প্রতিম বসু, সিনিওর জার্নালিস্ট ও লেখক, কলকাতাঃ
একদম গুজবে কান দেবেন না।
এই যেমনটা হাওয়ায় খবর ভাসছে, দিনাজপুরে জেলা পরিষদ দখলের পর এবার নাকি বিজেপি কলকাতা পুরনিগম নিজের দখলদারিতে রাখতে তৎপর। একশো চুয়াল্লিশ জন কাউন্সিলারের মধ্যে নাকি আশিজন পা তুলেই রয়েছে গেরুয়া শিবিরের দিকে। আর এই রসায়নে ফের নাকি মেয়র পদে আসীন হতে চলেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।
মহানগরের রাজনৈতিক মহলের গুঞ্জন বলছে, দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি শোভনের মান ভাঙ্গাবার জন্যে অনেক কাঠখড় ইতিমধ্যেই পুড়িয়ে ফেলেছেন। কিন্তু কিছুতেই চিঁড়ে ভেজে নি আর। স্নেহের কানন ওরফে শোভন আর দলে ফিরবে না বলে অনেকের ধারণা। এদিকে এই প্রেক্ষাপটে কাউন্সিলারদের পোয়াবারো। কলকাতা পুরসভার মেয়াদ যে আর এক বছরও নেই। আগামী ভোটে তো জেতা মুশকিল। এখন এহেন অবস্থায় যা হয় আর কি!
বিজেপিরও ভালো, বিধানসভা ভোটের আগেই দিদিকে বেশ একটা ঝটকা দেওয়া যাবে। তারপর এই “কাট-মানি” গুলোকে ঝেড়ে ফেলে দিলেই হল। তৃণমূল থেকে লোক নেওয়া নিয়ে দলে আবার খুব রাগারাগিও চলছে।
কিন্তু ওই যে, যা বললামঃ এসব আদতে গুজব, তাই কান দেবেন না। প্লিজ।
রাজনৈতিক ডামাডোলের বাজারে গুজব তো আর একটা নয়। কাঁড়ি কাঁড়ি। অজস্র। কারা যেন বলে বেড়াচ্ছে দিদির প্রিয় বাংলা ছবির (যেগুলো আমি কখনও দেখি না) নায়ক-নায়িকারাও তলায় তলায় গদ্দারদের দলে নাম লিখিয়েছে। অন্তত তিনজন তো বটেই। কি আর করে বেচারারা, খাচ্ছিল তাঁতি তাঁত বুনে, চাপে পড়ে ভোটে দাঁড়াতে হয়েছে। নইলে…।
তা এদ্দিন কিন্তু বেশ ভালই চলছিল।
এবার কিন্তু ঘোর মুশকিল। রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়ঃ উলুখাগড়ার প্রান যায়। বিজেপি তো টালিগঞ্জেও ঢুকে পড়েছে ইতিমধ্যে। কদিন বাদেই ক্ষমতায় এলে, যদি দানাপানি বন্ধ করে দেয়? তাই এনাদের নাকি এখন “ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি” অবস্থা।
শুধুই কি এইসবে ক্ষান্ত নাকি? গুজবের তালিকা ক্রমেই বাড়ছে যে। এই সুযোগে লোকের খেয়েদেয়ে কাজ নেই সাংবাদিক, আমলা, ‘বুদ্ধিজীবী’দের নামেও রটিয়ে বেড়াচ্ছে বেশ রসিয়ে রসিয়ে। সব কুশিলবেরা নাকি ফুটো নৌকায় আর সওয়ার হতে না চেয়ে এবার দুবেলা মুরলীধর সেন লেনে মাথা ঠুকছেন। এক বুদ্ধিজীবী নেতাও বেশ চিন্তায় আছেন। আশঙ্কায় রয়েছেন, আগে দু-দুবার জার্সি বদলের পর এবার বোধহয় আর জায়গা পাওয়া যাবে না মনে হয়! কি যে হবে কে জানে? এইসব গুজবে আমি কিন্তু একদম বিশ্বাস করি না। দিব্যচক্ষে যে দেখতে পাচ্ছি, আবার দিদি বিপুল ভোটে জয়লাভ করে হাসিমুখে নবান্নে ঢুকছেন। আর চারপাশে আলো করে রয়েছেন ছারপোকার মত কিলবিলে গুনীজন।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours