সাদাবুক মাছরাঙা
ইংরাজি নাম - White-throated Kingfisher বা White-breasted Kingfisher=
বিজ্ঞান্সন্মত নাম - Halcyon smyrnensis
এর নাম থেকেই বোঝা যায় এদের বুকের রঙ সাদা। মাথা আর পেটের রঙ ঘন উজ্জ্বল বাদামী এবং ডানা জমকালো নীল রঙের। এদের ডানার দুপাশে গাঢ় খয়েরি দাগ থাকে। ঠোঁট ও পায়ের রঙ লাল। এরা সাধারণত পুকুরের পাশের নুয়ে পড়া ডালে পাতা-ঝোপের মাঝে বসে থাকে মাছ ধরার আশায়। তবে রেললাইন বা রাস্তার ধারের মাঠের মধ্যে থাকা ব্যাঙ, কাঁকড়া খাবার লোভে ইলেকট্রিক তারের খুঁটি বা গাছের উপর বসে থেকে সতর্ক নজরে শিকারের সন্ধান করে এরা। পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র এদের দেখতে পাওয়া যায়। সঙ্গীকে মন কেমন করা স্বরে একটানা ডাকতে থাকে, সাড়া না পাওয়া পর্যন্ত রেহাই নেই। এদের আমি মাছ ভাগ করে খেতে দেখেছি। অন্যান্য মাছরাঙাদের মতো এদের ঠোঁটও শক্তিশালী ও আকারে বড় হয়। গরমের শেষ এবং বর্ষার শুরুতে নদী বা পুকুরের পাড়ে লম্বা সমান্তরালভাবে গর্ত করে বাসা তৈরি করে এবং একসাথে পাঁচ ছটি করে ডিম পাড়ে। মাছ ছাড়াও এরা ব্যাঙ্গাচি, পোকা ও অন্যান্য ছোটো সরীসৃপ খেয়ে থাকে।
মাছরাঙাকে বলে মাছ চোর। আর এক্ষেত্রে চুরির শাস্তি মৃত্যু। তবে সহজ মরণ নয়। এদের মারার জন্য আমাদের মাছচাষিরা ফিশিং নেটের সাহায্য নিচ্ছে। পুকুরের মাঝে লম্বামম্বি বা আড়াআড়িভাবে এমনভাবে মাছ ধরার জাল বেঁধে রাখে যে জালে আটকে পরে ধীরে ধীরে পচে গলে মরতে হচ্ছে এদের। তাছাড়াও আছে পুকুর ভরাট করে বাড়ী বা কল কারখানা তৈরি। বেশী ফলনের লোভে মাঠের মধ্যে ব্যবহৃত যথেচ্ছ কীটনাশকের প্রভাবে এদের খাবারের অভাব হচ্ছে। এসবের কারণে ধীরে ধীরে খাবার এবং আবাসের অভাবে এদের সংখ্যা কমে আসছে দিন দিন। হয়তো একদিন এদের হারিয়ে ফেলব চিরদিনের মতো। তাই প্রশাসনকে দোষারোপ না করে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ করার দায়িত্ব নিতে হবে আমাদের সবাইকে।
x
Post A Comment:
0 comments so far,add yours