বন উজাড় ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অ্যামাজনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যতটা না কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করেছে তার চেয়ে অনেক বেশি নিঃসরণ করছে, এমনটাই উঠে এসেছে নতুন গবেষণায়।
অ্যামাজনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে ব্যাপক হারে গাছ উজাড় হচ্ছে এবং আগুনের পরিমাণ বাড়ছে। সমীক্ষায় বলা হয়, গত ৪০ বছরে পূর্ব অ্যামাজনে অনেক বেশি বন উজাড় হয়েছে, পশ্চিমের চাইতে এখানে উষ্ণতা ও আর্দ্রতা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত বছরে ব্রাজিলের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার গবেষকরা অ্যামাজনের চারটি অঞ্চলে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড ও কার্বন মনোক্সাইডের তথ্য সংগ্রহ করেন। তারা দেখেন, এই চারটি সাইট সম্মিলিতভাবে প্রতিবছর ৪১ কোটি মেট্রিক টন কার্বন নিঃসরণ করে। এই অঞ্চলগুলো প্রতিবছর শোষণ করে ১২ কোটি মেট্রিক টন কার্বন- অর্থাৎ অ্যামাজন বাড়তি নির্গমন করে ২৯ কোটি মেট্রিক টন কার্বন। অপর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০৫০ সাল বা তার পূর্বে পুরো অ্যামাজন তার শোষণ ক্ষমতার চাইতেও বেশি কার্বন নির্গমন করবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বন উজাড়, জমি পোড়ানো ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে এই অঞ্চলে কার্বনের ভারসাম্য এবং বাস্তুতন্ত্রের ওপর স্থায়ী ও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিশ্বের বৃহত্তম চিরহরিৎ বনাঞ্চল অ্যামাজন বৈশ্বিক তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক রাখতে বৃহত্তর ভূমিকা রাখে। অ্যামাজন বায়ুমণ্ডল হতে প্রচুর পরিমাণে তাপ শোষণ করে পৃথিবীকে শীতল করতে সহায়তা করে। এটিকে পৃথিবীর ‘প্রাকৃতিক শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র’ বলেন বিজ্ঞানীরা।
তবে বিগত ৪০-৫০ বছর মানবসৃষ্ট কারণে অ্যামাজন তার ১৭ শতাংশ বন হারিয়েছে। এর বেশিরভাগ এখন কৃষি কাজ ও পশুপাখি পালনের জমিতে পরিণত হয়েছে। ফলস্বরুপ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাষ্পীভবন হ্রাস পেয়ে কম বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ২০১৯ সালে অ্যামাজনের আগুন রেকর্ড ছাড়িয়েছে, প্রতি মিনিটে প্রায় দেড়টি ফুটবল মাঠের সমান বনাঞ্চল ধ্বংস করা হচ্ছিল।
(www.theoffnews.com - Amazon forest environment)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours