিনুঃ না। না।
বাবাঃ তাহলে কী করব বল। আমি বুঝতে পারছি না।
মিনুঃ তুমি আমাকে বলেছিলে দিনরাত শাশুড়ীকে ভালবেসে যত্ন করে এই বিষ ওষুধটা খাওয়ালে ওটা কাজ করবে।
বাবাঃ হ্যাঁ। তুই কি তা করিসনি?
মিনুঃ
হ্যাঁ। বাবা। তাই করেছি। এই একমাস ধরে দিনরাত শাশুড়িকে ভালবেসে যত্ন করে ঐ
ওষুধটা খাইয়েছি। আর এখন আমার শাশুড়ী একদম বদলে গেছে। ও আমাকে আর একটুও
অত্যাচার করে না। বরং আমাকে এখন ভীষণ ভীষণ ভালবাসে। নিজের মেয়ের মতো। কোন
কাজ আমাকে করতে দেয় না। নিজেই সব কাজ করে। বাবা, ঐ বিষ ওষুধে আমার শাশুড়ী
মারা যাবে না তো? ওর কোন ক্ষতি হবে না তো? বাবা, তুমি ওর জীবন রক্ষা করো
অন্য ওষুধ দিয়ে। আমি ওকে আমার নিজের মায়ের মতো ভালবেসে ফেলেছি। ঐ বিষের হাত
থেকে আমার শাশুড়ীকে বাঁচাও বাবা।
বাবাঃ
ওটা বিষ ছিল না রে মিনু। ওটা সুগার পিল। বাবা হয়ে মেয়ের হাতে কি বিষ তুলে
দিতে পারি শাশুড়ীকে মারার জন্যে? দেখলিতো মা ভালবাসা দিয়ে সব জয় করা যায়।
ভালবাসার ওষুধে সবকিছুর সমাধান হয়। তোকে তো আসলে আমি ভালবাসতে বলেছিলাম।
ওটাই আসল ওষুধ।
( উৎস অজানা। ছাত্রের মুখে শোনা। )
Post A Comment:
0 comments so far,add yours