মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিচার রাইটার ও লেকচারার, আহমেদাবাদ:

শরীরে বারবার সুঁচ ফোটাতে কারই বা ভালো লাগে, কিন্তু কোভিড ভ্যাক্সিন তো আবার না নিলেও নয়।মুশকিল হল নানা মুনির নানা মত---কেউ বলছে দ্বিতীয় দফার ডোজ ২৮ দিন পরে নিতে হবে। আবার কেউ বলছে ছয় থেকে আট সপ্তাহ পরে।এখনও বোঝা যাচ্ছে না বছর বছর নিয়ে যেতে হবে কিনা। কতদিন অবধি এই ভ্যাক্সিন নিরাপত্তা দেবে তাও বোঝা যাচ্ছে না সুস্পষ্টভাবে। এর মাঝেই একটু আশার বানী শোনা যাচ্ছে, খুব শীঘ্রই আসতে চলেছে পোলিওর মতো মুখ দিয়ে খাওয়া যাবে  এমনই এক কোভিড ভ্যাকসিন---নাম তার ওরাভ্যাক্স। সুঁচ থেকে অন্য রোগের সংক্রমণের ভয় কম, সিরিঞ্জ ফেলে আবর্জনার স্তূপ বাড়বে না----সময়মত ক্যাপসুল জল দিয়ে গিলে ফেললেই নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে।

অনেক আগেই এভাবে ডায়াবেটিসের ইনসুলিন আনার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু পাকস্থলীর তীব্র অ্যাসিডে ইনসুলিন প্রোটিনের গঠন নষ্ট হয়ে গেছে বারবার।তাই ইজরায়েলের কোম্পানী ওরামেড এ নিয়ে কাজ করছে যাতে একেবারে ক্ষুদ্রান্তে পৌঁছে রক্তে ইনসুলিন মিশবে কারণ অন্ত্রের পরিবেশ ক্ষারীয় মানে বেসিক। টাইপ ওয়ান আর টাইপ টু দুরকম রোগের জন্যই তাদের ওরাল ইনসুলিন তৈরীর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। যারা গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স  নিজেদের খাওয়ার কন্ট্রোল করে ঠিক রাখেন বা শুধুই মেটমরফিন দিয়ে সুগার লেভেল ঠিক রাখেন –এ খবর নিঃসন্দেহে তাদের জন্য বড়ই সুখবর। এখন শুধু আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অনুমতির অপেক্ষা। ওরামেড কোম্পানির বিশেষত্বই হল----- যেসব প্রোটিন ইঞ্জেকশানের সাহায্যে দেওয়া হয় তাদের  দিয়েই মুখে খাওয়ানোর ওষুধ বানানো। ওরাভ্যাক্সও  তাদের সেই নিয়মেই বানানো।  

এবার আসি নিজেদের দেশের কথায়। ভারতের গুরগাঁওয়ের কোম্পানি প্রেমাস বায়োটেক তৈরী করেছে ট্রিপল অ্যান্টিজেন যা কাজ করবে কোভিড ভ্যাক্সিন হিসেবে। ওরমেড আর প্রেমাসের যৌথ উদ্যোগে এবছরের শেষেই আসতে চলেছে ওরাভ্যাক্স। প্রাণীদেহে পরীক্ষা শেষে অভূতপূর্ব ফল পাওয়া গেছে। আসলে ভ্যাক্সিন বলতে আমরা বুঝি  মেরে ফেলা জীবাণুদের শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া যাতে শরীরে ওই বাইরের প্রোটিন বা অ্যান্টিজেনের সঙ্গে লড়তে অ্যান্টিবডি তৈরী হয়। কিন্তু প্রেমাস বায়োটেক বানিয়েছে ভাইরাস লাইক প্রোটিন যেমন, কোভিড ভাইরাসের মেমব্রেন, এনভেলপ আর স্পাইক প্রোটিন থাকবে ওরাভ্যাক্স ক্যাপসুলে ট্রিপল অ্যান্টিজেন হিসেবে। যা শ্বাসনালী ফুসফুসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে। ইমিউনোগ্লোবিউলিন জি এবং এ দুটোই শরীরে প্রচুর পরিমানে তৈরী হয়ে ইমিউনিটি বাড়িয়ে তুলবে। ওরামেডের প্রোটিন ওরাল ডেলিভারী সিস্টেম আর ভারতের প্রেমাস বায়োটেকের ট্রিপল অ্যান্টিজেনের যৌথ মিলনে আগামী দিনে আসুক ওরাভ্যাক্স---আশায় থাকি আমরা কোভিডমুক্ত পৃথিবীর।

(www.theoffnews.com oravax civic 19 capsule)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours