সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজঃ ক্রিকেট মানেই ভদ্রলোকের খেলা হিসেবে পরিচিত। প্রতিভার কারণে অনেক ক্রিকেটারই নিজস্ব মুন্সীয়ানায় ইতিহাসের পাতায় নিজেদের নাম লেখাতে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু এমন একজন টেস্ট ক্রিকেটার যিনি তার জীবনের কালো অধ্যায়ের জন্যি বহুল বেশি পরিচিত। কারণ তিনিই ইতিহাসে একমাত্র ক্রিকেটার যাঁকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয়েছিল আদালতের নির্দেশে। তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেসলি জর্জ হিল্টন। জন্মগ্রহণ করেন ২৯ মার্চ ১৯০৫ সালে। হিল্টন ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডানহাতি ফার্স্ট বোলার। নিচের দিকে এসেও ব্যাট চালাতে পারতেন ভালো। ১৯৩৫-১৯৩৯ সালের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৬ টি টেস্ট খেলেছেন হিল্টন। হিল্টন খুবই হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। ১৯২৭ সাল থেকে জ্যামাইকান ক্রিকেটে একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে উঠে আসেন তিনি। বহুবার এই ডানহাতি পেসারকে অবহেলা করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৩৫ সালে সুযোগ পেয়ে যান। তারপর সে ইংল্যান্ড এর বিপক্ষেই তার শেষ ম্যাচ খেলেন। তার শেষ ম্যাচে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে না পেরে বাদ যান দল থেকে। এরপর আর ফেরা হয়নি। দারিদ্রের কারণে খেলা বাদ দিয়ে একটি চাকরি নেন। তবে সে একটি ভুল কাজ করে ফেলেন। তার স্ত্রীকে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। সে দোষী সাব্যস্ত হয়। তার ফাঁসি হয়। ১৯৩৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার সময় তার স্ত্রী লারলিং এর সাথে তার দেখা হয়। তারা ৭ বছর প্রেম করে। তারপর ১৯৪২ সালে বিয়ে করে। তাদের একটি ছেলে সন্তান হয়। এরপর ১২ বছর পরে তাদের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। হিল্টন তার স্ত্রীকে গুলি করে হত্যা করে। ঘটনার শুরু হয় যখন হিল্টন একটি গোপন চিঠি পেয়ে যায় তার স্ত্রী লারলিং এর। সেটা পড়ে সে বুঝতে পারে যে তার স্ত্রীর গোপন অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে একজনের সাথে। এই পরিস্থিতিতে হিল্টন ভেবে পাচ্ছিল না সে কি করবে। সে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে স্ত্রী সবই স্বীকার করে নেই। তারপর তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। তখনই লারলিং বলেন, আমার বয়ফ্রেন্ডের কাছে চলে যাব। তুমি আমাকে বাধা দেবার কেউ নয়। সে তাঁর স্ত্রী লারলিং এর কথা সহ্য করতে না পেরে মূহুর্তে ৫টি গুলি করে বসেন তাঁকে। সে সেখানেই মারা যান। তারপর ১৯৫৪ সালের ২০ অক্টোবর আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ও ফাঁসির আদেশ দেয়। ১৭ই মে ১৯৫৫ সালে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। হিল্টন আদালতে বলেন "প্রথমে আমি ভেবেছিলাম নিজেকেই শেষ করে দেব। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই আচমকা আমার বন্দুক থেকে গুলি বেরিয়ে যায় স্ত্রীর দিকেই।” পরিশেষে হিল্টনের গলায় লাগানো ফাঁসির দড়ি অবশেষে ২২ গজে ক্রিজেই ফাঁস লেগে গেল...
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours