Ladies refaree
সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজঃ গভীর প্রত্যয় ও আত্মশক্তির ইচ্ছের জোড়েই পৃথিবীর আলোক প্রদীপে যে আসা যায় তা ফের প্রমান করে দিলেন রেফরি জেজে। জীবনের কম বাধার হার্ডেল তাঁকে অতিক্রম করতে হয়নি। একেতে মহিলা তার উপর ধর্মীয় কড়া অনুশাসন। অন্যদিকে বর্ণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে সামাজিক জেহাদ তো গৃহযুদ্ধ ক্লান্ত মাতৃভূমি সোমালিয়া থেকে শৈশবেই বিদেশ পারাপার। তবু রবীন্দ্রনাথের সেই কথা ‘কেন নিজে নাহি লব চিনে সার্থকের পথ। কেন না ছুটাব তেজে সন্ধানের রথ।’ হয়তো মন দিকে অনুধাবন করেছিলেন জেজে। তাই তিনি আজ সারা বিশ্বের খেলার দুনিয়ায় হয়ে উঠতে পেরেছেন নয়নের মনি। তিনি ক্রীড়া ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে স্থান করে নিলেন ব্রিটেনের প্রথম হিজাব পরিহিত কৃষ্ণাঙ্গ মুসলিম রেফরি হিসেবে। জেজে হিসেবেই তিনি পৃথিবীর এক নতুন দৃষ্টান্ত। তার নাম জাওয়াহির রোবেল। যখন তাঁর বয়স দশ তখনই তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পালিয়ে চলে আসেন ব্রিটেনে। তাঁর মাতৃভূমি সোমালিয়া তখন অশান্ত গৃহযুদ্ধের কবলে। বর্তমানে থাকেন ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের কাছে। মাঠ অনুশাসনের ছাড়পত্র তিনি সহজে পাননি। পরিবারিক কড়া ধর্মীয় অনুশাসন ও ফিফার একদা হিজাবের প্রতি নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে তাঁর স্বপ্নটাই ভেঙ্গে যেতে বসেছিল। কিন্তু যাঁর কপালে রয়েছে রাজতিলক আঁকা তাঁর গতিরুদ্ধ করে কে? সমস্ত বাধা কাটিয়ে এলো সেই সন্ধিক্ষণ। ২০১৬ এক শীতস্নাত সকাল। উত্তর পশ্চিম লন্ডন থেকে বাসে চেপে সোজা চলে এলেন খেলার মাঠে। পুরুষদের ফুটবল ম্যাচে রেফরিংয়ের উদ্দেশ্যে। মাত্র বাইশ বছর বয়সে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার এই জেজে সেদিন যে পুরুষ ফুটবলকে অনুশাসন করলেন তাঁরই বাঁশির হুইসেলে। এক কৃষ্ণাঙ্গ মুসলিম প্রবাসী নারী হিজাবের অন্তরাল থেকে এক মাঠ ভর্তি মানুষের সামনে কি সাবলীল ভাবেই না নির্ধারণ করে দিচ্ছেন বাইশ পুরুষ খেলোয়ারের চুড়ান্ত গতিবিধি। এরপর এক মাঠ থেকে অন্য মাঠ। শুধুই এগিয়ে চলা। আসলে ফুটবল ইতিহাসের এক জেহাদী নাম যে জেজে।
Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours