politics
সুমনা ভট্টাচার্য, সমাজকর্মী, কলকাতা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে , বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ করলেন , বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অভিযুক্ত সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা। এছাড়াও তিনি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ‘শারি’-এর নির্বাহী পরিচালক হিসেবেও দায়িত্বরত । তাঁর গ্রামের বাড়ী পিরোজপুর জেলার চরবানিরীর মাটিভাঙ্গা নাজিরপুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন প্রিয়া। রোকেয়া হলে থাকতেন তিনি।সে সময় তিনি ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ‘মহিলা ঐক্য পরিষদ’এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য গতবছর তাকে মহিলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে ‘শারি’ এনিজিও সংস্থার মাধ্যমে প্রিয়া নিজ এলাকার দলিত সম্প্রদায়কে নিয়ে কাজ করেন। তার স্বামী মলয় সাহা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক। কয়েক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রিয়া সাহার দুই মেয়ে বসবাস করছেন। কিছুদিন পূর্বে সেখানে যান প্রিয়া সাহা। উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহিষ্ণুতা বিষয়ে বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মীয় নেতা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে হোয়াইট হাউজে কথা বলেন। গত #১৬জুলাই_মার্কিন_প্রেসিডেন্ট_ডোনাল্ড_ট্রাম্প ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহিষ্ণুতা বিষয়ে বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মীয় নেতা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে হোয়াইট হাউজে কথা বলেন । এতে বাংলাদেশি পরিচয়ে প্রিয়া সাহা উপস্থিত হয়ে ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করেন , আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি । বাংলাদেশে #৩কোটি_৭০লাখ_হিন্দু ,#বৌদ্ধ ও #খ্রিষ্টান_নিখোঁজ_রয়েছেন । দয়া করে আমাদের লোকজনকে সহায়তা করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই ।
এরপর তিনি বলেন, এখন সেখানে #১কোটি_৮০লাখ_সংখ্যালঘু_রয়েছে । আমরা আমাদের বাড়িঘর খুইয়েছি। তারা আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে , তারা আমাদের ভূমি দখল করে নিয়েছে । কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বিচার পাইনি । এক পর্যায়ে ট্রাম্প নিজেই সহানুভূতিশীলতার স্বরূপ এই নারীর সঙ্গে হাত মেলান। এ সময় ট্রাম্প প্রশ্ন করেন, ‘ #কারা_জমি_দখল_করেছে , #কারা_বাড়িঘর_দখল_করেছে?’ ট্রাম্পের প্রশ্নের উত্তরে প্রিয়া সাহা বলেন , ‘ #তারা_মুসলিম_মৌলবাদি_গ্রুপ এবং #তারা_সবসময়_রাজনৈতিক_আশ্রয়_পায় । #সবসময়ই_পায় ।’ এরপর একটি ভিডিওতে দেখা যায় , মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে তিনি একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলছেন , তার বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। তবে সেই সাংবাদিকের পরিচয় জানা যায়নি। আপনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছে এই কথাগুলো কেন বলেছেন - এমন প্রশ্নের জবাবে প্রিয়া সাহা বলেন , আসলে এই কথাগুলো আমি কেন বলি , প্রথমে তো এই কথাগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথা । #মাননীয়_প্রধানমন্ত্রী_শেখ_হাসিনা_২০০১সালে যখন #সংখ্যালঘু_সম্প্রদায়ের_উপরে_নির্বাচন_উত্তর_চরম_নির্যাতন চলছিল #৯৪দিন_ধরে। তখন আজকের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বিরোধীদলীয় নেত্রী । তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার জন্য সারা পৃথিবীতে ঘুরেছেন । সমস্ত জায়গায় বক্তব্য দিয়েছেন । আমি তার কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে তার অনুসরণে আমি বলেছি এবং যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে , যে কোনো জায়গায় বলা যায়। এটা আমি তার কাছে শিখেছি। কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে প্রিয়া সাহা বলেন , " আমার পরিবার ভীষণ সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে । কারণ বাসার সামনে তালা ভাঙতে চেষ্টা করা হয়েছে । আমার বাসার সামনে মিছিল করা হয়েছে । সব চাইতে বড় ব্যাপার হলো , আমার পরিবারের ছবি ছেপে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায় । কথা বলেছি আমি , তারা আমার ছবি দিতে পারতো । কিন্তু আমার পরিবারের ছবি পত্রিকায় দিয়ে তাদের সবার জীবনকে বিপন্ন করে ফেলা হয়েছে । আপনি গিয়ে এলাকায় দেখেন , পত্র-পত্রিকায় দেখেন । কারণ তারা আমার কাজের সঙ্গে কোনো অবস্থাতেই কেউ যুক্ত নয় ।" কারা মিছিল করেছে জানতে চাইলে প্রিয়া সাহা বলেন , আমি জানি না। আপনারা স্থানীয় পত্রপত্রিকা দেখলে বুঝতে পারবেন । আমি ঠিক এতটা জানি না । তিনি দাবি করেন ,‘ ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনসংখ্যার হার ছিল ২৯ দশমিক ৭ ভাগ। আর ২০০১ সালের জরিপ অনুযায়ী এখন সংখ্যালঘু জনসংখ্যার হার ৯ দশমিক ৭ ভাগ। এখন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক ১ কোটি ৮০ লাখ। তার মানে বিপুলসংখ্যক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে গেছেন। ১৯৪৭ সালের পর এখন যে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী রয়েছেন, তার সঙ্গে হিসাব মেলালেই আপনারা বুঝতে পারবেন আমি কী বলতে চেয়েছি ।’ গবেষক ও শিক্ষাবিদ ড. আবুল বারকাতের গবেষণার উদাহরণ দিয়ে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘আমি এক সময় তার (আবুল বারকাত) সঙ্গে কাজ করেছি। আবুল বারকাত বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করেই গবেষণায় দেখিয়েছেন, প্রতিদিন গড়ে ৬৩২ জন সংখ্যালঘু বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন। 
আমি সেই গবেষণা থেকেই রেফারেন্স দিয়েছি।’ প্রিয়া সাহা দাবি করেন,‘২০০১ সালে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, সেটা সকলেই জানেন। আর আমার নিজ গ্রামে ২০০৪ সালে ৪০টি হিন্দু পরিবার থাকলেও এখন সেই সংখ্যা মাত্র ১৩টি।’ সুতরাং প্রিয়া সাহা শুধু জানতে চাইছেন হিন্দুদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ কি ? 


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours