মৌসুমী প্রামাণিক, লেখিকা, কলকাতা:

বেশ কয়েকদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা শুনলাম। বেশ ম্যাচিওরড লাগলো। তথ্য দ্বারা, লজিক দিয়ে বক্তব্য রাখছেন। ক্রাউড পুল করতে পারছেন। যুবসমাজ আকৃষ্ট হচ্ছে তার প্রতি। তবে মমতার ভাইপো বলেই এত ক্রেজ কিনা তা সময়ই বলবে। 

সেটা হয়তো নয়। কিছু নিজস্বতা থাকতেই হবে। তা না হলে রাহুলের পেডিগ্রী তো বিশাল। উনি ব্যর্থ হচ্ছেন কেন? অন্যদিকে প্রিয়ঙ্কা আবার মানুষের কাছে অনেক বেশী গ্রহনযোগ্য। যতোদূর বুঝেছি প্রিয়ঙ্কা যথেষ্ট straight forward. 

এই ধরনের মানুষকে খুব সহজেই বুঝতে পারে জনতা।

কানাইহা, অখিলেশ ও তেজস্বীও বেশ ভালো বক্তব্য রাখেন। শতরূপ ভালো বলেন। কিন্তু সেগুলো তোতাপাখির বুলি। নিজস্বতা কিছু নেই। whereas কানাইয়ার বক্তব্যে নিজস্বতা থাকে যা ক্রাউড পুল করতে পারে। 

মিডিয়া তাই দেখায় যা মানুষ পছন্দ করে। যদিও গণতন্ত্রের তৃতীয় স্তম্ভটি আজকাল বেশ নড়বড়ে। সোসাল মিডিয়া স্মার্টফোনের যুগে মানুষকে বোকা বানানো খুব সহজ নয়। যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ফ্লেক্সিবল হওয়া জরুরি। জনতা straight forward মানুষকে গভীরভাবে পছন্দ করে। কিন্তু যারা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলেন তাদের সামনে হয়তো খুশী থাকেন। কিন্তু মনের ভেতর একটা সন্দেহ থেকেই যায়। যেহেতু সম্পর্ক নিয়ে গল্প চিত্রনাট্য লেখাই আমার মেন জোনার তাই হিউমান সাইকলোজি একটু হলেও বুঝি। 

এই মুহূর্তে ভোটের বাজারে সিপিএম যেমন কনফিউশান ক্রিয়েট করেছে। তেমনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কিছু রাজনৈতিক চালে ভুল করেছেন। সেই কারণে বিজেপি ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে। অথচ গরীব মধ্যবিত্ত ধনী কেউই মোদী শাহর বিজেপির কর্মকাণ্ড পছন্দ করছেন না অথচ তবুও ওরা ভোটে জিতছে। 

অনেকে হয়তো বলবেন টাকার খেলা। হুম। চলছে টাকার খেলা। এখন প্রশ্ন হলো যে মানুষ এইভাবে বিক্রীত হচ্ছে কেন? সবটাই তো লোভ নয়। ডিপ্রাইভড হওয়াটাও একটা ইস্যু। 

বাংলার মানুষ আবেগী। তাই সকলকে কেনা সম্ভবপর নয়। পর্দার আড়ালে অনেক কারণ থাকে যা প্রকাশ্যে আসে না। তবুও ক্ষতিকারক জেনেও একটা দলকে সাপোর্ট করা নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থের বিনিময়ে। আমার কাছে এ মস্তবড় সামাজিক অপরাধ। 

তাই সামাজিক রিফর্ম না হলে স্বার্থপরতা এইভাবেই বাড়তে থাকবে। এই সমাজ তথা মানুষকে শুদ্ধ করার কাজ, চেতনা জাগ্রত করার কাজ আমি করি আমার লেখা দিয়ে। মানুষের কাজ করার জন্য কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।

সত্যি বলতে কি রাজনীতি আজ শুধুই ফোকোটিয়া টাকা রোজগারের কল। কর্মহীন ও ধর্মহীন মানুষ শাসকের ছত্রছায়ায় থাকতে ভালবাসবেই। আর বাকীরা?

তাদের পাশে আজ কেউ নেই। তারা ও আমরা বড় অসহায়।

(www.theoffnews.com - West Bengal present politics)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours