জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদঃ পরিত্যক্ত রেনেসাঁকে
এগিয়ে দেওয়াটাই তো
সাম্যের সত্য বলে জেনেছিলাম।
রেনেঁশা শব্দটাকে নিজ মনের কাছাকাছি এনে জীবন সঙ্গী করার উদগ্র ইচ্ছার কারনে, তাকে ছোট করে 'সৃজন' বলে বুঝেছিলাম। এই সর্তেই, সেকালে গণশক্তির ডান দিকের প্রথম স্থম্ভে রোজ --
সাম্যের আর্থ-সাংস্কৃতিক-জ্ঞানগত অভিমুখকে চিহ্নিত করে স্তালিনের একটা উক্তি লেখা থাকতো। কথা কয়টির গাঁথুনিতে, সৃজনের অভিমুখে এমণ একটা সহজাত আবেগ নির্মান করতে সক্ষম হোত, সেটাকে একটা 'খুনে প্রবৃত্তির সাথেই তুলনা করা যেত।
এই প্রবৃত্তি সমাজকে,
--- জ্ঞানে-সংস্কৃতি এবং সংগঠনে মানুষকে ইতিহাসের অভিমুখে দাঁড় করিয়ে দিতে পারতো । স্তালিন সেদিন সেই কথা গুলিতে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন - সে পথেই সমাজের সৃজনমুখীনতাকে এগিয়ে দিতে পারবে, যখন , জ্ঞানী-গুনী, সাংস্কৃতিক ও বিজ্ঞান জগতের সঙ্গে, রাজনীতির পারস্পরিকতায়
---- রুদ্ধ হয়ে যাওয়া 'রেনেশার' দরজা উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নির্মান হবে। ইতিহাস আবার - সাম্য মৈত্রী, গনতন্ত্র এবং স্বাধীনতা বলতে বুর্জোয়ারা যা কিছু বুঝেছিলেন সে পথেই এগুতে থাকবে।
এর মধ্যেইে ' বাজার 'নাম নিয়ে , যে ' সভ্যতা, ' বিদেশ থেকে এসে, আমাদের সংসদীয় কাঠামোর উপরে চেপে বসলো
---- , তাতে, গণশক্তিকেও যে তার অস্তিত্বের প্রশ্নেই কিঞ্চিত পরিমানে বানিজ্যিক হতে হোত, সে কথা অস্বীকার করার উপায় ছিলো না।
>>দুই<<
পরিস্থিতির চাপে, গণশক্তির স্তম্ভ থেকে, সেই দুটি লাইন - দুনিয়া কাঁপানো বলবো না।
- - সমসাময়িক কালে নিজেকে আবিস্কার করা এবং কোন সাম্যবাদি দলের অভিমুখ যে হবে 'সৃজনের' অভিমুখ উন্মুক্তি এবং সভ্যতাকে রেনেঁশাকে ছাড়িয়েও বহু দূরে
----- , সাম্য মৈত্রি স্বাধীনতার দৌড়গোড়ায় বা জনগনের প্রকৃ্ত গণতনন্ত্রের মুখে এগিয়ে দেওয়ার বিষয়গুলিকে, কখনো - কোন দিক থেকে খাটো করে দেখার উপায় ছিলো না।
নিজে দেখেছি, ষাটের দশক থেকে, দুর্গাপুরের মতো বৃহৎ শিল্পগুলিতে সমাজের শিক্ষিত, জ্ঞানী এবং সংস্কৃতিবান অংশ থেকে উঠে আসা শ্রমিকেরা সব সময় সাম্যের কাছাকছি থাকতে দেখেছি। ইস্পাত নগরীর মা বোনেরাও সাধারনতঃ এই উন্নত সংস্কৃতির সাথেই থেকেছেন দীর্ঘদিন।
যদি কেউ কোনদিন, দুর্গাপুর ইস্পাতের,
রেট্রোস্পেকশান নেন, দেখবেন - এই নগরীর পারস্পরিকতা থেকে নাগরীক জীবন, সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল থেকে উৎপাদন কাঠামোর গতি ময়তার মুল অভিমুখটাই এসব শ্রমিক-কর্মচারী সাংস্কৃতিক উপলব্ধির সাথে হাতে হাত মিলিয়ে চলার সুযোগ পেয়েছিলো। নাগরিক জীবনে সাধারন প্রশাসনের স্থান খুবই সীমিত ছিলো।
>>তিন<<
ক্রমে ট্রেড ইউনিয়ন গণতন্ত্র যেমণভাবে সংকুচিত হয়েছে, তেমনভাবেই
কারখানার সব থেকে শিক্ষিত, জ্ঞানী, সাহাসী এবং কর্মক্ষমদের মধ্যে সৃজনমুখীনতার উন্মুক্তির পথ যেন সংকুচিত হয়েছে।
লক্ষ করেছি, এই সংকোচনের এলাকা যেমনভাবে বেড়েছে, তেমনভাবেই যেন শিল্পাঞ্চল শ্রমিকদের হাতের বাইরে গেছে। বিজ্ঞানর উপরে বিজ্ঞান বিরোধি, পদার্থ বিদ্যার উপরে অধিবিদ্যার, আধুনিকতার উপরে আরন্যক রাজনীতির, ইতিহাসের উপর ইতিহাস বিরোধীতা যায়গা করার সুযোগ করে নিয়েছে, তখনই কতকগুলি
---- বিপদজনক রাজনৈ্তিক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে।
যদি কোন মহিলা, একমাত্র সাম্প্রদায়ীক অবস্থান অথবা গৈরিক ভূষনের গরীমায় বলে বসেন, মহাত্মার খুনী একজন দেশপ্রেমী এবং সে কারনে তিনি ২ লাখ ভোটে জিতে আইন সভার নির্বাচনে জিতে যান, যদি কোন যুবক এসে বলেন শ্রীমোদি স্বাধীন ভারতের সর্বশ্রেষ্ট প্রধানমন্ত্রী, কিংবা নেহেরু ছিলেন একজন অসহিষ্ণু এবং হিংসুটে প্রধান মন্ত্রী
--- এসব কিছু মানা চলে একটা সর্তেইঃ ভারতের আধুনিক শ্রমিকরা, অধিবিদ্যার 'জয়যাত্রা', আধুনিকতার উপরে অনুমান ধর্মীতার আধিপত্য এবং ইতিহাসবোধ একেবারে নিম্নমানের, খন্ডিত ভাবনায় গড়িয়ে গেছে।
আজ সে সব রাজনীতি, যারা মানুষের সাথে আছেন বলে দাবী করবেন, তাদের নিশ্চিত ভাবে, মূল্যবোধ ভিত্তিক, যা আবার জ্ঞানের অখন্ড সত্তার বিকাশের প্রশ্নের সাথে যুক্ত, একটা সামাজিক একতা গড়ে তোলার উপর প্রথম গুরুত্ব দেওয়া উচিত হবে। অন্যথায়, সব কিছু মিথ্যা।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours