ইরানী বিশ্বাস, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, নাট্যকার ও পরিচালক, বাংলাদেশ:

বাংলা সন বাঙালির একটি নিজস্ব সন বা সাল। যতই দিন আসছে বাংলা সনের গৌরব ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলা সন বা তারিখ বঙ্গাব্দ হিসেবে গণনা করা হয় কিংবা পরবর্তী কোন সময়ে গণনা আরম্ভ করার প্রারম্ভিক সময় ৫৯৩-৯৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে, অর্থাৎ ঐ বছরকে বাংলা সনের আরম্ভ বর্ষ বা ভিত্তি বর্ষ বলা চলে। তবে বাংলা সনের প্রবর্তক বা প্রচলন সম্পর্কে নানা মনীষীর নানা রকম ব্যাখ্যা রয়েছে। কারও কারও মতানুযায়ী রাজা, ভুস্বামী কিংবা ধনাঢ্য মহাজন গোষ্ঠী বাংলা সন প্রবর্তন করেছেন। বেশ কয়েকজন পন্ডিতের মতে গৌড়রাজা শশাঙ্ক ৫৯৪ খ্রিস্টাব্দের ১২ এপ্রিল গৌড় বঙ্গে স্বাধীন ভাবে রাজত্ব আরম্ভ করেন। অর্থাৎ তার রাজত্বকালেই এই অব্দের গণনা শুরু হয়। আবার অনেক পন্ডিত মনে করেন বাংলা সনের প্রচলন ও উদ্ভাবন হয় ১৫৫৬ -১৬০৫ শতকে মুঘল সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে তারই নির্দেশে। তাই আকবরকে বাংলা সনের প্রবর্তক বলা হয়। 

বলা হয়ে থাকে, মুঘল আমলে ফসল দিয়ে কৃষকের খাজনা পরিশোধ করতে হতো। যে চন্দ্র মাসে রাজস্ব নির্ধারণ করা হতো, ঋতু পরিবর্তনের কারণে সেই চন্দ্র মাসে সবসময় রাজস্ব আদায় সম্ভব হতো না। কেন না ঋতুটি সরে যাওয়ার কারণে দেখা যেত ঐ সময় কৃষকের কোন ফসল ঘরে ওঠেনি। তখন কৃষকের খাজনা আদায় করা কঠিন হয়ে উঠত। ফসল দিয়ে খাজনা পরিশোধ করার রেওয়াজ ছিল বলে এটা ছিল বড় রকমের একটা সমস্যা। 

কৃষকরা যখন শস্য কেটে ঘরে তোলার আয়োজন করতেন, সে সময় রাজকর্মচারীরা খাজনা আদায় করে নিতেন। কিন্তু মাঝে মধ্যে এই খাজনা আদায় করতে রাজ কর্মচারীদের বেশ কিছুটা সমস্যায়ও পড়তে হত। যেহেতু হিজরি সাল সৌর বছর থেকে এগারো দিন এগিয়ে যায়, তাই অনেক সময় দেখা যেত কৃষকরা সে সময় শস্য কেটে ঘরে তুলতে পারেনি। আকবরের এই নতুন সন অনুসারে তখন এ অঞ্চলে ফসল তোলা ও খাজনা আদায়ের নিয়ম শুরু হয়। ধারণা করা হয় জমিতে ফসল বোনা এবং ফসল তোলার সাথে বাংলা সনের উদ্ভব হয়েছে কৃষকের ফসল তোলাকে কেন্দ্র করে। আঠারো শতকের দ্বিতীয় ভাগে ইংরেজি সন চালু হওয়া ফসলী সন ‘বাংলা সন’ নামে পরিচিতি লাভ করে। উনিশ শতকে এর নাম হয় ‘বঙ্গাব্দ’।

বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম মাস। বলা হয়ে থাকে, বৈশাখ নাম হয়েছে বিশাখা নক্ষত্রের নামানুসারে, বাংলা বর্ষের প্রথম দিন অর্থাৎ পুরো একটি বছরের অতীত ফেলে যেদিনটি আসে সেটি নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ নামে পরিচিত। এই নববর্ষ বা বৈশাখী উৎসব এখন সাধারণ বাঙালির বাঙালিত্বের অনুষ্ঠান বলা চলে। প্রতিবছর ঋতু বদলের পালায় আমাদের দরজায় কড়া নাড়ে বৈশাখ। পুরো একটি বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পিছনে ফেলে, দুঃখ-কষ্ট ধুয়ে-মুছে আসে বছরের নতুন দিন। বৈশাখের প্রথম দিনটিতে তাই সকলের মন খুশিতে ভরে উঠে। আমরা সকলেই নানা রকম আনন্দ অনুষ্ঠানে মেতে উঠি। বিশ্বের প্রত্যেক জাতি কিংবা ভাষাভাষী মানুষদেরও নিজ নিজ বছরের পয়লা দিনটিকে বরণ করে নেওয়ার রেওয়াজ আছে। যেমন ইংরেজদের নিউ ইয়ার, প্রাচীন আরবীয়দের ওকাজের মেলা, ইরানিদের নওরোজ উৎসব, প্রাচীন ভারতীয়দের দোল উৎসব। এই দিনগুলিতে তারা বর্ষবরণ করে বা নতুন বছরের আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে।

বৈশাখের প্রথম দিনটি বাঙালির জীবন ও চেতনায় নানা আনুষ্ঠানিকতার ডালি নিয়ে উপস্থিত হয়। বাঙালি তার ঐতিহ্যমন্ডিত বর্ষবরণ করে স্বকীয় আনন্দ উৎসবে। এই দিনটি বাঙালির জীবনে বড় এক পার্বণ, একটি সার্বজনীন জাতীয় উৎসব। বসন্তের অবসানে বৈশাখের আগমন ঘটে, পুরানোকে ধুয়ে মুছে নতুনকে বরণ করে নেয়। বাঙালির দিবস আরো অনেক রয়েছে কিন্তু তার কোনটাই পহেলা বৈশাখের মতো সার্বজনীন নয়। 

নববর্ষ বাঙালির প্রাণের উৎসব, আদিতম উৎসব বা মেলা। শত শত বছর ধরে চলে আসা একটি বর্ষ অনুষ্ঠান। মাটির গন্ধ এবং মানুষে মানুষে মিলিত হয়ে আনন্দ ভাগভাগি করার সবচেয়ে বড় উৎসব এই বৈশাখী মেলা। অতীতে গ্রামবাংলায় এই দিনে ঘোড় দৌড়, মোরগের লড়াই, ষাড়ের লড়াই, লাঠিখেলা, নৌকাবাইচ আয়োজন করা হতো। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হালখাতার ধুম পড়ে যেত, ধর্মীয় উৎসবে হিন্দুদের দোকানে গনেশ মুর্তিতে সিঁদুর পরানো, মুসলমানদের দোকানে আগর বাতির গন্ধে মাতোয়ারা হতো চারিদিক। এ ছাড়া হিন্দু বাড়িতে মঙ্গল ঘট প্রতিস্থাপন করা হতো, মসজিদে আয়োজন করা হতো মিলাদ মাহফিল।

আমার জন্ম গ্রামে। তাই গ্রামীন পটভুমিতে বৈশাখ বরণ দেখেছি। তখন নববর্ষ মানে পহেলা বৈশাখ অর্থাৎ বৈশাখী মেলাকেই বুঝতাম। এটা ছিল বোরো মৌসুম। তখনো গ্রামে ইরি প্রকল্প শুরু হয়নি। ধান কাটার জন্য অন্য জেলা থেকে কৃষক আসতো আমাদের গ্রামে। তারা মাঠে তাবু টানিয়ে নিজেরা রান্না করে খেতো। সারাদিন ধান কাটা হতো, শেষ রাতে মলন দিয়ে ধান ছাড়ানোর কাজ করতো। এ সময় তাদের গলায় থাকতো বিভিন্ন লোকজ গান। এসব গানে ঘুম ভাঙতো কৃষানী বা গৃহকর্ত্রীর। তারাও ঘুম থেকে উঠে গৃহস্থালীর বিভিন্ন কাজ করতো। গ্রামের প্রত্যেকটা বাড়িতে তখন থাকতো ধানের ছড়াছড়ি। গ্রামীন নর-নারীর ফুরসত নেই, ধান গোলায় তুলতে তারা ভীষন ব্যস্ত দিন কাটাতো। তবু দিন তারিখ মনে করে চৈত্র সংক্রান্তি পালিত হতো। চৈত্রের শেষ দিনটিকে বিদায় জানানো হতো পুজার মাধ্যমে। এই পূজা ছিল মূলত শিবের পূজা। শিব ঠাকুরের অপর নাম নীলকন্ঠ। তারই প্রতিকী হিসাবে বলা হতো নীল পূজা। গ্রামবাংলায় চড়ক পূজা বা চড়ক ঘোরানোর প্রচলন রয়েছে। চৈত্র সংক্রান্তিতে চড়ক পূজারও শুভ সূচনা হয়ে থাকে। বৈশাখের প্রথম দিন থেকে বৈশাখী মেলার আয়োজন চলে। 

চৈত্রের বিদায় এবং বৈশাখের প্রথম সকালে ঘুম ভাঙতেই প্রস্তুতি ছিল পাড়ার দোকানে হালখাতায় যাওয়া। পাড়ার দোকান থেকে বাড়িতে বাড়িতে নিমন্ত্রন করতে আসতো। যাদের কাছে টাকা বাকী থাকতো, তাদেও বাকী টাকার হিসাব দিয়ে একটি চিঠি দিয়ে যেতো। আর কিছু আছে গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, তাদের এমনিই নিমন্ত্রন করা হতো। আমার খুব মনে পড়ে, আমার ক্লাশমেটের মুখে শুনছি তাদের দোকানে ৩টি দোকানে বাকী আছে। তাই তারা ৩টি দোকানে হালখাতার নিমন্ত্রন পেয়েছে। আমিও যথারীতি বাড়িতে এসে জ্যাঠা মশায়কে জিজ্ঞেস করলাম আমাদের কয়টা দোকানে বাকী। তিনি জানালেন কোন দোকানে বাকী নাই। আমার সে কি চিন্তা। লুকিয়ে লুকিয়ে কান্না শুরু করে দিলাম। আমার কান্নার রহস্য উদ্ঘাটন করতেই জানতে পারলেন দোকানে বাকী নাই বলে এই কান্না। কারন আমি এ বছর হালখাতা খেতে পারবো না। তখন আমাকে বলা হলো, আমরা এমনিই নিমন্ত্রন পেয়েছি। পরিবারের ছোটদের সঙ্গে নিয়ে বিকালে জ্যাঠামশায় যাবেন হালখাতা খেতে। সারা বছর যতই মিষ্টি-মন্ডা খাওয়া হোক না কেন, হালখাতার গরম মিষ্টি ছিল লোভনীয়। দোকানীরা ময়রা ডেকে মিষ্টি বানানোর আয়োজন করতো। গ্রামের যত ক্রেতা ছিল তাদের এই দিনে নিমন্ত্রণ করে পেট ভরে মিষ্টি মন্ডা খাওয়াতো। যে সব ক্রেতারা সারা বছর বাকি খেতো, বছরের এই দিনে তারা সকল পাওনা পরিশোধ করতো। আবার তাদের নাম লেখা হতো নতুন হাতায়। সম্ভবত এই জন্যই এ দিনটিকে হালখাতাও বলা হতো। তারপর দিনব্যাপী চলতো নানান রকমের সুস্বাদু খাবারের আয়োজন। নতুন চালের পায়েস, শুক্ত, পাটশাকের ডালনা, মাছের রসা, কঁচি পাঠার মাংস। গ্রামের হিন্দু বাড়িতে মুরগি রান্নার প্রচলন হয়েছে মাত্র কয়েকদিন। এখনো হয়তো অনেক বাড়িতে মুরগীর মাংস খায় না।

বিকাল হতেই নতুন জামা কাপড় পরে স্কুল মাঠে বৈশাখী মেলায় চড়ক দেখতে যাওয়া ছিল পহেলা বৈশাখের প্রধানতম আকর্ষণ। আমি কখনো চড়ক ঘোরানো দেখতে পারতাম না। কারন একটি মানুষের পিঠে বড় বড় লোহার বড়সি ফুটিয়ে শুন্যে ঘোরানো হতো। আমি এই দৃশ্য দেখতে ভয় পেতাম।  তবুও যেতাম চড়কের মেলায়। এই উৎসব চলতো ৫ দিন ব্যাপী। বৈশাখী উৎসবে ঘোড়দৌড় হবে না তাতো হতে পারে না। প্রতিযোগীতার সময় কিছু ঘোড়া দিক ভুলে মানুষের ঘর-বাড়িতে চলে যেত, এ জন্য আমি ভীষন ভয়ে থাকতাম। আমি বরাবরই ঘোড়া, গরু বা যে কোন জন্তু-জানোয়ারকে ভয় পাই। তবুও চড়ক, ঘোড় দৌড় মেলায় যেতাম। নৌকা বাইচ, লাঠিখেলা, হাডুডু খেলা এমনকি ফুটবল খেলারও আয়োজন করা হতো বৈশাখী মেলায়। সময় গড়িয়ে বিকাল হতেই বাড়িতে ফিরে আসতাম। বাড়ির অন্যান্য বয়সে বড় ব্যক্তিদের প্রনাম করতে ভুল হতো না। কারণ এ সময় গুরুজনরা ছোটদের আশীর্বাদ করতেন মিষ্টিমুখের মাধ্যমে।

বড় হতে হতে ঢাকা কেন্দ্রিক বর্ষবরণের সঙ্গে পরিচিত হলাম। আমার দেখা বৈশাখী উৎসব এখানে এসে নববর্ষ উদ্যাপন হয়ে গেছে। নতুন চালের পায়েস হয়ে উঠেছে পানতা-ইলিশে। আমি আর কোন দোকানে মঙ্গল ঘটে সিঁন্দুর বা আগর বাতির গন্ধ পাই না। কোন শিশুর চোখে স্বপ্ন দোলে না হালখাতার গরম মিষ্টি খেতে যাওয়া। গাছের কাঁচা আম পেড়ে নুন-মরিচের ভর্তা খেতে কিংবা নতুন চালের পায়েসের মৌ মৌ গন্ধ তাকে আর আকৃষ্ট করে না। এখানে শুধু নববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে শপিং মলগুলিতে কেনাকাটার ভিড়, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে পোশাকের নতুন ডিজাইন মেলে ধরা।  ইলিশ নিয়ে বানিজ্য চলে আকাশচুম্বী। বৈশাখের প্রথম প্রহরে ঢাকার রাস্তায় মানুষ লাল-সাদা পোশাকে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে। কে কোথায় যাচ্ছে, কেন যাচ্ছে তার হদিস নেই। এছাড়া কিছু সংস্কৃতি সর্বস্ব মানুষ নানা রঙয়ের নানা ঢঙের মুখোশ নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায় শরীক হয়। এমন শুভক্ষণে এসব অদ্ভুত মুখোশ পরার তাৎপর্য আমি খুঁজে পাইনি কখনো। পরিশেষে এক দিনের জন্য বাঙালী পোশাকে নিজেকে উপস্থাপন করে, মাটির সানকিতে পানতা-ইলিশ খেয়ে নিজেকে বাঙালি করার চেষ্টা চলতে থাকে। সারাদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠান শেষে বিকালে কোন অভিজাত রেস্তোরায় ঢুকে পেট ভরে খাবার খেয়ে বাড়ি ফেরা। এ সবই শহুরে নব্য নববর্ষ উদ্যাপনের অংশ।

আমি মিলাতে পারি না, কোনটা বাঙালী উৎসব, আমার দেখা ছোটবেলার বৈশাখের প্রথম দিন, নাকি শহুরে নববর্ষ! তবু মনে মনে শান্তি পাই, আমি বাঙালি, বছরের একটা দিন হলেও সমগ্র বাংলাদেশ সেদিন বাঙালি হয়ে ওঠে। না হোক মনণে অন্তত পোশাকে বাহ্যিক অবয়বে নিজেকে বাঙালি করে গড়ে তোলার এই যে চেষ্টা এটাকে আমি সাধুবাদ জানাই। মনে মনে নিজেকে শান্তনা দেই, আমার মতো সেদিনের কোন শিশু নাইবা শিখলো প্রথম প্রভাতে মিষ্টি খেয়ে দিন শুরুর শিক্ষা, আর দিন শেষে গুরুজনের আশীর্বাদে তুষ্ট হয়ে ঘরে ফেরা। তবুও সমস্ত বাঙালী একটি দিনে, একটি সংস্কৃতিতে মতানৈক্য ভুলে এক কাতারে দাঁড়ায়। বছরের এই একটি দিন-ই বিশ্বের কাছে প্রমান করে বাঙালী উৎসব প্রিয় জাতি। 

প্রত্যেকটা উৎসব ভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের জন্ম দেয়। আমার ছোটবেলায় পহেলা বৈশাখ শুরু হতো মিষ্টি মুখ করে আর শেষ হতো বড়দের আশির্বাদ নিয়ে। এখন আর এসব দেখা যায় না। হয়তো এ জন্যই এখন আর আগের মতো বড়দের সামনে ছোটদের চোখ নীচু করে কথা বলতে দেখি না। বাদশা আলমগীরের মতো কোন বাবা এখন আর সন্তানকে শিক্ষা দেয় না, শিক্ষকের মর্যদা কি করে দিতে হয়। রাস্তায় বেরিয়ে সন্তানের বয়সি ছেলের কাছে মায়ের বয়সি মহিলাদের ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হয়। নিজ ঘরে বাবার কাছে কন্যারা অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। সংসার নামক অভয়ারন্যে কন্যা-জায়া-ভগিনী এখন শুধুই ভোগের সামগ্রী। আমি খুঁজেফিরি বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি, মমত্ব-ভ্রাতৃত্ব আর পারস্পরিক  শ্রদ্ধাবোধ!

(www.theoffnews.com - Bangladesh Bengali nababarsha)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours