Suiden

রায় সমীর কুমার, সুইডেন সফররত বাংলাদেশী সাংবাদিকঃ  স্টকহোম শহরটাই যেন প্রচুর দ্বীপের এক সমন্বয়। আর, সেই দ্বীপ গুলোর মধ্যে প্রচুর সেতু দিয়ে যোগাযোগ রক্ষা হয়। বাল্টিক ওসান ধরে ঘুরতে ঘুরতে দেখি, সেই সেতু গুলো ধরে হাঁটতে হাঁটতে যে কোন দ্বীপে অবাধ যাতায়াত করতে কোন অসুবিধাই নেই। অবশ্য শহর কেন্দ্র থেকে ফেরী বোট ধরে, কিংবা বাস ও ট্রাম ধরেও ঐ সবুজ দ্বীপে পৌঁছে যাওয়া যায়। আমরা বাসেই ঘুরেছি। ট্রাভেল কার্ডে এই প্রথম আমার ভ্রমন। আধুনিক ব্যস্ত স্টকহোম শহরের একদম কেন্দ্রেই যে এক সবুজ, শান্ত, রূপকথার গল্পের মতো সাজানো হলুদ-সবুজ এক দ্বীপ থাকতে পারে, তা বোধহয় স্টকহোম শহরে না এলে জানা যেত না। আর সেই দ্বীপের অন্যতম আকর্ষণ বলতে, মিউজিয়াম, ঐতিহাসিক স্থাপত্য, মনুমেন্ট, গ্যালারী ও প্রচুর খোলামেলা সবুজ জায়গা। এবং মধ্য মে'র সোনালি সবুজ জঙ্গল। তাই, এই আইল্যান্ড পার্ক, প্রায় সারা বছরই স্থানীয় মানুষ থেকে শুরু করে টুরিস্ট সবাইকেই আমন্ত্রণ জানায়। আজ, যদিও এই পার্কের পথে জন মানব অনেক বেশিই চোখে পড়েছে। শুনেছি, স্টকহোম বাসীদের জন্যে, প্রকৃতির কাছাকাছি এসে সময় কাটানোর এক অতি প্রিয় জায়গা এই আইল্যান্ড পার্ক। প্রতি বছর প্রায় এক কোটি মানুষ এই আইল্যান্ড পার্ক দেখতে আসে, মিউজিয়াম থেকে শুরু করে পার্ক দেখা– সব নিয়ে, এখানে সারা দিন অনায়াসেই কাটানো যায়। পনেরো শতাব্দী থেকে, এই বিশাল শান্ত সবুজ হলুদ বাগান সুইডিশ রাজ পরিবারের কাছে আছে, বর্তমানে সুইডেনের রয়্যাল কোর্ট এই পার্কের দেখাশোনার ভার নিয়েছে। সেই রাজা, সেই রাজ পরিবার নাই বা থাকুক, কিন্তু এই রয়্যাল গার্ডেন যেন সেই সময়কে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে চলেছে। স্টকহোমে মে'র প্রকৃতি যতই ঠাণ্ডা, ততোই মেঘলা, এই রোদ, ঠাণ্ডা। তবে পাতা ঝরানোর অপূর্ব মাতাল করা রঙে রঙিন দেখা হ'ল না। স্টকহোমে যে দিনটির সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল, মেঘলা আকাশ ও ঝিরঝিরে বৃষ্টি নিয়ে দিনের মেজাজটি যেন একটু গম্ভীর ও ধূসর ছিল। ঠাণ্ডা হাওয়া রীতিমত জমিয়ে দিচ্ছিল মনে হয়। কিন্তু, স্টকহোমের বাগানের উজ্জ্বল হলুদ কমলা রঙে রঙিন গাছ গুলো এই ধূসর গম্ভীর দিনে রং ঢেলে সাজিয়ে দিয়েছে। আর এই যে স্টকহোমের বাগানে ধূসর দিনের নিঝুম প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্যের সাক্ষী হয়ে রইলাম, দেখলাম– সেই তো আমাদের অদেখা পথের এক উপহার, সেই উপহার টুকু মনে ধরে রেখে স্টকহোমের অলিগলি ধরে হাঠলাম, জীবনের এক সঞ্চয় হয়ে রইল দিনটি। ভালো লাগে এর সব। আমার কাছে সবই নতুন। বাংলাদেশ টিম লিডার ড. আফরোজা ম্যাম (খুবি) এক কথায় আমার হাত ধরে সমগ্র ইউরোপের দৃষ্টিপাত করালেন যেন। বাল্টিক ওসান, ফেরি বোট, সুইডিস পার্লামেন্ট, মার্কেট, কেনাকাটা, খাদ্যখাবার, ট্রাম, শহর সব দেখা হ'ল। ৫ দেশের জনা ত্রিশের মাঝে সব থেকে কম বয়স্ক আমি ঘুরলাম, দেখলাম স্টকহোম।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours