কৃষ্ণা গুহ রায়, লেখিকা ও সমাজকর্মী, কলকাতা:

আমারই এক পরিচিতা মহিলার পুত্র সন্তান হাড়ের একটা বিশেষ রোগের কারণে জন্ম থেকেই বামন। সেই ছেলেটি যখন বড় হল আমরা যাকে বলি স্বাভাবিক আকৃতি সেসব মানুষের কারুর সহানুভূতি, কারুর আবার উপহাসের পাত্র হয়ে বড় হয়ে উঠতে লাগল। পরবর্তীকালে ছেলেটি যখন বড় হয়ে প্রতিষ্ঠিত হল অন্য কারুর বিপদে পাশে দাড়াবার  প্রসঙ্গে কথা উঠলে ছেলেটি বলল, আমি কারুর জন্য কিছু করতে পারব না। সমাজের মানুষেরা আমাকে উপহাস করেছে। 

সমাজ বলতে আমরা বুঝি গোষ্ঠীবদ্ধ জীবন। কতগুলো মানুষ একসঙ্গে দল বেঁধে নদীর ধারে জনবসতি গড়ে তুলত। যদি আমরা ইতিহাস ঘাঁটি তবে দেখতে পাব মানুষদের যাযাবর জীবন থেকে সুশৃংখল করবার জন্য কতগুলো নিয়ম তৈরি করা হল। আর নিয়ম বহির্ভূত কাজ যারা করত সমাজের কর্তাব্যক্তিরা তাদের শান্তি দিত। 

কিন্তু প্রকৃতির নিয়মে সব মানুষ একরকম হবে এটা ভাবাই ভুল। গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যায় আমরাই উক্ত ছেলেটিকে স্বার্থপর করে তুলেছি। সমাজে এরকম অনেকেই আছেন যারা শারীরিক, মানসিকভাবে আর পাঁচ জনের মতন নয়, তৃতীয় লিঙ্গ বা সমকামী তাদেরকে নিয়ে খিল্লি উড়িয়ে  আমরাও অসুস্থ মানসিকতার পরিচয় দিই। 

সৃষ্টি রহস্যের অতল খোঁজা আর খড়ের গাদায় সূঁচ খোঁজা একই। সভ‍্য সমাজ নিয়ম করেছিল মানুষকে সুস্থভাবে বাঁচার জন্য। প্রকৃতির নিয়মে ব্যতিক্রমী মানুষদের উপহাস করার জন্য নয়। যারা এরকম অমানবিক আচরণ করেন তারাও তাহলে মানসিক দিক থেকে অপ্রকৃতস্থ।  চিন্তায়, মননে, বোধে মানবিক হয়ে উঠলে ওরাও সমাজে আলোক বর্তিকা হয়ে দৃষ্টান্ত মূলক কাজের অংশীদার হয়ে উঠবে।

(www.theoffnews.com - disabled man humanity)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours