অনুপ চক্রবর্তী, নাট্যকার, কলকাতা: স্মরণাতীত কালের সেই আদিম সমাজ ব্যবস্থার অন্ধকারাচ্ছন্ন প্রত্যূষ। যখন ছিল প্রাক সভ্যতার বর্বর দশা। পুরাতন প্রস্তর যুগ। গুহাবাসী আদিম নরনারীরা দলবদ্ধভাবে তখন ভোঁতা পাথরের অস্ত্র দিয়ে পশু শিকার করে খেত। খেত কাঁচা মাংস। কিংবা আগুন জ্বালাতে শিখে তাতে শিকার করা মাংস ঝলসে নিয়ে খেত। সেই আদিম সমাজে তখন ছিল যৌথ যৌনজীবন। গ্রুপ ম্যারেজ। কোনরকমেরই কোন পরিবারের তখন অস্তিত্ব ছিল না। তখন ও পরবর্তী আদিম মাতৃতান্ত্রিক যুগে দৈহিক শক্তির দিক দিয়ে নারী পুরুষের সমকক্ষ ছিল। তখন গোষ্ঠীর মহামাতার নেতৃত্বে পুরুষ ও নারী উভয়েই শিকার করতে যেত। রাহুল সাংকৃত্যায়নের ভোলগা থেকে গঙ্গা গ্রন্থের প্রথম দিকে তার চমৎকার বর্ণনা আছে।খাদ্য সংগ্রহের সেই যুগ পেরিয়ে তারপর মানুষ কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন করতে শিখল। তখন কৃষিতে মুখ্য ভূমিকা থাকত নারীদের। যাকে বলা হয় উদ্যান চাষ। শিকারে যেত পুরুষেরা।
মাতৃতান্ত্রিক ক্ল্যানের যুগ হল এক নারীর বহুপতিত্বের বা পলিঅ্যান্ড্রির যুগ। একাধিক স্বামী থাকত মায়ের। পরিবারে কর্তৃত্ব,শাসন ও একাধিপত্য ছিল মায়ের। তারপর ক্রমশ অনিশ্চিত শিকারবৃত্তি থেকে সরে গিয়ে পুরুষেরা ব্যাপকভাবে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনে অংশ নিতে শুরু করল। তখন উৎপত্তি হল শিথিল পুনালুয়ান পরিবারের। যেখানে বিবাহিত নারী ও পুরুষ উভয়েরই যথাক্রমে একাধিক উপপতি বা উপপত্নী থাকত। তারপর হল কৃষি বিপ্লব। উৎপাদিত হতে থাকল উদ্বৃত্ত সম্পদ। সেসবের মালিকানার প্রশ্ন উঠল। পলিঅ্যান্ড্রির সিস্টেমে সন্তানটি কোন্ পুরুষের তা নির্ণয় করা সম্ভব নয়। তাই উদ্বৃত্ত সম্পদের দখল নিতে পুরুষেরা সৃষ্টি করল পিতৃতান্ত্রিক পরিবার। শুরু হল এক পুরুষের বহুপত্নীত্বের বা পলিগ্যামির যুগ। কেননা সেই পরিবারের সিস্টেমে পুরুষ তার সন্তানকে সনাক্ত করতে পারবে। উদ্বৃত্ত সম্পদের উত্তরাধিকার হবে তার সেই সন্তানের। সেই পিতৃতান্ত্রিক পরিবারে কর্তৃত্ব,শাসন ও একাধিপত্য চালু হল পুরুষের।
নারীর পুরুষের অধীন হওয়ার অর্থাৎ নারীর পরাধীনতার সেই সূচনা হল। তারপর উৎপাদিকা শক্তির ক্রমবর্ধমান বিকাশের সঙ্গে, ক্রমবর্ধমান শ্রম বিভাজনের সঙ্গে ও শ্রেণী বিভাজনের সঙ্গে নারীদের উৎপাদন থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে শুধুমাত্র পুরুষের যৌনসম্ভোগ, সন্তানের জন্মদান ও সন্তান লালন পালনের শৃঙখলে আবদ্ধ করা শুরু হল। নারী হারালো উৎপাদনে তার অংশগ্রহণের অধিকার এবং উৎপাদিত ফসল ও পণ্যে তার ন্যূনতম অধিকার। যা একচেটিয়া হল পুরুষের। বিবাহ প্রতিষ্ঠানের দাসত্বের শৃঙখলে সম্পূর্ণ আবদ্ধ হল নারী। সুতরাং নারীমুক্তির প্রধান শর্ত হল উৎপাদনে সমস্ত নারীর সম্পূর্ণ অংশগ্রহণের অধিকার এবং উৎপাদিত ফসল ও পণ্যে তার পুরুষের সমান অধিকার। সেই সমাজব্যবস্থা ক্রমশ গড়ে উঠতে থাকলে নারীশোষণভিত্তিক পুরুষতান্ত্রিক পরিবারের কাঠামোকে প্রতিস্থাপিত করে ক্রমশ গড়ে ঊঠবে নারীপুরুষের সমানাধিকারের পরিবার। সূচনা হবে প্রকৃত নারীমুক্তির। সেই সভ্য সমাজে যাবতীয় ব্যাপারে পুরুষদের মতোই সমান অধিকার থাকবে নারীদের। সেই সভ্য সমাজে পুরুষদের মতোই নারীদের থাকবে পূর্ণ নিরাপত্তা। সেই সভ্য সমাজে নারীদের বিন্দুমাত্র ছোট করা হবে না,হেয় করা হবে না, অসম্মান করা হবে না। সামন্ততান্ত্রিক কাঠমোতো বটেই, পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থাতেও সেই পূর্ণ নারীমুক্তি সম্ভব নয়। কারণ সামন্ততন্ত্র যেমন নারীদের শুধু ভোগের ও সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র মনে করে, তেমনি পুঁজিতন্ত্র নারীদের বিক্রয়যোগ্য পণ্য মনে করে। পুঁজিতন্ত্র নারীকে ঠিক ততটুকু স্বাধীনতা দেবে যতটুকু তার মুনাফা অর্জনের জন্য প্রয়োজন। প্রায়ান্ধকার নবপ্রস্তর যুগের উষাকালে বিজ্ঞানবোধ ও প্রযুক্তিবিদ্যার যাত্রা শুরু হয়েছিল একে একে নানা আবিষ্কারের মাধ্যমে। আগুনের আবিষ্কার। উন্নত মানের পাথরের অস্ত্রশস্ত্র তৈরী। হাড় দিয়ে নানা নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদি তৈরী। মৃৎশিল্পের সূচনা। চাকা আবিষ্কার। ছুঁচ দিয়ে বয়ন কৌশল আবিষ্কার। ইত্যাদি। তারপর একে একে হল কয়েকটি ধাতুর আবিষ্কার। শুরু হল তাম্র যুগ। তারপর ব্রোঞ্জ যুগ। তারপর লৌহযুগ। তারপর ধীরে, কিন্তু ক্রমবর্ধমান গতিতে বিকশিত হতে থাকল গণিতের নানা শাখা,জ্যোতির্বিজ্ঞান,স্থাপত্য বিদ্যা,ভেষজবিদ্যা,শল্যচিকিৎসা,রসায়ন বিদ্যা,বস্ত্রশিল্প ইত্যাদি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার এই পথ চলা এক প্রচণ্ড বাঁক নিল ইয়োরোপে রেনেসাঁ ও শিল্প বিপ্লবের সময়ে। জাদুবিশ্বাস, অ্যালকেমী ইত্যাদি অবিজ্ঞান,অপবিজ্ঞান ও আংশিকভাবে বিকশিত বিজ্ঞান থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়ে শুরু হল আধুনিক বিজ্ঞানের যুগ। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শুরু করে প্রাচীন যুগ পর্যন্ত সভ্যতার আঁতুড়ঘরে থাকা মানুষের মন ছিল শিশুর মতো। যখন সে অতিকল্পনার দ্বারা বিরুদ্ধ প্রাকৃতিক শক্তি বা নানা প্রতিবন্ধকতাকে জয় করার স্বপ্ন দেখত। তখন ছিল অতিকথার যুগ। মাইথোলজি বা পুরাণের যুগ। জাদুবিশ্বাসের যুগ। উর্বরতা চর্যার যুগ। সেইসব যুগে তাই রচিত হোত অজস্র পুরাণ,পৌরাণিক কাব্য,অলৌকিক কাহিনী ও রূপকথা। সর্বদেশেই। বিজ্ঞান ও টেকনোলজির তখন সবে হাঁটি হাঁটি পা পা। তারপর হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের নিরলস ও কঠিন সাধনা এবংনিরবচ্ছিন্ন কায়িক ও মানসিক শ্রমের ফসল হল আজকের এই উন্নত বিজ্ঞান ও উন্নত টেকনোলজি। যা ক্রমশ আরো আরো বিকশিত ও উন্নত হয়ে চলেছে ও চলবেই। পৃথিবীর যে কোন দেশে প্রাচীন মাইথোলজি বা পুরাণ যেসব আদিম,দাসতান্ত্রিক ও সামন্ততান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় সৃজিত হয়েছিল, সেইসব অন্ধকারাচ্ছন্ন পুরোহিত শাসিত ও রাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় আধুনিক কালের গণতান্ত্রিক অধিকারবোধ ও মানবাধিকারের কোন অস্তিত্ব ছিল না। আদিম ট্রাইবাল সমাজ থেকে শুরু করে আজো পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণী ও গোষ্ঠীর মধ্যে অব্যাহত আছে আধিপত্য বিস্তারের লড়াই ও ক্ষমতার লড়াই। বলাই বাহুল্য এই লড়াই কখনোই কোনভাবেই কোনদিনই অহিংস ছিল না বা আজো নয়। হিংসাই এই লড়াইয়ের প্রাণশক্তি ও প্রধান দর্শন। তাই স্বাভাবিকভাবেই সর্বদেশে প্রাচীন কালে বা মধ্যযুগে বা আধুনিক যুগেও বিবদমান শক্তিদের পক্ষ থেকে এই হিংসাকে justify করা হয়েছে বা নৈতিক বলা হয়েছে। এইভাবে হিংসাকে justify বা নীতিসম্মত করার জন্যে আদিম কৌমসমাজে আধিপত্যকারী শ্রেণী বা গোষ্ঠী তাদের ধর্মচর্চা, রিচুয়াল, পুরাণ, মাইথোলজি ও কাব্যসাহিত্যে এই হিংসার লড়াইকে সাংকেতিকভাবে শুভ ও অশুভের দ্বন্দ্বের নাম দিয়ে দার্শনিক আচ্ছাদনে আচ্ছাদিত করেছে। যেন আধিপত্যকারী, বিজয়ী শ্রেণী বা গোষ্ঠী যা কিছু হিংসা বা হত্যালীলা করেছে সেসবই শুভ এবং দমিত, বিজিত শ্রেণী বা গোষ্ঠীর সমস্ত কার্যকলাপই যেন অশুভ। পৃথিবীর সর্বকালের সর্বদেশের ধর্মচর্চা, রিচুয়াল, পুরাণ, মাইথোলজি ও কাব্যসাহিত্যের নির্মোহ ও যুক্তিবাদী বিশ্লেষণে এটা স্পষ্ট বোঝা যায়। সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র মাত্রেই জানেন যে শিল্পবিপ্লবোত্তর ইয়োরোপে পুঁজিবাদের বিকাশের উষাকালে তা ছিল প্রগতিশীল। যাবতীয় সংঘাত অতিক্রম করে সামন্ততন্ত্রের সঙ্গে তার প্রেমহীন বিবাহ হওয়া সত্ত্বেও। বুর্জোয়া সভ্যতার সেই প্রত্যূষে বিবিধ সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বুর্জোয়ারা ছিল উদারনৈতিক। ফলস্বরূপ ইয়োরোপের মাটিতে তখন শুরু হল তৎকালীন সময়ের বিচারে প্রগতিশীল বুর্জোয়া গণতন্ত্রের বিকাশ। ক্ষমতাহীন ও আনুষ্ঠনিক সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের বিলুপ্তি না ঘটলেও। সেই বুর্জোয়া গণতন্ত্রের অবদান স্বরূপ ইয়োরোপে ক্রমশ বিকাশ ঘটতে শুরু হল ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের ও ব্যক্তিগত গণতান্ত্রিক অধিকার বোধের । প্রতিকূল সামন্ততন্ত্র ও চার্চের বেড়াজাল ছিন্ন করতে করতে। তখন মধ্যযুগীয় বিধিনিষেধ ও মানসিকতার অবসানের সূচনা হল সেই ইয়োরোপে যেখানে জোয়ান অফ আর্ক ও জিওদার্নো ব্রুনোকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল ও গ্যালিলিওকে কারারূদ্ধ করা হয়েছিল।বৃটিশ ভারতবর্ষে যখন মুৎসুদ্দি পুঁজিতন্ত্রের বিকাশ শুরু হল তখন কিন্তু পুঁজিবাদের অবক্ষয়ের সূচনা হয়ে গেছে। তখন বুর্জোয়ারা প্রতিক্রিয়াশীলতার পথে হাঁটতে শুরু করেছে। তৎসত্ত্বেও এবং বৃটিশ সা্ম্রাজ্যবাদের অধীন ভারতবর্ষে ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও উদীয়মান লিবারেল বুর্জোয়া শ্রেণীর যেসব অরগ্যানিক ইন্টেলেকচুয়ালদের আমরা পেয়েছিলাম তাঁদের চিন্তাভাবনা ও কর্মকাণ্ড ছিল সেই সময়ের সাপেক্ষে বহুলাংশেই সামন্ততন্ত্রবিরোধী ও প্রগতিশীল। তাঁরা নাস্তিক্যবাদী না হলেও বা তাঁদের ভাবনা ও কর্মের ধর্মীয় অনুষঙ্গ থাকলেও। ইয়োরোপের মতো রেনেসাঁ সামন্ততান্ত্রিক ভারতবর্ষে না হলেও ঐ অরগ্যানিক ইন্টেলেকচুয়ালদের নানাবিধ পদক্ষেপ, কর্মকাণ্ড ও সৃষ্টিকর্ম ছিল এদেশের সামন্ততান্ত্রিক সমাজ কাঠামোয় ও সামন্ততান্ত্রিক মানসে এক একটা প্রবল আঘাত যা নিঃসন্দেহে কিয়দংশভাবে সামাজিক প্রগতির সহায়ক হয়েছিল। দুশো বছর আগে লর্ড আমহার্স্টের কাছে রামমোহন রায়ের ধর্মশাস্ত্রের পরিবর্তে NATURAL SCIENCE, CHEMISTRY, MATHEMATICS শিক্ষা দানের দাবী করা থেকে শুরু করে সতীদাহ বিরোধী আন্দোলন, বিদ্যাসাগরের নারী শিক্ষা বিস্তার ও বিধবা বিবাহ আন্দোলন,রবীন্দ্রনাথের সামন্ততান্ত্রিকতা বিরোধী ও পুরুষতান্ত্রিকতা বিরোধী সৃষ্টিকর্ম ও বিশ্বমানবতাবোধ, রামকৃষ্ণ পরমহংস ও স্বামী বিবেকানন্দের মানবিকতা ও উদারনৈতিক পরধর্মসহিষ্ণুতা,জ্যোতিরাও ফুলে,সাবিত্রীবাই ফুলে,আম্বেদকারের বর্ণবিভেদবিরোধী সংস্কার আন্দোলন,গান্ধীজীর অস্পৃ্শ্যতা বিরোধী ও RACISM বিরোধী আন্দোলন ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধিতা ইত্যাদি হল ভারতের সামন্ততান্ত্রিক মানসকাঠামোয় একেকটি আঘাত বা অন্তর্ঘাত। ( যদিও বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ নিজের বাণিজ্যিক স্বার্থে গোড়া থেকেই এই সামন্ততান্ত্রিক কাঠামোয় ও প্রাক পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থায় কমবেশী অন্তর্ঘাত করতে শুরু করেছিল )। সামন্ততান্ত্রিকতা বিরোধী আলোচনায় এবার এসবের সঙ্গে আলোকপাত প্রয়োজন দুটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। যার একটি হল উনিশ শতকের সাঁওতাল বিদ্রোহ যা সংঘটিত হয়েছিল একইসঙ্গে বৃটিশ সামাজ্যবাদ ও দেশীয় জমিদার শ্রেণীর অত্যাচার ও শোষণের বিরূদ্ধে। অন্যটি হল বিশশতকে গড়ে ওঠা শ্রমিক আন্দোলন ও তারপর ভগৎ সিং প্রমুখের সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদ বিরোধী আন্দোলন সহ কমিউনিষ্ট পার্টির গড়ে ওঠা এবং কমিউনিষ্ট পার্টি ও অন্যান্য সমাজবাদী পার্টির নেতৃত্বে শ্রমিকশ্রেণীর ও নানাবিধ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিকাশ। এসবই সামন্ততান্ত্রিক মানস কাঠামোয় কমবেশি আঘাত বা অন্তর্ঘাত। এখন এক নতুন পদধ্বনি ক্ষীণ থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে। ক্রমশ এগিয়ে আসছে অনাগত বিশ্বের সেইসব দিন। যে অনাগত বিশ্বে উৎপাদনের সর্বক্ষেত্রে উৎপাদন করবে শুধু কৃত্রিম বুদ্ধিমান যন্ত্রমানব। মানুষ মুক্তি পাবে তার শ্রম নিংড়ে নেওয়া সর্বপ্রকারের দৈহিক ও বৌদ্ধিক যান্ত্রিক কর্ম থেকে। যখন থাকবে না শ্রমশোষণ। সৃজিত হবে না উদ্বৃত্ত মূল্য। সৃষ্টি হবে না পুঁজির। ফলে বিলুপ্ত হবে পুঁজিতন্ত্র। অদৃশ্য হয়ে যাবে পুঁজিতান্ত্রিক শোষণ,নিপীড়ন,বেদনা। লুপ্ত হয়ে যাবে শ্রেণী বিভাজন। প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে যুদ্ধের। প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে অস্ত্রের। থেমে যাবে কামানের গর্জন। কেননা সম্পদের প্রাচুর্যে ভরে যাবে পৃথিবী । তখন মানুষ শিল্প ও বিজ্ঞানের বিচিত্র ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে নব নব ভাবনায় ও নব নব সৃজনে মগ্ন হবে। তখন মানুষ গান গাইবে।
  1. কবিতা,গল্প,নাটক লিখবে। ছবি আঁকবে। অভিনয় করবে। তখন প্রেমিক হৃদয় অবিপন্ন দৃষ্টি দিয়ে দেখবে বর্ণময় প্রকৃতির অঙ্গনে ঋতুর বদলে যাওয়া, ঘন নীল ইন্ডিগো আকাশে সানসেট ইয়োলো রোদ, নানারঙের খেয়ালী সবুজের ঢল আর স্ট্রনসিয়ামের শিখার মতো রক্তিম সূর্যাস্ত। নিরুদ্বিগ্ন চিত্তে দেখবে আকুল করা অঘ্রানের অপরূপ সন্ধে কিংবা বনতুলসীর গন্ধ মাখা ফাল্গুনের দীর্ঘ নরম ভালবাসার বিকেলবেলা।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours