দেবিকা ভট্টাচার্য, লেখিকা ও লেকচারার, চন্দননগর, হুগলি:

১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের দুর্ভিক্ষ নিয়ে তৈরি পাঁচ পাঁচটি পুরস্কার প্রাপ্ত (জাতীয় পুরস্কার - সেরা ছবি; জাতীয় পুরস্কার - সেরা পরিচালনা, মৃণাল সেন; জাতীয় পুরস্কার - সেরা স্ক্রীন প্লে, মৃণাল সেন; জাতীয় পুরস্কার - সেরা সম্পাদনা, গঙ্গাধর নস্কর; বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসব - রুপোর ভালুক) ছবি 'আকালের সন্ধানে' ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পায়। পরিচালক শ্রী মৃণাল সেন ছবির কুশীলবদের নিয়ে তিন মাস ছিলেন চলচ্চিত্রের 'হাতুই' গ্রাম বাস্তবে হুগলী জেলার সোমড়া বাজারের সুখড়িয়া গ্রামের বিশ্বাস বাড়িতে। ডি কে ফিল্মস নির্মিত এই ছবির সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন সলিল চৌধুরী। ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়, স্মিতা পাটিল, দীপঙ্কর দে, জোছন দস্তিদার, মৃণাল সেনের স্ত্রী গীতা সেন, শ্রীলা মজুমদার, এই গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। 

সুখড়িয়ার বিশ্বাস বাড়ি বা 'রাধাকুঞ্জ'র অবস্থা এখন ভগ্নপ্রায় বললে কম বলা হবে। তিন দিক ঘেরা বিরাট দোতলা বাড়ির অনেকটাই বিধ্বস্ত। নীচের যে ঘরগুলিতে এক সময় খাজনা জমা নেওয়া হতো বা কর্মচারীরা থাকত, সেগুলি অনেকদিন পর্যন্ত ভাড়াটিয়ারা বাসযোগ্য করে রেখেছিল। এখন দরজা, জানালা, থাম, ছাদ সহ গোটা বাড়ি জীর্ণ।

১৪ই মে, শনিবার, ২০২২ পরিচালক মৃণাল সেনের জন্মশতবার্ষিকীতে বলাগড় বিজয়কৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়ের জাতীয় সেবা প্রকল্প (ইউনিট-২) এবং 'সোমড়া প্রবাহ'র যৌথ উদ্যোগে সুখড়িয়ার বিশ্বাস বাড়িতে প্রয়াত পরিচালকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের ব্যবস্থা করা হয়। মূল উদ্যোক্তা মহাবিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষক তথা জাতীয় সেবা প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তিনি আঞ্চলিক ইতিহাসের চর্চাও করেন। উপস্থিত ছিলেন চিত্র পরিচালক শীলা দত্ত, মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, নাট্যকর্মী বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্থানীয় কিছু মানুষ। সেখানে একটি স্মৃতিফলক স্থাপনের দাবিও ওঠে।

শুধু ফলক স্থাপন নয় বাড়িটি সংরক্ষণের ব্যবস্থাও দরকার। প্রতিবার দুর্গাপুজোর আগে একটু পরিষ্কার করে পুজোর আয়োজন করা হয়। অন্যান্য বারের তুলনায় গতবার পুজো বাড়িতে প্রাণের লক্ষণ দেখা দিয়েছিল বেশ।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্য এই বাড়ির পাশে অবস্থিত আনন্দময়ী কালীমন্দির ঐতিহ্যবাহী। শোনা যায়, গঙ্গা-নদীপথে যাওয়ার সময় রাণী রাসমণি এখানকার মন্দির দর্শন করে অনুপ্রাণিত হয়ে দক্ষিণেশ্বরের মন্দির স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন।

হুগলি জেলার এই গ্রাম দর্শনীয় স্থান হিসেবে ঐতিহ্যবাহী।

হুগলি জেলার এই গ্রাম দর্শনীয় স্থান হিসেবে ঐতিহ্যবাহী। গল্পের ছলে বিশ্বাসবাড়ির ইতিহাসের সঙ্গে সঙ্গে সোমড়ার অন্যান্য স্থান গুলিতে ভ্রমণ কয়েক দফায় প্রকাশের ইচ্ছা রইল। (ক্রমশঃ)

(ছবি সৌজন্যে প্রতিবেদক স্বয়ং)

(www.theoffnews.com Somra bazar Hooghly)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours