সাজিয়া আক্তার, রেসিডেন্সিয়াল এডিটর (বাংলাদেশ), দ্য অফনিউজ:
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন- কথায় কথায় রেগে যান। ছোটখাটো বিষয়ে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পারেন না। অনেকেই আবার রেগে গেলে ভাঙচুর করেন, উচ্চস্বরে চিৎকার করেন, এমনকি গায়ে হাতও তুলে ফেলেন। অতিরিক্ত রাগের প্রভাব পড়তে পারে ব্যক্তিজীবন, সামাজিক ও পেশাগত জীবনে। দেখা দিতে পারে উচ্চ রক্তচাপ, খিটখিটে মেজাজের মতো সমস্যাও। এই রেগে যাওয়াটা স্বাভাবিক মনে হলেও এটি অনেক ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক। তাই কথায় কথায় রেগে যাওয়াটা কোনও ভালো লক্ষণ নয়। এটি পরে বড় ধরনের সমস্যা ডেকে আনতে পারে।
তাই কথায় কথায় রেগে যাওয়া যাবে না। মাথা ঠাণ্ডা রেখে রাখ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। চলুন জেনে নিই সেগুলো-
১. দ্রুত স্থান ত্যাগ করুন
হঠাৎ বেশি রাগ করে ফেললে সেই সময় ওই স্থান দ্রুত ত্যাগ করার চেষ্টা করতে হবে। যে মানুষটির ওপর আপনার রাগ তার কাছ থেকে কিছু সময়ের জন্য দূরে থাকলে কিছুক্ষণ পর রাগ নিজে থেকেই কমে আসতে পারে। নিজেকে পরাজিত মনে করবেন না। বরং ভাবুন আপনি রাগকে পরাজিত করে নিজে জয়ী হয়েছেন। স্থান ত্যাগ করা যদি সম্ভব না হয়, অবস্থান পরিবর্তন করুন। যেমন আপনি দাঁড়িয়ে থাকলে বসে পড়ুন।
২. লিখে রাখুন
কোন পরিস্থিতিতে আপনি কেন রাগ করছেন বা কেমন প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন, কিভাবে আপনি অনুভূতিকে প্রকাশ করছেন সেগুলো একটি খাতায় লিখে রাখুন। কিভাবে আপনি আপনার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান সেটিও লিখে ফেলুন এবং বারবার নোটটি পড়ুন। এই পদ্ধতিটি আপনাকে আপনার অনুভূতি প্রকাশ করার সুযোগ দেবে, পাশাপাশি নিজের রাগকে নিজেই নিয়ন্ত্রণ করার শক্তি যোগাবে।
৩. উল্টো গণনা শুরু করুন
বহুকাল ধরে প্রচলিত এই প্রক্রিয়াটি রাগ নিয়ন্ত্রণে সত্যিই ভাল কাজ করে। মনে হচ্ছে কোন ঘটনায় আপনি বিরক্ত হচ্ছেন, ভেতরে ভেতরে রেগে যাচ্ছেন তখন পিছন দিক থেকে ১০০ গুনতে শুরু করুন। এটি সাময়িকভাবে আপনার মনোযোগকে সরিয়ে দেবে এবং কোনও নেতিবাচক চিন্তা করার আগে বেশ কিছুটা সময় পাওয়া যাবে রাগকে নিয়ন্ত্রণে আনার।
৪. কারো সঙ্গে কথা বলুন
যদি রাগ অপ্রকাশিত থেকে যায় তবে প্রিয় মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। কেমন অনুভব করছেন সে সম্পর্কে বিশ্বস্ত কারও সঙ্গে যেমন বাবা-মা প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে কথা বললে মনের ভার কমে যেতে পারে। তবে এমন কাউকে বলা উচিত নয় যিনি আপনার অনুভূতিকে সম্মান করবেন না। এমন কাউকে যদি খুঁজে না পান এবং পরিস্থিতি যদি আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে তবে পেশাদার অনলাইন না অফলাইন কাউন্সিলিং করেন এমন কারো শরণাপন্ন হতে পারেন।
৫. নিঃশ্বাসের ব্যায়াম
তাৎক্ষণিক রাগ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিঃশ্বাসের ব্যায়াম বেশ পুরনো ও কার্যকরী পদ্ধতি। রাগ থেকে মনটাকে সরিয়ে নিশ্বাসের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। বুক ভরে গভীর নিশ্বাস নিন, সেটাকে কিছুক্ষণ ধরে রাখুন, কিছুক্ষণ পর বাতাস ছেড়ে দিন। এটি রাগ কমাতে সহায়তা করে।
৬. বলার আগে সময় নিন
মুহূর্তের উত্তাপে এমন কিছু বলা উচিত নয় যার জন্য পরবর্তীতে অনুশোচনা করতে হয়। রাগের মুহূর্তে আমরা এমন সব কথা বলে ফেলি যা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তোলে। কিছু বলার আগে নিজে চিন্তা করে নিন কয়েক মুহূর্ত। ভাবুন, আপনার এই কথা বা আচরণে আরেকজনের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে।
৭. ক্ষমা করতে শিখুন
রাগকে নিজের মধ্যে পুষে না রেখে, ক্ষমা করতে শিখুন। ক্ষমা একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। আপনি যদি রাগ বা অন্যান্য নেতিবাচক অনুভূতিগুলোকে নিজের মধ্যে লালন করতে থাকেন তবে নিজের ভেতরের তিক্ততা আপনাকে আরও গ্রাস করবে।
(www.theoffnews.com - angry Bangladesh)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours