সাজিয়া আক্তার, রেসিডেন্সিয়াল এডিটর (বাংলাদেশ), দ্য অফনিউজ:

নেদারল্যান্ডসের ছোট্ট এবং অনেক সুন্দর একটি গ্রাম গিয়েথুর্ন। ১২৩০ সালে স্বপ্নের মতো এ গ্রামটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ডাচ চিত্র পরিচালক বার্ট হান্সট্রা তার কমেডি ছবি ‘ফ্যানফেয়ার’-এর শুটিং করেন এই গ্রামে।১৯৫৮ সালে। এরপরই প্রথম বিশ্ববাসী জানেন এ গ্রামের নাম। এখন সব সময় প্রায় পর্যটকের ভীড় লেগেই থাকে।

এ গ্রামকে নিয়ে ডিসকোভারি চ্যানেল, সিএনএন, গার্ডিয়ান, নেচারসহ দেশি বিদেশি অসংখ্য বার্তা সংস্থায় প্রতিবেদন হয়েছে। ফ্যানফেয়ার মুভির পর এ গ্রামে আরও দুটি মুভি হয়েছে। একটি ড্যানিয়েল ফ্রানোর ‘মিরর’। অন্যটি ফরাসী পরিচালক ক্লদিয়েজের ‘ হোয়ার দ্য স্কাই ইজ ডাউন’। ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিন জানায়,  হলিউড অভিনেত্রী স্কারলেট জোহানসন। কোন ঘরই তার স্থায়ী হচ্ছিল না। দু’ দুটো সংসার ভেঙেছে। তাই কমেডিয়ান কলিন জস্টকে তৃতীয় বিয়ে করার আগে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগে এ গ্রামে গিয়ে একমাস কাটিয়ে আসেন গত বছরের সেপ্টেম্বরে। গ্রেটা থেনবার্গও সর্বশেষ বৃটেন সফরের সময় এ গ্রামে ভ্রমণের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। 

অন্যান্য স্থান থেকে এ গ্রাম আলাদা, কারণ এখানে যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। এ জন্য এখানে কোনো গাড়ির শব্দও শোনা যায় না। গ্রামটিতে যেতে হলে গ্রামের বাইরেই গাড়িটি রেখে যেতে হয়। এই গ্রামে যেতে হয় পানিপথে, গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে এখানকার বাসিন্দারা নৌকা ব্যবহার করেন। গ্রামের শান্ত পরিবেশ বজায় রাখতে নৌকাগুলোতে ব্যবহার করা হয় শব্দ ছাড়া ইঞ্জিন। ডিসকোভারি চ্যানেল জানায়,এ গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় মাটির নিচে ছোট-বড় ফাঁপা অংশ ছিল। গ্রামে মানুষ বসবাস শুরু করার পর, সেগুলি খুঁড়ে বার করতে শুরু করে। বছরের পর বছর ধরে সেগুলি খুঁড়ে বার করার ফলে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাটো হ্রদ তৈরি হয়। গ্রামের বিভিন্ন দিক থেকে খাল চলে যাওযায় গ্রামটাও ছোট ছোট দ্বীপে পরিণত হয়েছে। এ দ্বীপগুলোর মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করেছে ১৫০টিরও বেশি সেতু। এই গ্রামকে নেদারল্যান্ড-এর ভেনিসও বলা হয়। 

নেচার ম্যাগাজিন জানায়, এ গ্রামে বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজ  ও হোটেল ব্যবসা করেন। এতেই তারা স্বাবলম্বী।২০১৯ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী এ গ্রামের জনসংখ্যা ১১ হাজারের মতো। স্কুল , কলেজ, পানশালা, নাইটক্লাব, চার্চ, বাস্কেটবল খেলার মাঠ, ঘোড়া দৌড়ানোর মাঠ সবই আছে। এ গ্রামের মেয়র ফিল্পা এলি’র নির্দেশ রয়েছে , কোনো গাছ বা গাছের পাতা না কাটার। ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট না করেই তৈরি করতে হয় বাসাবাড়ি। কাগজের ব্যবহার খুবই কম হয়। কারণ কাগজ পরিবেশ নষ্ট করে  মেয়রের মতে। তাই অনলাইনে সব স্লিপ আদানপ্রদান করা হয়। এমনকি নৌকায় চড়ার টিকেটও। 

নেদারল্যান্ড সরকারও এ গ্রামকে সম্প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে জলবায়ু বান্ধব হিসেবে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার জন্য। এজন্য সরকারি গণমাধ্যমে এ গ্রাম সম্পর্কে প্রতিদিন তাকে ইতিবাচক বুলেটিন। করোনার সময়ে এ গ্রামে কেউ আক্রান্ত হোননি। ফলে বোঝাই যায় জলবায়ু ও পরিবেশ মানুষের জন্য কতোটা উপকারী।

(www.theoffnews.com - Netherland Giethoom village waterway)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours