সাজিয়া আক্তার, রেসিডেন্সিয়াল এডিটর (বাংলাদেশ), দ্য অফনিউজ:
সূর্যের শরীর ঝলসে দেওয়া তাপে জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যাওয়া আর সাগর, মহাসাগরের সবটুকু পানি উবে যাওয়ার আগেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল থেকে ফুরিয়ে যাবে অক্সিজেন। ছিঁড়ে ফালাফালা হয়ে যাবে পৃথিবীর চারপাশের ওজোন গ্যাসের চাদর। সব ধরনের সৌর বিকিরণ ও মহাজাগতিক রশ্মির আক্রমণ থেকে যা বাঁচিয়ে রাখে আমাদের।
সৌর বিকিরণ আর মহাজাগতিক রশ্মি ভেঙে চুরমার করে দেবে এই নীলাভ গ্রহের বায়ুমণ্ডলকে। কার্বন ডাই-অক্সাইডের মতো যে গ্রিনহাউজ গ্যাসের বাতাসে নির্গমনের মাত্রা বৃদ্ধিতে আমরা এখন উদ্বিগ্ন, সেই গ্যাসই তখন আর থাকবে না বায়ুমণ্ডলে। ফলে, অক্সিজেন নির্ভর প্রাণের পক্ষে টিকে থাকা যেমন সম্ভব হবে না, তেমনই অসম্ভব হয়ে পড়বে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষও।
২৪০ কোটি বছরেরও আগে পৃথিবীর পরিস্থিতি যে রকম ছিল আবার ফিরে যাবে সেই অবস্থায়। তখন পৃথিবী ভরে যাবে অত্যন্ত বিষাক্ত মিথেন গ্যাসে। বিভিন্ন তাত্ত্বিক মডেল খতিয়ে দেখে করা সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই অশনিসংকেত দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার জিওসায়েন্স’ এ।
গবেষকরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের ঔজ্জ্বল্যের বাড়া-কমার প্রবণতা এবং তার প্রেক্ষিতে বায়ুমণ্ডলে কিভাবে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ কমে-বাড়ে, সেই সবকিছুর যাবতীয় তথ্যও বিশ্লেষণ করেছেন।
ভিন গ্রহে কী প্রকৃতির প্রাণের খোঁজ মিলতে পারে, সেই প্রাণ বেঁচে থাকে কোন কোন প্রাকৃতিক উপাদানের উপর নির্ভর করে তা জানার লক্ষ্যে নাসার একটি বিশেষ প্রকল্প ‘নেক্সাস ফর এক্সোপ্ল্যানেট সিস্টেম সায়েন্স’র অংশ এই গবেষণাটি।
এই গবেষণার দুই মূল গবেষক আমেরিকার জর্জিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির ভূবিজ্ঞানী অধ্যাপক ক্রিস রেনহার্ড ও জাপানের তোহো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানী অধ্যাপক কাজুমি ওজাকি দাবি করেছেন, এমন পরিস্থিতি আসবে সূর্যের তাপে পৃথিবী জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যাওয়ার আগেই। সেই সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভরে যাবে শুধুই বিষাক্ত মিথেন গ্যাসে। যে গ্যাসে নির্ভর করে বাঁচতে পারে বিশেষ কয়েকটি অণুজীব। তখন মানুষ, অক্সিজেনের উপর নির্ভরশীল কোনও প্রাণী বা সালোকসংশ্লেষ নির্ভর কোনও উদ্ভিদই আর টিকে থাকতে পারবে না পৃথিবীতে। ২৪০ কোটি বছরেরও আগে এমনই অবস্থা ছিল পৃথিবীর। এই গ্রহ আবার সেই পরিবেশে ফিরে যাবে। সেটা আর ১০০ থেকে ২০০ কোটি বছরের মধ্যেই হতে পারে।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, গবেষণার এই ফলাফল বুঝিয়ে দিচ্ছে, মিথেন বা অন্য কোনও গ্যাস নির্ভর প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে ভিনগ্রহে। এ বার সেই ধরনের প্রাণের খোঁজার সময় এসে গেছে।
(www.theoffnews.com - oxigenless earth)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours