সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজঃ অবশেষে প্রত্যাশা মতোই ফের সিজিও কম্পপ্লেক্স এড়ালেন রাজীব কুমার। সোমবার সকাল দশটার মধ্যে কলকাতার সিবিআই দফতরে তাঁকে হাজির হবার নির্দেশ দেওয়া হয় এই তদন্তকারী সংস্থার তরফে। কিন্তু তিনি তা ভ্রুক্ষেপ না করে উলটে একটি মুখবন্ধ খাম পাঠিয়ে দিলেন সিবিআইয়ের অফিসে। আর সেই চিঠি নিয়েই উঠে গেল কিছু আইনি প্রশ্ন। কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের এই চিঠি পৌঁছে দেন সিআইডির দুই পদস্থ আধিকারিক। ওই দুইজনের নেতৃত্বে ছিলেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। গোপন সূত্রে জানা গিয়েছে, চিঠিতে লেখা রয়েছে, ছুটিতে থাকার জন্য রাজীব কুমার সিজিও কম্পপ্লেক্সে হাজির হতে পারেননি। এদিকে ভোট চলকালীন নির্বাচন কমিশন রাজীব কুমারকে বদলি করে দেয় দিল্লির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরে। রবিবার নবান্ন তাঁকে আবার এডিজি সিআইডি পদে পুনর্বহাল করে। যদিও স্বরাষ্ট্র দফতর তাঁকে রিলিজ করে দিয়েছে এমন নিশ্চিত খবর এখন পাওয়া যায়নি। এরই মধ্যে সিবিআই সারদা মামলায় সিটের ভূমিকা নিয়ে জিজ্জাসাবাদের জন্য শনিবার থেকে তাঁকে একাধিকবার ফোনে সংযোগ করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছে। পরিশেষে সিবিআইয়ের একটি দল তাঁর খোঁজ করতে শুরু করেন কলকাতার তাঁর সরকারী বাসভবনে। সেখানে না পাওয়া গেলে বাসভবনের দরজায় সিবিআই নোটিশ ঝুলিয়ে দেয় এই মর্মে যে তাঁকে সোমবার সকাল দশটায় হাজির হতে হবে তদন্তকারী দফতরে। এদিকে রাজীব কুমার আদপে কোথায় রয়েছেন তা নিয়ে স্পষ্ট হদিশ মেলেনি কপি লেখা পর্যন্ত। কেউ কেউ দাবি করছেন, তিনি আপাতত গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। সিবিআইয়ের একটি সূত্র থেকে মনে করা হচ্ছে তিনি সম্ভবত রয়েছেন উত্তরপ্রদেশের নিজের বাড়িতে। তবে সেই মুখ বন্ধ চিঠি নিয়ে নৈতিক ও আইনি প্রশ্ন উঠে গেল। সিবিআই তাঁকে সশরীরে সিবিআই অফিসে হাজির হবার জন্য তাঁর বাসভবনের দরজায় নোটিশ ঝুলিয়েছে। সেই নোটিশের উত্তর তিনি দিতেই পারেন। আবার সেই চিঠি বহন করতেই পারেন তাঁর পরিজন বা তিনি নিজে বা তাঁর আইনজীবী। কিন্তু সেই চিঠি কোন আইনি রক্ষাকবচের জেরে সিআইডির আধিকারিকেরা বহন করলেন? সিআইডি তো একটি সরকারি সংস্থা। অন্যদিকে রবিবার রাজ্য সরকার তাঁকে তাঁর প্রাক নির্বাচনী পদেই বহাল করেছে। কিন্তু রবিবার যেহেতু ছুটির দিন তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে তাঁর রিলিজ অর্ডারই বা তিনি কখন পেলেন তাও পরিষ্কার নয়। অন্যদিকে তিনি নিজেই পত্রে জানিয়েছেন যে তিনি ব্যক্তিগত কারণে ছুটিতে রয়েছেন। যদি ছুটিতেই থাকার কারনে সিবিআই দফতরে যেতেই পারলেন না তো তিনি কলকাতার সিআইডি দফতরে কি উপায়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন? আর যদি সিআইডির কাজে যোগই তিনি না দিয়ে থাকেন তবে তাঁর চিঠি কোন নৈতিক ও আইনি সহায়তায় সিআইডি আধিকারিকেরা তা বহন করলেন? প্রশ্ন উঠেছে অনেক এই চিঠির সারবত্তা ও আইনি প্রসঙ্গ নিয়ে। ইতিমধ্যেই সিবিআই আধিকারিকেরা এই চিঠির বিষয়ে আইনি পরামর্শ নিতে শুরু করেছে। সিবিআই সূত্রের আপাতত খবর, এই চিঠির প্রসঙ্গে তাঁরা যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। বরং এই চিঠিকে তাঁরা হাতিয়ার হিসেবেই গণ্য করতে চলেছে যে তিনি তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। প্রয়োজনে সিবিআই এই মর্মে চিঠিটি আদালতে যে পেশ করবে তাও পরিস্কার। সিবিআই এই চিঠির উল্লেখিত কারনকে আমল দিতে নারাজ তাও জানা গিয়েছে সুত্র মারফৎ। এই মূহুর্তে যা পরিস্থিতি তাতে এই চিঠিই না ব্যুমেরাং হয়ে যায় রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours