গার্গী দাস, সাংবাদিক, কলকাতাঃ
এ এক মানুষ ও না-মানুষের বিরল প্রেমের পরম দৃষ্টান্ত। এক ব্রাজিলীয় ব্যাক্তি এবং এক
পেঙ্গুইনের মধ্যে অপার বন্ধনের এক বিশ্ব বিষ্ময়। একটি পেঙ্গুইন পাঁচ হাজার মাইল সাঁতার কেটে
তারই জীবন রক্ষাকারী মানুষটির কাছে প্রতি বছর ছুটে আসে এক নীরব ভালবাসার টানে। ব্রাজিলের
রিও ডি জেনেরিও শহরের প্রান্তে এক নির্জন দ্বীপে এই ঘটনার ঘনঘটা।
আসলে এই দ্বীপেই যে থাকে পেঙ্গুইনের ভালবাসার মানুষটা।
নাম তার জাও পেরেরা। তিনি পেশায়
জেলে।
২০১১ সাল। তিনি সেই দ্বীপের বিচ থেকে উদ্ধার করেন ছোট্ট একটা প্রায় মৃত পেঙ্গুইনকে। যার সারা
গায়ে লেগে ছিল সামুদ্রিক তেল। জাও পেরেরা পেঙ্গুইনটিকে নিজের ঘরে নিয়ে এসে গায়ের তেল
পরিষ্কার করে খাবার খাইয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। সেই সময় তিনি পেঙ্গুইনটির নাম রাখেন
ডিনডিম।
ক্রমেই পেঙ্গুইনটি সুস্থ হয়ে উঠতে থাকে। সপ্তাহ খানেক পর ডিনডিম সুস্থ একটু সুস্থ হয়ে উঠলে
তাকে সাগরে ছেড়ে দেন তিনি। কিন্তু পেঙ্গুইন তাকে ছেড়ে যেতে চাইছিল না। সেই থেকে ডিনডিম থেকে
যায় পেরেরার কাছে। অবাক বিষয়, হঠাৎ ১১ মাস পর একদিন পেঙ্গুইনটি উধাও হয়ে যায়। কিন্তু মাস
কয়েক পরেই পেঙ্গুইনটি ফের ফিরে আসে পেরেরার কাছে।
পরে অবশ্য খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রজননের জন্য পেঙ্গুইনটি আর্জেন্টিনা, চিলি, কোস্টারিকা মতো
সমুদ্র ঘেঁষা এলাকায় চলে যায়। যা পেরেরার বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০০ কি.মি. দূরে। এই ভাবেই একই
নিয়মেই প্রতি বছর ডিমডিন তার প্রজনন পর্ব শেষ করে পেরেরার কাছে ফিরে আসে নিজের
খেয়ালেই। পেরেরা তাও বলতে পারেন, ডিমডিন তাঁর নিজের সন্তান এবং সে যে তাঁরই পরিবারের
পরিজন।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours