fiture
জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা: 'আমিত্ব' যখন রক্তকনিকার বিন্দুতে বিন্দুতে, তখন কারূর পক্ষে আঞ্চলিকতা অতিক্রম করেব বিশ্বজনীনতার চশমায়, নিজেকে কিছুতেই চিহ্নিত করা সম্ভব হবে না। ------ তখন প্রয়োজন হবে, চিন্তা বা বৌদ্ধিক জগতের সাথে যত উপাদান মস্তিস্কে রয়েছে, সেগুলি বের করে এনে, নতুন কালগত উপাদানে পরিশোধনের পর আবার ঢুকিয়ে দেওয়া। অনেকটা, বোনমেরু বদল চিকিৎসার ধা।সবটা বেড় করে নিয়ে পূনঃস্থাপন প্রয়োজন হবে। যে কটি কথা আজকের দিনে উপর থেকে সাহস করে বলা দরকার, সে কথাটাই বলে যাচ্ছি, এই 'ছোট মুখে'। বিগত এক' শ বছরে যা পেয়েছি, প্রায় সবটাই পেয়েছি, কিন্তু কার্ল মার্ক্সের কথায় বলতে হয় ----- যা ঢুকেছে প্রতিস্থাপিত হয়েছে উল্টোপাল্টা। যতদিন আন্দোলন স্বতস্ফুর্ততায় অথবা আন্তর্জাতীকতায় কিংবা শরীর সর্বস্বতায় চলতে পারতো, চলেছে। এখন আর পুনঃসংস্থাপনে না গেলে উল্টো পরিনাম হতে বাধ্য। আসলে বিশ্ব পরস্থিতির মুল্যায়নে মাথায় রেখে, কোন স্থানীয় ঘটনাতেও আন্তর্জাতীকতার প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। পরিনামে, নেতৃত্বের সর্বোচ্চ অধিষ্ঠান গুলিতে যখন একটা দেবত্ব বোধ চেপে বসছে, নিচুতলার অন্ধু আনুগত্য, ভাবাদর্শের ছোট ছোট উপাদাঙ্গুলিকেও আপোষ করে দিচ্ছে। এ এই অন্ধকার মাথা-ঝিম ঝিম ভাব টাই সংগঠনের ভেতরেও, বাইরের দাসত্ব এক বিচিত্র রুপ নিয়ে, নিচু কিংবা মাঝারি মাপের নেতাদের ঘারে চেপে যাচ্ছে, তাদের অগোচরেই। আমরা ভারতীয়রা তো বটেই এমনকি এইভাবে 'শ্রমিক নেতারাও'এক ভয়ংকর মায়াবিক (Illusory deception) প্রবঞ্চনার শিকার হয়েছেন এবং এইভাবে ধ্বংসকে নেমত্যন্ন করে নিয়ে আসার কারন হয়ে গেছেন। তত্বের গুঢ়তা কিংবা মায়াবিকতা যখন শ্রমিক নেতাদেরকেও প্রবঞ্চিত করতে শুরু করে, তখান, ----- পুরো কালটাকেই ইতিহাসের মাঝখানে দাড় করিয়ে দিয়েই সন্ধান না চালিয়ে একজন কিংবা কোন শ্রেনী নিজেকে কালের দর্পনের সামনে এসে দাড়াতে সুযোগি পাবেন না। হয়তো সেদিনই, যেদিন শ্রমিক আন্দোলন নিজেকে শ্রেনীর পর্য্যায়ে উঠিয়ে আনতে পারবেন, সেই গভীর রহস্যের কিনারা হবে ---- কিভাবে এদেশে পায়ে পায়ে দাসত্বকে নামিয়ে আনাহোল, শ্রমিক আন্দোলনেরই অন্ধত্বের ছায়ায় এবং কি বিপুল পর্য্যায়ে চিন্তার দাসত্ব আন্দোলনের তলদেশ পর্য্যন্ত নেমে গিয়েছিলো।
আজ এমন এক দষা, যখন, কোন গুরুতর এবং জটিল বিষয়ে, স্বতস্ফুরত্তভাবে ঠোটের ডগায় চল আসে, সেখালে সেই সিদ্ধান্ত নিতে রাতের পর রাত ভাবতে হয়েছে। ----- আরো মজার বিষয়, যিনি যত জোরের সাথে সেসব অধিবিদ্যা আধারিত যুক্তিকে হাজির করেছেন, আমরা নিচুতলায় ততদ্রুততার সাথে হাত তুলে সেগুলিকে পাশ করেছি। আন্ত সাংগঠনিক আলোচনাতেই, যিনি যত সোজা জবাবটি হাজির করেছেন, চটপট এবং জোরের সাথে - মনেহয়েছে সেটাই সত্য। কদাচিত আজকাল বোঝার চেষ্টা হয়েছে, যত আমারা তাৎক্ষনিক সুবিধাকে শ্রেনী সংগ্রাম বলে মেনেছি, তত আমরা শ্রমিকদের সুদুরের অধিকারগুলিকে শৃংখলিত করেছি। মনে আছে, একবার আমার জেলার একজন নেতা, খুব ভালো মানুষ এবং জ্ঞানী, যিনি সর্বভারতীয় নেতৃ্ত্বের সর্বোচ্চো ধাপে উঠেছিলেন একদিন শ্রমিক আন্দোলন সম্পর্কে তার ধারনার কথা বলছিলেন। কথার ছলে তিনি ট্রেড ইউনিয়ন সম্পর্কে যে ধারনার কথা বলেছিলেন, তাতে আমার শীরপীড়ার কারন হয়েছিলো। তিনি বল্লেন, ট্রেড ইউনিয়নটা তিনি দুর্গাপুর থেকেই শিখেছেন। ------ ভাবতে বসলাম, বছরে পাচ/দশ ঘন্টা তাদের সাথে বসেই, যারা শুরুটাও দেখান নাই, আর শেষের বেলার পূনঃনির্মানে অলি-গলিতে ঘুড়ছেন, যদি কেউ এমন ট্রেড ইউনিয়ন অভিজ্ঞতা পেয়ে যান --- যা দিয়ে সারা দেশের দিক নির্দেশ করা যায়, ------ বুঝলাম, সে আন্দোলনের অচিরেই নাভিশ্বাস উঠবে। যে কারখানায় একলক্ষ ডিউটি পোস্ট এবং ২ক'শ বিভাগ এবং লাগাতার উৎপাদনের সাথে যুক্ত - যে শিল্প সম্পর্কের গতি-প্রকৃ্তি ষাট বছরেও সবটা বোঝা গেলো না, ------- সেটা এই দ্রুততার সাথে বুঝেছেন বলে একজন ভাবতেই পারেন।
কিন্তু, সামাজিক এবং রাজনৈ্তিক দিকের চিন্তার দাসত্ব যদি জীবন রায়ের মধ্যে ঢুকে যায় এবং কোন 'চিন্তাকে' বাজিয়ে গ্রহন করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেন। তখন মুক্তির আর কোন উপায় থাকে না। (চলবে)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours