দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

নির্বাচনী নির্ঘন্ট ঘোষণা হয়নি। তবে প্রচার থেমে নেই। প্রচারের কৌশলে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়তে  নারাজ। আর সেই কারণেই  প্রতিপক্ষের প্রতিটি অস্ত্রকে ভোঁতা করার প্রচেষ্টা  চলছে প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করেই? তাই একদলের প্রচার নিজের কাছেই ফেরে বুমেরাং হয়ে।

রাজ‍্যে বিজেপির পরিবর্তন রথযাত্রা শুরু হতেই, শাসকদলের পাল্টা -- "দিদির দূত"। প্রতিটি দলের আইটি সেল অনেক আগে থেকেই কোমর বেঁধে যুদ্ধে নেমে পড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া তাই এখন তাই সব থেকে সচল গণ মাধ্যম। আর এর ফাঁকফোকর গলে বিভ্রান্তির শিকার আমজনতা।

সম্প্রতি রাজ‍্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাড়া জাগানো প্রকল্পের মধ‍্যে একটি হলো "দুয়ারে সরকার"। 03371051352 - এই একটি নাম্বার থেকে নন রিপ্লাই ফোন আসছে মোবাইল  গ্রাহকদের কাছে। সেখানে ঘরের দুয়ারে সরকার প্রকল্পের যাবতীয় সুফল তুলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু ফোনের ডিসপ্লে বোর্ডে ভেসে উঠছে "দুয়ারে সরকারে"র পরিবর্তে "যমের দুয়ারে সরকার"। সবাই জানে, শাসক দলের "দুয়ারে সরকার"কে কটাক্ষ করে বিজেপি পাল্টা প্রচার চালাচ্ছে "ওটা যমের দুয়ারে সরকার" বলে। সাধারণ ভোটার ওই কলে শুনতে পাচ্ছেন শাসকদলের দুয়ারে সরকারের সুফলের কথা, কিন্তু যমের দুয়ারে নাম দেখেই  বিভ্রান্তিতে মাঝপথেই ফোন কল কেটে দিচ্ছেন। এখানেই কাজ করছে ভোট কৌশল। 

এই হাস‍্যকর পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন জেলার  সব‍্যসাচী মুখোপাধ‍্যায়। সদ‍্য ভোটার তনয়া মুখোপাধ‍্যায়ের মতো অনেকেই। তাঁরা জানান, অদ্ভুত লাগে। এক প্রকার বিভ্রান্তিতেই ফোন কল কেটে দেন তাঁরা।

এব‍্যাপারে বিজেপি প্রাক্তন সভাপতি শ‍্যামাপদ মণ্ডল ও ধ্রুব সাহাকে ফোন করা হলে তাঁরা অস্বীকার করে বলেন, দিদি দুয়ারে সরকার প্রকল্পকে আমরা যমের দুয়ারে সরকার বলে মনে করি। তবে সেই লেখা কেন ফোনের ডিসপ্লেতে ভেসে উঠছে, তা বলতে পারব না। পাশাপাশি তাঁরা এই কাজ যে বিজেপির আইটি সেলের নয়, সেটাও জানান। অন্যদিকে তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি অভিজিৎ সিনহাকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি  বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানাবেন বলেন। এই রহস‍্যের সুলুক সন্ধানে প্রশ্ন করা হয় বিমল সেখ নামে একজন পেশাদার ওয়েব ডেভলপারকে। তিনি বলেন, বিভিন্ন  আননোন নাম্বার থেকে ফোন আসে বলে এখন সবাই ফোনে  ট্রুকলার আই ডি ইনস্টল করে রাখেন। নতুন  প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা তো তাদের ফোনে এই সুবিধা রাখতে পছন্দ করেন। এই অ‍্যাপের নিয়ম হলো ইনস্টল হওয়ার পর ফোন সেটের সমস্ত তথ্য  রিড করে। যদি দেখা যায় তিনটি গ্রুপের মধ‍্যে কোন গ্রুপ "এ" নামে পঞ্চাশ জন, অন‍্য গ্রুপ "বি" নামে পঞ্চাশ জন এবং  আরেকটি গ্রুপ "সি" নামে একশো জন  সেভ করে  রাখে, সেক্ষেত্রে এই অ‍্যাপ সংখ্যার নিরিখে "সি" নাম গ্রহণ করবে এবং সবাইকে সেই নামই দেখাবে। প্রযুক্তির এই দিকটি ব‍্যবহার করে হ‍্যাকারের দল "এস বি আই" বা বিভিন্ন ব্যাঙ্ক সহ অনেক কোম্পানির নাম ডিসপ্লে করে মানুষকে সর্বস্বান্ত করে। তাই নাম দেখে বিশ্বাস না করে এক্ষেত্রে  সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ করা উচিৎ।

(www.theoffnews.com - hacking political publicity)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours