সোমনাথ রায়, প্রত্নগবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক, দুর্গাপুর:
একদিন এক সাধুবাবা সমুদ্রের তীরে ইতস্তত পরিভ্রমণ করছিলেন। সমুদ্র কিনারে একটি বাচ্চাকে ক্রন্দনরত দেখে তিনি বাচ্চাটির নিকটে অগ্রসর হয়ে স্নেহসুধা ঢালা কন্ঠে শুধোলেন, “বাছা, কী কারণে তুমি এভাবে কাঁদছ?”
বাচ্চাটি অশ্রুসিক্ত মুখটি তুলে তার হস্তগত পেয়ালাটি দেখিয়ে কাঁদকাঁদ স্বরে বলল, “আমার হাতের এই পেয়ালায় আমি এই সমুদ্রটাকে পুরে ফেলতে চাই কিন্তু এটাতে আঁটছে না”।
এই নিদারুণ বাক্য শুনে সন্ত আশ্চর্যান্বিত হয়ে ক্রন্দন করতে লাগলেন।
তাই দেখে বাচ্চাটি হতভম্ব হয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, “তুমি কাঁদছ কেন?”
সন্ত উত্তর দিলেন, “আমার পেয়ালাতেও সমুদ্র আঁটছে না”।
বাচ্চাটি আবার শুধল, “কিন্তু তোমার পেয়ালা কোথায়?”
সাধুবাবা তাকে বললেন, “বাছা, তুমি এই সমুদ্দুরকে একটা ছোট পেয়ালায় ভরে ফেলতে চাইছ আর আমি চাইছি এই সমগ্র বিশ্বের সব তথ্য আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে আবদ্ধ করতে”। আজ, তোমাকে দেখার পর, আমি উপলব্ধি করলাম যে একটা সমুদ্রকে একটা পেয়ালায় ভরা যায় না”।
এই কথা শুনে বাচ্ছাটি তার পেয়ালাটিকে সমুদ্রের গর্ভে নিক্ষেপ করে বললে, “আমার পেয়ালায় যদি সমুদ্রের জায়গা না হয় তাহলে সমুদ্রে নিশ্চয়ই আমার পেয়ালার জায়গা হয়ে যাবে”।
একথা শুনে সাধুবাবা বাচ্ছাটির পদযুগলে ভূলন্ঠিত হয়ে সাশ্রু নয়নে বললেন, “বাছা, কী মহান বাণী তুমি উচ্চারণ করলে!”
সন্ত আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, “ভগবান, তোমার বিশ্ব চরাচরের সব জ্ঞান আমি আত্মস্থ করতে সক্ষম হব না কিন্তু আপনার মধ্যে আমি বিলীন হয়ে গিয়ে আপনার সঙ্গে একাত্ম হতে পারব”।
(www.theoffnews.com moral story)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours