প্রাণকৃষ্ণ মিশ্র, লেখক, কালনা, পূূর্ব বর্ধমান:

ধর্ম নিরপেক্ষ বলে বোধহয় কোন কথাই আর থাকবে না। ভারতবর্ষে মসজিদ ভাঙার খেলার সাথে পাল্লা দিয়ে পাকিস্থানে মন্দির ভাঙার খেলা চলে ধর্মীয় মৌলবাদীদের উস্কানিতেই। ধর্ম ব্যবসায়ীদের এহেন কাজে দুই দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

স্বাধীনতা উত্তর সময়কালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ মৌলবাদীদের মাধ্যমে এই বিষ ঢুকিয়ে দিয়েছিল মানুষের চিন্তন জগতে। যার কারনে উপমহাদেশের দুই ভূখণ্ডের মানুষই বোধহয় এই বিষ থেকে কোনদিনই তা থেকে মুক্তি পাবে না। 

গতকাল পাকিস্তানের করক জেলার টেরি গ্রামে উন্মত্ত জনতা ভেঙে দিল শ্রী পরমহংসজি মহারাজের সমাধি ও কৃষ্ণদ্বার মন্দির। ১৯১৯ সালে স্বাধীনতা উত্তর ভারতে এই মন্দির তৈরি হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে এই মন্দির ভেঙে দেওয়া হলেও পাক সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে ২০১৫ সালে মন্দির পূর্ননিমান হয়েছিল। মন্দিরের জমি নিয়ে পাকিস্তানের হিন্দু জনগোষ্ঠীর সাথে স্থানীয়দের ঝামেলা দীর্ঘদিনের। 

গত ৩১ সে জানুয়ারি, ২০২০ সালে কৃষ্ণ দ্বার  মন্দির দ্বিতীয়বারের জন্য ভাঙা হলো। উন্মত্ত ইসলাম মৌলবাদীরা পাকিস্তানে যেমন ভাবে মন্দির ধ্বংস করে ঠিক তেমনই পদ্ধতিতে এদেশেও হিন্দু মৌলবাদীরা বাবরি মসজিদ ভেঙে দেখিয়েছিল মৌলবাদের চরিত্র দুই দেশে একই। 

এখন প্রশ্ন ১৯১৯ সালের তৈরি কৃষ্ণ দ্বার মন্দির (পাকিস্তান) বা বাবরি মসজিদ (ভারত) ভেঙে কি লাভ হয়েছে মৌলবাদীদের? 

বরং এই সৌধগুলির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে সৌধগুলিকে রক্ষা করলেই তো দেশের বা রাষ্ট্রের মঙ্গল হতো। একজন ভ্রমন পিপাসু মানুষ হয়ে এটুকুই আমি বুঝি ঐতিহাসিক স্মৃতি সৌধ গুলির তাৎপর্য অপরিসীম। এগুলি থাকলেই সংশ্লিষ্ট দেশের গরিমা বৃদ্ধি পায়। 

দেশ বিদেশ থেকে বহু পর্যটক এগুলি দেখতে আসবেন। পর্যটন শিল্পের উন্নতি হবে সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট দেশের বা মন্দির/মসজিদ সংলগ্ন এলাকারও উন্নতি হবে। অর্থনীতি চাঙ্গা হবে পর্যটন শিল্পের মাধ্যমেও। 

কিন্তু না। 

মৌলবাদীদের কাছে এসব মন্দির বা মসজিদের ঐতিহাসিক বিষয়ের কোন মূল্য নেই। কোন দেশেই নেই। বারেবারে তাই প্রমান করছে মৌলবাদ।

কি পাকিস্থানে, কি বাংলাদেশে, কি ভারতবর্ষ সব দেশেই সংখ্যাগুরু মৌলবাদের চরিত্র একই রকম। 

আসলে মৌলবাদ রক্ত চায়, মৌলবাদ চায় ধ্বংস। এদের কাছে কোন সুযুক্তি গ্রাহ্য নয়। ধ্বংসের মধ্য দিয়েই মৌলবাদ আনন্দ পায়।

(www.theoffnews.com - temple destroyed Pakistan)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours