old temple
ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুরঃ গোপভুমের প্রধান বানিজ্য কেন্দ্রগুলির উজ্জয়নীর নাম উল্লেখ করতে হয়! কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তী তাঁর ' চন্ডী মঙ্গল কাব্যে উল্লেখ করেছেন- গৌড়েতে বিখ্যাত যার নাম উজ্জয়িনী মহকুল দত্ত বংশ সবামধ্যে গনি !! সেই উজ্জয়িনী থেক ধনপতি সওদাগর ও তাঁর পুত্র শ্রীমন্ত সিংহলে বানিজ্য করতে যে রাস্তায় গিয়েছিলেন! চন্ডী মঙ্গল কাব্যে কবি মুকুন্দরাম তার পথ নির্দেশ দিয়েছেন! যে গ্রামগুলি অতিক্রম করবে তাঁরা গিয়েছিলেন সেগুলি হ'ল - চাকদা,থানাঘাট, কুঙারপুর, চরকি, বাগুনকোলা, শাঁখারিঘাট, কাটোয় প্রভৃতি ! 
এগুলি সবই প্রাচীন গোপভুমেই অবস্হিত! আবার কবি উল্লেখ করেছেন, গোপভুমের একদা রাজধানী ভাল্কী ও পার্শ্ববর্তী অন্চলে বনিকদের প্রধান্য ছিল! মানকর একসময় বড় বানিজ্যকেন্দ্র ছিল, তামা পিতল ও কাঁসার বাসন এবং মাছ ধরার সরঞ্জাম এখান থেকে রপ্তানি হতো! এখানে সোমচন্দ্র নামে এক বনিকের কথা উল্লেখ করেছেন কবি কঙ্কন! ধনপতি সদাগরের পিতৃশ্রাদ্ধে আত্মীয়দের আগমন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে :- সাঁকো হইতে বেনে আসে নামে শঙ্খ দত্ত! রাত্রি দিন বহে যার আট ঘড়ার রথ! এই সাঁকো গ্রাম গোপভুমের গলসী থানায় অবস্হিত! এই প্রেক্ষিতে বলা বাহুল্য নয়,অতীতে গোপভুমে বনিক সম্প্রদায়ের যেমন ভাল বসতি ছিল, সমাজে তাদের প্রভাব ছিল প্রশ্নাতীত,!
রাঢ় বঙ্গের গোপভূমকে প্রাচীনকাল থেকে যে সমস্ত জাতিগোষ্ঠী মিলে তিল তিল করে তিলোত্তমায় পরিনত করেছিল তাদের মধ্যে যেমন গোপজাতির অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল বনিক বিশেষ করে গন্ধবনিক সম্প্রদায়ের ! এই গোপভুমের বিভিন্ন জাতি র শৌর্য,বীর্য,মহত্ব, ও উদারতার সমন্বয় যেমন করেছিল গোপভুমকে সেই তিনি ও,সংস্কৃতির প্রদীপটিকে আরও উজ্বলতর করেছে এই সম্প্রদায়ের অসীম সাহসিকতা! এরা সংসারের মায়া মমতা ত্যাগ করে,বর্হিদেশে বনিজ্য করতে অসীম দুঃসাহস নিয়ে জলদস্যু আর ভয়াল সমুদ্রের ভূক্রুটি উপেক্ষা করে বানিজ্য করতে গিয়ে এদেশের সংস্কৃতির সাথে বৈদেশিক কৃষ্টির মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন! 
পান্ডুরাজার ঢিবি থেকে প্রাপ্ত শিলালিপি থেকে জানা যায়,প্রাচান কালেই গোপভূমের বনিকরাই ভুমধ্যসাগর অন্চলে বনিজ্যিক সম্পর্ক স্হাপন করেছিল! (চলবে)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours