জীবন রায়, প্রাক্তন সাংসদ, রাজ্যসভাঃ আত্মসুদ্ধি, বিদ্রোহ এবং বিপ্লবী সত্বার সমন্বয়কেই বুঝতে হবে প্রয়োগতত্ব কিংবা নেতৃত্বঃ যাকে লেনিনবাদ বলে জানি।
মেনে চলি; এখনো এই চরম বিপদে যারা টিকে আছেন এবং মধ্য ও নিচের তলায় জীবনের ঝুকি নিয়ে কাজ করছেন – মানতে হবে ব্যক্তিগত এবং সাংগঠন, সিমীত হলেও এখনো 'বিদ্রোহী' এবং 'বিপ্লবী'।আরো মানতে হবে উভয় সত্বাই, ইতিহাসের ধারাবাহিকতা ছেদ হয়ে যাওয়ার কারনে অনেকাংশেই সচেতনতার তুল্যমূল্যে স্বতস্ফুর্ত। এই স্বতস্ফুর্ততার কারন অনুসন্ধান করলেই দেখা যাবেঃ ধারাবাহিকতা ছিন্ন হওয়ার কারনে মার্ক্সবাদের মুল দুটি বিক্ষা থেকে আমরা নেতা ও কর্মীরা অনেকটাই সরে এসেছি। পরিনামে রুপান্তরকামীতাকে চলমান স্থবীরতার অভিমুখে গড়িয়ে যাওয়ার প্রবনতায় শক্তি যুগিয়েছে।
নিজেকে খোজার প্রবৃত্তি যাকে আমরা একদিন আত্মসুদ্ধি বলে জেনেছিলাম – কালের যাত্রাকে তার নিজস্ব শ্রোতে ধরে রাখতে না পারায় - নেতা এবং সেখান থেকে কর্মীস্তরে এই অত্যাবস্যক গুন ক্ষয় পেতে থাকার, প্রবৃত্তি যেমণভাবে সাংগঠনিক স্তরে এবং সেখান থেকে কাঠামোতে; তারপর, যে কোন স্বৈরাচারী প্রবনতার মতোই, শেষ পর্য্যন্ত কর্মসূচীকে যে প্রভাবিত করেছে – সে কথা নিশ্চিত করে বলা যায়।
এই দুটি বিচ্যুতি এবং তার পরিনামকে যদি সমাজ বিজ্ঞানের চোখে বিশ্লেষন করা যায়, তবে অন্য একটা অমোঘ সত্য মেঘ ভেঙ্গে ঠিকরে বেরুবে। সুত্রটা এখানেঃ যখন মেনে চলা হয়, মার্ক্সসবাদ-লেনিনবাদ, উভয়ে মিলে এক অবিচ্ছেদ্দ্য অঙ্গ, তখন এটাও মানতে হবে - এক যায়গায় ছেদ দেখা দিলে, অন্যদিকটির আয়ত্বকরে ভাঙ্গন দেখা দেবেই।
যদি বিবেচনা করা হয়, নেতৃত্বগত ধারাবাহিকতা ক্ষুন্য হওয়ার কারণেই, লেনিনবাদী প্রয়োগ পদ্ধতির যতটুকু আমরা আয়ত্ব করেছিলাম, বুর্জোয়া গণতন্ত্রের সমাজতান্ত্রিক প্রবাহে যেমণ ভাবে গণতন্ত্রের অভিমুখ উন্মুক্ত হয়েছে, তেমনভাবে লেনিনবাদকে তার সৃজনমুখীনতায় বিকশিত করতে না পারার কারনেইঃ পূর্বার্জিত প্রয়োগ রীতিগুলির অনেকগুলি হারিয়ে গিয়ে, তবে এটাও মানতে হবে - লেনিনবাদের অন্য সুত্রগুলিও পরস্পরের মধ্যে সংগতি হারাচ্ছে।
লেনিনবাদের সুত্রগুলি, পরস্পরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পরিনতিকে - যারা শ্রেফ্ আন্দোলনের অভিমুখ হারিয়ে যাওয়ার মধ্যে সিমীত রাখেন তারা নিজেদের ফিরে আসার পথটিকেও বন্ধ করে দেন।অভিমুখ হারিয়ে যাওয়াটা শেষ পরিনতি। কোন রুপান্তরকামী আন্দোলন সেই পরিনতিতে পৌছুবে, আরো অনেকগুলি বিপদজন বিচ্যুতির পাহাড় নির্মানের পরেই।
প্রথমতঃ লেনিনবাদী সুত্রগুলির পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতাকে নেতা-কর্মী যেমনভাবে স্বাভাবিক নিয়ম হিসেবে মানতে থাকেন তেমনভাবেই তারা স্বতস্ফুর্ততার সাধারন নিয়মেই প্রথমে নিজে ‘আত্মবিক্ষা’ পরে ‘সাংগঠনিক আত্মবিক্ষা’ থেকে ছিটকে যেতে থাকেন। সেখান থেকেই ‘রুপান্তরকামীতার’ গতিমুখ, স্থবীরতার অভিমুখের নিয়ন্ত্রনাধীন হয়ে পড়ে – মধ্যাকর্ষনের সাধারন নিয়ম অনুযায়ী।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours