সাগর দাস, ফিচার রাইটার, কোচবিহার:
আশায় আশায় বন্ধ ঘড়ির দুবার সঠিক সময়ের প্রতীক্ষায় বসে আজ তিন বছর..কাঁটা ঘুরল না।
"আবার দেখা হবে তো?'
"হ্যাঁ অবশ্যই, হবে বৈকি। দেখা তো হবেই, নির্বিকার নদী অববাহিকায় যারা পিতৃ তর্পণ করে, দেখা তাদেরও হয়। অগভীর আমাজনের জঙ্গলের কোলে এক বিন্দু আলোর ভুমিষ্ট হওয়া নয় কেবল, আছে তিলোত্তমার বুকে পয়সা কুরোনো কিছু পাপীর আস্পর্ধায় নাগাল পাওয়ার স্বপ্ন। হ্যাঁ কিছুটা তো পিছতেই হয়। নইলে নিচ্ছিদ্র অবসম্ভাবী মৃত্যুই একমাত্ৰ ভালোবাসা রবে কিনা.."
"শুনতে চাইনি আমি বর্ণনা"
"সব উত্তরে প্রত্যুত্তর সাজে না।"
"আচ্ছা আমি কলকাতা আসলে আমায় কলকাতা চেনাবি তো?"
"আমার কলকাতাও তোকে না হয় চিনে নেবে...গলিতে গলিতে গ্রাফিটি দেখতে পারবি তোর নামের।"
"ছবি তুলবো খুব, তুই এত সুন্দর ছবি তুলিস।"
"হ্যাঁ, তুই তবে কচি কলাপাতা রঙের জামদানি শাড়িটা পড়িস। খুব মানাবে, ছবি ফুটবে।"
তিন বছরে গ্রাফিটি গুলোও ধাঁধায় অন্ধকার হয়ে পড়েছে। আদৌ বাজবে তো সঠিক সময়ে দ্বিতীয় ঘন্টা! না আমি সস্তা নই, আর আমার ভালোবাসা তো নয়ই... নীল দেওয়ালের শূণ্যতা চিরে যখন দুফোঁটা জল গড়ায়, তখন চাতকের ডাকে সাড়া মেলে মরুদ্দানের ভিড়ে।
ফোনটা হঠাৎই বাজে... চলমান তিলোত্তমার রাস্তায় দাঁড়িয়ে, ঘড়িতে দম দেওয়া হচ্ছে মনে হলো...।
"হ্যালো"
"অবিশ্রিত কিছু ঘটনার স্বীকারোক্তি। ক্ষমা প্রার্থী।" হৃদ স্পন্দন তুঙ্গে, তাই রক্ত সঞ্চালন শিরায় শিরায় অনেক বেশি বেগে। মগ্নতা বেড়ে গিয়ে "আচ্ছা বেশ, কবে দ্যাখা হচ্ছে!" চোখের সামনে একরাশ আলো আর তারপর সবটা সীমাহীন সুড়ঙ্গে..দুমমম্!
খোলা চোখের ভ্রুকুটি, শব্দ বিন্যাসে ক্লান্ত। সামনে যেন মহানগরীর প্রতিশ্রুতি রাখার দায়ে বাকরুদ্ধ শহর।
"এখন কেমন আছিস? আমায় কলকাতা চেনাবি না? সবুজ এই শাড়িটা যে খুঁজে পাচ্ছিলাম না, তাই বড্ড দেরি হলো..."
ঘড়িটা আজও বন্ধ। তবুও দুবার সঠিক সময় দিতে ব্যর্থ। কিন্তু সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত যে অবশ্যম্ভাবী! তাই আমিও সময়ের প্রবাহে আবহমান...
(www.theoffnews.com - Bengali feature wait Kolkata)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours