ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুরঃ
গোপভুমে গোপরাজাদের আধিপত্যের পাশাপাশি আরও প্রভাবশালী জমিদার বা আন্চলিক রাজার উদ্ভব হয়েছিল! যাঁদের নিয়োগ করেছিলেন বর্ধমানের মহারাজা!
এমনই একটি গ্রাম মানকর! ২নং জাতীয় সড়ক ( জি,টি,রোড) এর বুদবুদ থেকে কাটোয়া যাওয়ার রাস্তার উপর বুদবুদ থেকে আড়াই কিঃমিঃ দুরে মানকর গ্রাম! আয়তনে এটি সম্ভবতঃ গোপভুমের অবিভক্ত বর্ধমান জেলার বৃহৎ বর্ধিষ্ঞু গ্রাম!
গ্রামের নামকরন নিয়ে দুটি মত আছে ! একটি হলোঃ-মনিক খাঁ নামে এক ব্যক্তি লক্ষ্য করেন তাঁর গরুর দুধ কেই প্রতিদিন চুরি করছে! তাই তিনি একদিন তাঁর গাভীকে অনুসরন করে তার পশ্চাতে গমন করলেন! তিনি যা দেখলেন, নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না! তিনি দেখলেন, বনের মধ্যে তাঁর গাভীটি একটি বৃক্ষের নীচে দাঁড়ানো মাত্র তার স্তন থেকে দুধ ঝরে পড়ছে! কাছে গিয়ে দেখেন একটি শিবলিঙ্গের উপর দুধ পড়ছিল! মানিক খাঁ এই শিবলিঙ্গটি আবিস্কার করায় শিবের নামকরন হয় ' মানিকেশ্বর 'আর গ্রাম্যদেবতা মানিকেশ্বরের নামানুসারে গ্রামের নামকরন হয় 'মানকর'!
অন্যমতটি হলোঃ-বর্ধমানের মহারাজা কীর্তিচন্দ্র প্রতি বছর তাঁর দীক্ষাগুরু ভক্তলাল গোস্বামীকে প্রনামী দিতেন! তাই প্রবাদ
মানই যার রাজকর
সেই গ্রাম মানকর!
এই প্রবাদবাক্য থেকেই গ্রামের নাম করন হয় মানকর! মানকর গ্রাম সম্পর্কে আর একটি পরিচিতি আছে প্রবাদ আছেঃ-
পাল ভটচাজ খাঁ
তিন নিয়ে মানকর গাঁ!
মানকর আঠারো পাড়ার গ্রাম! মূলত়ঃ ব্রক্ষ্মন বৈদ্য ও বেনে অধ্যুষিত গ্রাম হলেও হিন্দুদের প্রায় সব সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করেন! গ্রামে মুসলিম ও খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীরাও বসবাস করেন!এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চোখে পড়ার মতো!
বর্ধমান মহারাজের কুলগুরু শ্যমসুন্দর গোস্বামী ছিলেন জগৎ রামের দীক্ষাগুরু!
তাঁর পুত্র ভক্তলাল ছিলেন মহারাজ কীর্তিচাঁদের গুরুদেব! এই কনৌজ ব্রাক্ষ্মন বংশই ছিলেন মানকরের জমিদার বা সামন্ত রাজা!
(চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours