Old temple
ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুরঃ সমস্ত কাহিনীর মধ্যেই ইতিহাস নির্ভর নাও হতে পারে! আবার অনেক কাহিনীর সত্যাসত্য যথার্থ বিচারে ইতিহাস উদ্ঘাটিত হতে পারে, যেমন ধর্মমঙ্গল কাব্যের ইছাই ঘোষ ও লাউসেনের কাহিনী আজ ইতিহাসের কষ্টিপাথরে যাচাই হয়ে প্রমানিত হয়েছে ধর্মমঙ্গলের এই চরিত্রগুলি ঐতিহাসিক চরিত্র, রামগঞ্জ তাম্র শাসনেরে আবিস্কার ও সন্ধ্যাকর নন্দীর ' রাম চরিত ' কাব্য প্রমান করে লাউসেন ও ইছাই ঘোষ কল্পকাহিনীর নায়ক নন, রক্ত মাংসের মানুষ এবং ঐতিহাসিক চরিত্র! গোপভুমের ইতিহাসে একই ভাবে উপস্হিত রাজা প্রতাপ সিংহ, যাঁর সম্পর্কে পূর্বেই আলোচিত হয়েছে, এমনই আর একটি চরিত্র রাজা হরিশ্চন্দ্র,
যাঁকে কেন্দ্র করে নানা কিংবদন্তী প্রচলিত! রাজ হরিশ্চন্দ্র সম্পর্কে ধর্মমঙ্গলের দুই প্রখ্যাত কবি রূপরাম চক্রবর্তী ও ঘনরাম চক্রবর্তী তাঁদের মঙ্গলকাব্যে উল্লেখ করেছেন ! তাঁদের কাব্য থেকে জানা যায়,রাজা হরিশ্চন্দ্র ধর্মপ্রান রাজা ছিলান এবং তিনি ও তাঁর রানী মদনা দুজনেই ধর্মরাজের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন! ধর্মরাজের কৃপায় ধন্য ছিলেন তাঁরা, তাঁর রাজ্যে সতত নিরবচ্ছিন্ন সুখ বিরাজ করতো! ধর্মমঙ্গল কাব্যে উল্লেখিত হয়েছে, রাজা হরিশ্চন্দ্রের রাজধানী ছিন বর্ধমানের অমরাবতী নগরীতে! তাঁরা ধর্মরাজের আর্শীবাদে লুইচন্দ্র নামে সর্বগুন সম্পন্ন পুত্র লাভ করেন ! আরাধ্য দেবতা ধর্মরাজের প্রতি এতটাই নিষ্ঠ ছিলেন যে কথিত আছে, একবার ধর্মরাজ তাঁর প্রতি ভক্তির পরীক্ষা নিতে হরিশ্চন্দ্রের দরবারে ছদ্মবেশে উপস্হিত হয়ে নরমাংস খেতে চান, কিন্তু প্রজা বৎসল রাজা নর মাংসের জন্য কাকে বধ করবেন?রাজা হরিশ্চন্দ্র ও তাঁর স্ত্রী মদনা যখন ঘোর ধর্ম সংকটে তখন তাঁদের একমাত্র পুত্র লুইচন্দ্র পিতা মাতাকে এই সংকট থেকে উদ্ধার করতে নিজে অতিথি সৎকারের জন্য আত্মবলিদান দিতে চাইলে, রাজা হরিশ্চন্দ্র ও তাঁ স্ত্রী মদনা নিজ পুত্রকে হত্যা করে তার মাংস ছদ্মবেশী ধর্মরাজকে খাইয়ে অতিথি সৎকার করেন! ধর্মরাজ তাঁর প্রতি এঁদের অবিচল আস্হায় সন্তুষ্ট হয়ে তাঁদের পুত্রকে আবার জীবিত করে তোলেন !ধর্মমঙ্গল কাব্যে হরিশ্চন্দ্র পর্বে এটিই উপজীব্য কাহিনী! রাজা হরিশ্চন্দ্রের এই কাহিনী গবেষক মহহলেকেও বিভ্রান্ত করে,হরিশ্চন্দ্র প্রকৃত তথ্য সংগ্রহে তাঁর উদগ্রীব হয়ে পড়েন( চলবে)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours