কাজল ভট্টাচার্য, প্রবীণ বিশ্লেষকঃ 'একচোখামি' ভালো না এমন একচোখামি। কিভাবেই বা কিছু মহিলা এমন স্পর্ধা দেখান? পুরুষকে কাঠগড়ায় চাপাতে পারলেই, তোলেন তৃপ্তির ঢেঁকুর। ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে তো যেন পোয়া বারো। ঝাঁপিয়ে পড়েন পুরুষ বিরোধিতায়। আর সেই সঙ্গে মেয়েদের সতীলক্ষ্মী প্রমাণের আজগুবি চেষ্টা। শেষপাতে, দুফোঁটা চোখের জল নিবেদন ধর্ষিতার উদ্দেশ্যে।
'ধর্ষন ও খুন'
মনে পড়ে, বর্ধমান স্টেশনে এক শুক্রবার কাকভোরে নৃশংস ভাবে ধর্ষিতা হয়েছিলেন এক অসহায় বৃদ্ধা। সেই বৃদ্ধা ধর্ষণের পাশাপাশি সেদিন কাগজে, আরও এক ঘটনার খবর ছিল।
হিন্দমোটরে খুন হয়ে গিয়েছিলেন এক স্বামী। প্রেমিকের মদতে, স্বামীকে খুন করেছিলেন স্ত্রী। কারণ সেই পরকীয়া। প্রেমিকের সঙ্গে অবাধ যৌনকর্মের রাস্তা কন্টকহীন করা। ওই ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন নারীবাদিরা।
কেন? দুটি ঘটনার মূলেই তো বিকৃত যৌন মানসিকতা। প্রথমটিতে দায়ী পুরুষ। দ্বিতীয়টিতে মহিলা।
'উত্তেজনায় ইন্ধন'
ধর্ষনের পাশবিক অত্যাচার সহ্য করতে হয় মেয়েদের। শুধু শারীরিক না, মানসিকও। সুতরাং সাবধান হওয়ার তাগিদ থাকার কথা মহিলাদেরই। ধর্ষনের ঘটনা যতক্ষন না ঘটছে ততক্ষণ লম্পট পুরুষটিও দেবতা।
যৌন উত্তেজনাও আবেগ। অতিভদ্রজনের কথা বাদ দিলাম। কম ভদ্রজনেরাও অহরহ ধর্ষণ করেন প্রকাশ্যেই। আর সে কথা জানেন রাস্তাঘাটে বেরনো মহিলারা। তবে যেহেতু তাতে সরাসরি শারীরিক অত্যাচার হচ্ছে না, তাই সেই ধর্ষণে আপত্তি নেই বলে মনে করছেন নাকি?
চোখ দিয়ে গিলছে? গিলুক। আরও একটু নামুক ডিপ-কাট। ক্লিভেজের প্রদর্শন হোক আরও উদার। ব্যাক লেসে পিঠ, অফ শোলডারে কাঁধ হোক উন্মুক্ত। প্রদর্শন মৃগনাভির। কাল যা ছিল অন্তর্বাস, আজ তার অনেকটাই বহির্বাস। উন্মুক্ত কাঁধে লাগুক ফুরফুরে হাওয়া। ছেঁড়া জিনসের আড়াল দিয়ে বেরিয়ে আসুক শরীর। লো ওয়েস্ট ট্রাউজার। উঁকি মারে প্যান্টিস। নারীশরীর মানেই পুরুষের কাছে লোভনীয়, উপাদেয়। বেটা পুরুষ দেখুক আর জ্বলুক। লুচির মতো ফুলুক।
এ পর্যন্ত মেয়েরা সুরক্ষিত। বিপদ কামোত্তেজনার লুচিটি ফাটলেই।
আরও বিপদ যে মেয়েটি ওই সব অতি আধুনিকতার কেতা দেখিয়ে, পুরুষটিকে এতক্ষণ তাঁতিয়ে দিয়ে গেল, সে কিন্তু এক সময় হাওয়া। কিন্তু পুরুষটির লাম্পট্য ততক্ষণে মাথা চাগাড় দিয়েছে। এরপর শুধুই সুযোগের সন্ধান। আর সেই মতো ঝাঁপিয়ে পড়া। উত্তেজনায় ইন্ধন জুগিয়ে গেল একজন, ধর্ষিতা হলো আর একজন। এমনটাও ঘটে।
'দোষ কার'
ধর্ষনের দায় অবশ্যই পুরুষের। কিন্তু উত্তেজনা ছড়ানোর দায়ে সেই উগ্র আধুনিকাকেও দায়ী করা হবে না কেন? লম্পট পুরুষ আর আধানগ্ন নারীর দায় পোয়াতে হতে পারে এক সম্পূর্ণ নিরীহ নারীকে। আর এ ধরনের লাম্পট্য বেপরোয়া হলেই, ঘটে যায় বৃদ্ধা
ধর্ষণের মতো বর্বর ঘটনা।
ধর্ষনে মহিলাদের ভূমিকার কথা উঠলেই, রে রে করে তেড়ে আসেন নারীবাদিরা। প্রশ্ন তোলেন- এবার থেকে পুরুষদের মত নিয়ে মেয়েরা সাজপোশাক করবে নাকি? বর্ধমানের বৃদ্ধা ধর্ষণের ঘটনার মতো আরও হাজার গণ্ডা ঘটনার দৃষ্টান্ত টেনে তাঁরা পাল্টা যুক্তি ছুঁড়ে দেন- সাজ-পোশাকের জন্যই ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে, এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না।
নব্যকেতার এই নারীবাদিরা, মেয়েদের খোলামেলা পোশাক পড়াকে দুহাত তুলে সমর্থন জানান। তাঁরা ভুলে যান, কামাগ্নি উসকে দিতে দুটি জিনিসই কাজ করে। প্রথমত, লম্পট পুরুষের বিকৃত মানসিকতা। দ্বিতীয়ত, মেয়েদের শরীর। আর সেই শরীরের কিছু সুনির্দিষ্ট অঙ্গ প্রত্যঙ্গের প্রদর্শন, পুরুষের কামাগ্নিতে ঘৃতাহুতি করে সর্বনাশ ডেকে আনে।
বিকৃতমনস্ক পুরুষের কামোত্তেজনা রোখে কার সাধ্য? এবার একটূ ভেবে দেখুন তো, ধর্ষণের প্রবণতা উসকে দিতে নারীবাদিদের সমর্থন কোনও ভাবে অনুঘোটকের কাজ করে কিনা?
'দ্বিচারিতা'
বর্ধমানের বৃদ্ধা ধর্ষণের ঘটনার(সেপ্টেম্বর 14,2018) প্রতিবাদে নারীবাদিদের ক্ষোভে ফেটে পড়াকে স্বাগত। কিন্তু একই দিনে হিন্দমোটরে স্ত্রীর চক্রান্তে স্বামীর খুন হয়ে যাওয়ার ঘটনায় নারীবাদিদের নীরবতাও ঘৃণ্য। গত বছরই আরেক নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটেছিল। বারাসতের মনুয়া হত্যাকাণ্ড(মে 03, 2017)। খুনের সময় স্বামীর শেষ আর্তনাদ শুনতে চেয়েছিলেন স্ত্রী। এর চেয়েও নৃশংস, বিকৃত মানসিকতার ঘটনা আর কি হতে পারে?
নারী আন্দোলনের ধ্বজা তুলে এই আধুনিকারা
আরেকটি মারাত্নক কাজও করে চলেছেন, সমাজের লিঙ্গ বিভাজন। মেয়েদের অবলা, আর পুরুষদের ধর্ষক রূপে খাড়া করা। স্ত্রীর যৌনতার স্বাদ বদলের লালসা। তাই প্রেমিকের মদতে স্ত্রী খুন করায় স্বামীকে। তখন নারীবাদিরা দোষী স্ত্রীর শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হন না কেন?
'সর্বনাশের ইঙ্গিত'
নারীবাদিদের এই প্রশ্রয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এক শ্রেনীর মহিলা। আইনের চোখেও মেয়েরা 'প্রিভিলেজড'। কোনরকম আবেগের ধার ধারেন না এই মহিলারা। পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি, সম্পর্ক ভাঙা তাঁদের কাছে জলভাত। মেয়েদের এই অনাচারে পুরুষমনে জমছে ক্ষোভ। সন্দেহ জমছে নারী পুরুষ সম্পর্কের মধ্যে। ভাঙনের লক্ষণ সর্বত্র। এক বিপজ্জনক সময়ের মধ্য দিয়ে চলেছি আমরা।
চলেছে গোটা সমাজ।
সবার অলক্ষ্যে নারী পুরুষ সম্পর্কে ঘটে চলেছে বিভাজন।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours