সুকন্যা পাল, ম্যানেজিং এডিটর, দ্য অফনিউজ, কলকাতা:

ক্যালেন্ডারে আজকের দিনটা বেশ জ্বলজ্বল করছে। ১৬ ডিসেম্বর। তাও আবার পকরোনাকালের অবিস্মরণীয় বছর বলে কথা। ২০২০ সাল। আর যদি ঠিক কুড়ি বছর আগের একটা দিনে যদি আমরা ফিরে যাই তাহলে বেশ মনে পড়ে আরও একটা দিনের কথা। ১৬ জুলাই ২০০১ সাল। আসলে আজকের দিনের দর্পনে একটা হরগৌরী বন্ধন যে রয়েই গেছে দুর্গাপুরের থার্ড পেজে। আসলে এই দুটো দিনে এই শিল্পশহরের বুকে একটা রুপোলি বাণিজ্য রেখার মেলবন্ধন ঘটে গেছে সবার অলক্ষ্যে, অথচ কি বলিষ্ঠ ভাবে।

ঠিক কুড়ি বছর আগে কথা। এই শহরের তদানীন্তন মেয়র রথীন রায় বলতেন, "আমরা শ্মশান শহরে বসবাস করছি।" ভারি শিল্প একের পর এক বন্ধ হওয়ায় দুর্গাপুরের অর্থনীতিতে যেন তখন যক্ষারোগ জাঁকিয়ে বসেছিল। এক অতিক্ষুদ্র টিভি ব্যবসায়ী কবি দত্ত সেদিন আচমকা শহরের প্রাণ কেন্দ্র সিটিসেন্টারে দুম করে খুলে বসলেন 'সিটি প্লাজা'। দুর্গাপুরবাসী সেদিন প্রথম দেখল এক রুগ্ন শহরের বুকে অদ্ভুত ঝাঁ চকচকে শপিং মল। যেন সূর্য অস্তাচলগামীর দেশে পড়ন্ত বিকেলে আচমকা শুকতারার আবির্ভাব। এ তো দিনে তারা দেখার মতো ভোজবাজির উপকথা। হ্যাঁ উপকথা এই কারণেই, দুর্গাপুরের মরা গাঙ্গে সেদিন এই সিটি প্লাজা ছিল একটা মাইলস্টোন। যার উপর লেখা হয়ে যায় এই শহরের আর্থিক পুনর্জন্মের এক ইতিহাস। এই শপিং মলের পথ ধরে দুর্গাপুরের বিনিয়োগ সরণিতে তখন ঘটেছিল পুঁজিনিবেশের নানা গল্প গাঁথা। সে এক অপরূপ শহর ঘুরে দাঁড়ানোর রূপক ইতিহাস।

প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাসের কবিতার একটা লাইন বড্ড মনে পড়ে যায়। "জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের পার।" সত্যি তাই। ঠিক কুড়ি বছর পর। সেই কবি দত্ত। আজকে এই শহরের যিনি একজন সফল উদ্যোক্তা। সেই শিল্পশহর দুর্গাপুর। সেই সিটি সেন্টার। যখন সারা বিশ্বের সঙ্গে ভারতের এই জার্মান-রূঢ় শহরও থরহরি কম্পমান করোনা আতঙ্কে, যখন এই ইস্পাত নগরীর অন্যতম ব্লাডলাইন মিশ্র ইস্পাত কারখানা হিমঘরে ভ্রমনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যখন লকডাউনের আম্ফান দাপটে বৈশ্বিক অর্থনীতিটাই তছনছ দুর্গাপুরকে বগলদাবা করে, ঠিক তখনই এই সিটিসেন্টারে উদ্বোধন হতে চলেছে আজ হোন্ডা শোরুম কাম সেলস এন্ড সার্ভিস সেন্টার "ভিসন হোন্ডা"। আবার যেন সেই ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত। আর্থিক উল্টো স্রোতে সাঁতার কেটে দুর্গাপুরে ফের যেন ধ্বনিত হল একটা বিখ্যাত লাইন, "চলতি কা নাম গাড়ি।"

এমন ভাবে গাড়ি কথাটাই বা উল্লেখ হল কেন? আসলে বছর কুড়ি আগে যে কবি দত্তের প্রতিষ্ঠিত সিটি প্লাজার দৃষ্টান্তে এই ইস্পাত নগরীতে আর্থিক উন্নয়নের চাকা ঘুরেছিল জেট গতিতে সেই বাণিজ্যিক মস্তিষ্কের হাত ধরেই তো আজ আবার একটা নয়া চাকা ঘুরলো। দ্বিচক্র যানের হট্টমেলার চাকা ভিসন হোন্ডা।

এদিন ভিসন হোন্ডা'র উদ্বোধন করেন হোন্ডা কোম্পানির রিজিওনাল ম্যানেজার সার্ভিস ইস্ট পঙ্কজ অগ্রবাল। তিনি বলেন, "দ্বিচক্র যানের এই শোরুম দুর্গাপুরের মতো বাণিজ্য নগরীর মাথায় এক নতুন পালক হিসেবে পরিগণিত হবে। যা এই মূহুর্তের করোনাকালে নতুন আশা অবশ্যই জাগাবে।" যে মানুষটাকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুরে অর্থনীতি বারবার আর্থিক চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করেছে শক্ত বুনিয়াদের পথ প্রদর্শক হিসেবে সেই কবি দত্ত মন্তব্য করেন, "দুর্গাপুর হল আমার প্রাণের অক্সিজেন। এখানকার অর্থনৈতিক ওঠাপড়া আমি দেখেছি খুব কাছ থেকে। শহরবাসী হিসেবে আমার নৈতিক দায়িত্ব এড়াতে পারি না। তাই এই শিল্পশহরের উন্নয়নের স্বপ্ন আমিও দেখি। এই শিল্পশহরের সুনামকে স্মরণ করে তাই চেষ্টাটা করি ব্যবসাটাকে ভালো ভাবে করার।"

সম্প্রতি ডিজিটাল দুনিয়ায় পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে দ্রুত। এক নতুন সম্ভবনাময় নিত্যনতুন জেনারেশনের অপেক্ষায়। সেইজন্য তো দুর্গাপুরের বর্তমান মেয়র দিলীপ অগস্তি প্রায়শ বলে থাকেন দুর্গাপুর অচিরে স্মার্ট সিটি হবেই। তাই কে বলতে পারেন সেই বহু প্রত্যাশিত স্বপ্নের স্মার্ট সিটির স্মার্ট ভিসন হবে না আজকের "ভিসন হোন্ডা"?

(www.theoffnews.com - Durgapur City Centre Honda)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours