about kolkata
দ্য অফনিউজঃ ১৭শ শতাব্দীর শেষভাগে সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। তখন এই জায়গা গুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। 
১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ কোরে কোম্পানি কলকাতায একটি বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে।  ১৭৫৬ সালে নবাব  সিরাজদ্দৌলা কলকাতা জয় করার পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নেয়। 
ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথম দিকে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলির রাজধানী। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই কলকাতা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র।
পরবর্তীকালে  ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হয় নতুন দিল্লিতে। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিকভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র।
১৯শ শতাব্দী ও ২০শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বাংলার নবজাগরণের কেন্দ্রস্থল ছিল কলকাতা। এই শহর বাংলা তথা ভারতের ধর্মীয় ও জাতিগত বৈচিত্র্যপূর্ণ এক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও বটে। সাহিত্য, থিয়েটার, শিল্পকলা ও চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে এই শহর এক স্বতন্ত্র ঐতিহ্য বহন করে আসছে। কলকাতার অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি সাহিত্য, সংগীত, নাটক, চলচ্চিত্র, শিল্পকলা, বিজ্ঞান ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশেষ কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছেন। এঁদের মধ্যে কয়েকজন নোবেল পুরস্কার ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক পুরস্কারে সম্মানিতও হয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের কেন্দ্রও কলকাতা শহর। এখানে জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন বেশ কয়েকটি খ্যাতনামা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলির মধ্যে অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল, এশিয়াটিক সোসাইটি, ভারতীয় সংগ্রহালয় ও জাতীয় গ্রন্থাগারের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
এগ্রি-হর্টিকালচারাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া, জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, ভারতীয় উদ্ভিদ সর্বেক্ষণ, ক্যালকাটা ম্যাথেমেটিক্যাল সোসাইটি, ভারতীয়বিজ্ঞান কংগ্রেস সংস্থা,  জুওলজিক্যালসার্ভে অফ ইন্ডিয়া, ইনস্টিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ার্স,  অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়ান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের মতো কয়েকটি পেশাদার বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান কলকাতাতেই অবস্থিত।
এই শহরে একাধিক ক্রিকেট মাঠ ও ফ্র্যাঞ্জাইজি আছে। কিন্তু ভারতের অন্যান্য শহরে ক্রিকেট বেশি গুরুত্ব পেলেও, কলকাতার অধিবাসীরা ফুটবল ও অন্যান্য খেলার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।বলা হয়ে থাকে, ভারতবর্ষের ফুটবলের রাজধানী কলকাতা। 
আদি কলকাতার ব্ল্যাক টাউন তথা কলকাতার সংস্কৃতির আঁতুড়ঘর সুতানুটি আজও কলকাতার ইতিহাস সম্পর্কে অনুসন্ধিৎসু ব্যক্তিদের কাছে এক পরম আগ্রহের বিষয়। বর্তমানে পুরনো কলকাতার স্মৃতিরক্ষার্থে কলকাতা মেট্রোর শোভাবাজার স্টেশনটির নামকরণ করা হয়েছে শোভাবাজার-সুতানুটি।



Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours