Anugolp
ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ টেলিফোনের রিসিভারটা কানে থাকা অবস্হায় "খোকা " বলে চিৎকার করে কেঁদে উঠলো অনুরাধা! সমরেশ বারান্দায় ইজি চেয়ারে বসে কাগজ পড়ছিল ! সেখান থেকে আতঙ্কিত কন্ঠে জিঞ্জাসা করলো " কি হ'লো অনু ?" অনুরাধা আরো জোরে কেঁদে উঠলো! সমরেশ বুঝতে পারল ভয়ঙ্কর কিছু একটা ঘটেছে! বাধ্য হয়ে বাড়ীর ভেতরে এসে দেখল , তার স্ত্রী অনুরাধা কানে টেলিফোনের রিসিভার চেপে কাঁদছে! "কি হলো? সমরেশকে দেখে ফুঁপিয়ে জোরে কেঁদে উঠলো অনুরাধা ! "কি হ'লো কাঁদছো কেন "...সমরেশের প্রশ্ন শুনে আরো ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল অনুরাধা! অনুযোগের সুরে বলল,
" জানো তোমার অসুখের খবরটা খোকাকে দেওয়ার জন্য ফোন করেছিলাম, বৌমা ফোনটা ধরে বলল " আজে বাজে কথা শোনার সময় নেই " তোমার অসুখ সেটা আজে বাজে খবর? দুঃখ করে লাভ নেই অনু এটাই স্বাভাবিক! সমরেশ অনুরাধা ভালবেসে বিয়ে করেছিল! অনুরাধা ধনী পরিবারের মেয়ে হলেও সমরেশের পরিবার ছিল নিন্ম মধ্যবিত্ত ! অসম্ভব মেধাবী ছাত্র ছিল সমরেশ !তাই কলেজের সেরা ছাত্রটির প্রেমে বাঁধা পড়তে অনুরাধার দেরী হয়নি! বাড়ীর অমতে সমরেশকে বিয়ে করেছিল! অনুরাধা উচ্চাকাঙ্খী হলেও সমরেশ ছিল সাধারন! তাই গবেষনা শেষ করে অধ্যাপনার পেষা বেছে নিয়েছিল! অনুরাধার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার কোনদিন যাওয়ার সাহস হয়নি! তাই একমাত্র সন্তান সায়ন্তনকে অনুরাধা নিজের মতো গড়ে তুলেছে! ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করার পর সমরেশ শুধু একবার বলেছিল! দেশেই চাকরী নাও, কিন্তু তার পরামর্শ মনেনি মা ছেলে! ছেলে আমেরিকায় চাকরী নিল! দুবছর পর দেশে ফিরল তারই পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করতে! তখনই বলেছিল বাড়ী বিক্রি করে তার সাথে যেতে! সমরেশ রাজী হয়নি ! এজন্য ছেলে অশান্তি করেছিল কিন্তু সেই প্রথমবার অনুরাধা সমরেশেকে সমর্থন করেছিল , বাড়ী করতে চায়নি বলেছিল বাড়ীটাও তার কাছে সন্তানের মতো ! তারপর আর ছেলে ফোন করেনি ওর মা ফোন করলেও বেশীরভাগ সময় বৌমার সাথে কথা হতো!

ছেলে সেখানে খুব ব্যস্ত! আজ ফোনে বৌমার কথা শুনে খুব ভেঙে পড়েছে! সমরেশ ভালবাসার পরশ দিয়ে অনুরাধার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল " দুঃখ করছো কেন?"এখন সন্তানরা তো বাবা মায়ের জন্য নয়! ওদের কাছে এটা 'কাকের বাসা' যখন ডানা গজাবে ওরা কোকিল হয়ে উড়ে যাবে! আবার ফুঁপিয়ে কেঁদে সমরেশের বলবো মুখ গুঁজে জড়িয়ে ধরল তাকে!


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours