সাজিয়া আক্তার, রেসিডেন্সিয়াল এডিটর (বাংলাদেশ), দ্য অফনিউজ:

বন্ধু বান্ধদের সাথে দেখা করা, ছুটির দিনে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া এবং মাঝেমধ্যে টিভি দেখ। এভাবে জীবনধারণ করতে স্বাছন্দ্যবোধ করছেন ? মনে হতে পারে, আপনি ভালই আছেন, কিন্তু গভীরভাবে চিন্তা করলে বুঝতে পারবেন আসলেই অনেকক্ষেত্রে সুখী নন। একঘেঁয়ে এই জীবন থেকে আপনি মুক্তি চান। আজকে আমরা আপনাদের এমন দশটি লক্ষণ সম্পর্কে জানাবো যেগুলো আপনাকে ধীরে ধীরে অধঃপতনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক!

১. কোন কিছুই আগ্রহী করে তুলে না: একজন ব্যক্তির বয়স শুধুমাত্র তার পাসপোর্টের বা ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সংখ্যা দ্বারা নির্ধারিত হয় না, কিন্তু নিজের মধ্যে নতুন কিছু খুঁজতে, শিখতে এবং বিকাশের ক্ষমতা দ্বারা নির্ধারণ করা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আপনার জীবনে কতগুলো ঘটনা আপনাকে উদ্যমী করেছে?

২. নিজের বা বাড়ির ব্যাপারে যত্নশীল নন: আপনি আপনার চেহারার যত্ন নিতে পারেন না এবং গত মাসে শেষ বারের মতো বাড়ি পরিষ্কার করেছিলেন- তাহলে এটি আপনার ব্যক্তিগত সংকটের একটি স্পষ্ট লক্ষণ। শরীর এবং চারপাশের পরিবেশের উদাসীনতা শুধুমাত্র বলে যে, জীবন ভালভাবে যাচ্ছে না এবং সেটিই মেনে নিয়ে সব কিছু ছেড়ে দিয়েছেন। আবার পরিষ্কার থাকা জীবনের জন্য অত্যন্ত জরুরীঃ এটা দুশ্চিন্তা থেকে দূরে রাখবে এবং মাথা থেকে জগাখিচুড়ি চিন্তা দূর করতে সহায়তা করবে।

৩. জবকে অপছন্দ করেন: কার্যদিবস মাত্র শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যেই সময় গণনা করছেন এবং কাজ শেষ করার জন্য অপেক্ষা করছেন। চাকুরীর প্রতি ঘৃণা জন্মানো কিছু পরিবর্তনের কারণ হতে পারে। সম্ভবত বিরক্তিকর ভূমিকা, বিরাগপূর্ণ সহকর্মীদের পছন্দ করেন না বা শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাতায়াত করতে পছন্দ করেন না। যদি অপছন্দের কারণ বুঝতে পারেন তাহলে পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা সহজ হবে।

৪. যোগাযোগ করতে অস্বীকার করেন: প্রত্যেকেরই ব্যক্তিগত স্থানের প্রয়োজন হয়, কিন্তু আপনি যদি একেবারে কাউকে দেখতে বা শুনতে চান না, বন্ধু এবং আত্মীয়দের এড়িয়ে চলেন এবং সামাজিক নেটওয়ার্কে ব্রাউজ করার জন্য ‘অজ্ঞাত’ মোডে যান, তাহলে বুঝতে হবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।

৫. সব কিছুতেই আপনি রেগে যান এবং বিরক্ত হন: আপনি সবকিছুতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছেন বা রেগে যাচ্ছেন, তার মানে এই আপনি সহজেই আপনার মেজাজ হারিয়ে ফেলেছেন এবং কান্না করা থেকে শুরু করে প্রচন্ড ক্রোধে কিছু করছেন বা ভাঙ্গছেন।

৬. আপনার মধ্যে অনেকগুলো খারাপ অভ্যাস থাকা: সমস্যা সমাধান করার অন্য উপায় হিসেবে আপনি হয়তো মদ, সিগারেট, অতিভোজন বা মধ্যরাতে ব্রাউজিং করার মতো খারাপ অভ্যাসের সাহায্য নিচ্ছেন। কিন্তু এগুলো আপনার জীবনে সমস্যা সমাধানে কাজে দিবে না, শুধু চেহারায় পরিবর্তন আনবে।

৭. অতীত নিয়ে পড়ে থাকা বা ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক সময় ধরে স্বপ্ন দেখতে থাকেন: আপনি মনে করেন যে, পুরানো স্মৃতির মধ্যে থাকা ভাল এবং পুরানো স্মৃতিগুলো মনে করতে থাকেন। বা বিপরীতে, আপনি মনে করেন ‘আগামীকাল ভাল হবে’ এবং আপনাকে একটু অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু এই ‘একটু’ সপ্তাহ, মাস এবং এমনকি বছর কেটে যাওয়ার পরও আর শেষ হয় না। বছর ধরে চলতে থাকে। মাঝেমধ্যে দিবাস্বপ্নে হারিয়ে যেতে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু আপনি যখন ক্রমাগত “ভাল সময়ের” উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার চেষ্টা করেন, তা অতীত বা ভবিষ্যৎ যাই হোক, আপনি অবচেতনভাবে বর্তমান থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন।

৮. আপনার কোনখানেই ‘চার্জ’ নেই: প্রত্যেকেরই খারাপ মেজাজের সাথে ডিল করার জন্য তাদের নিজস্ব প্রমাণিত উপায় রয়েছে। অনেকেই ব্যাগে ঘুসি মারে, অনেকে পার্কে বেড়াতে যায় এবং অনেকে আবার তাদের বেড়ে উঠা শহরে ভ্রমণ করে আধ্যাত্মিক শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

৯. ফোনে বন্দী হয়েছেন: পিটসবার্গ মেডিকেল স্কুলে ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে সামাজিক নেটওয়ার্কগুলিতে যারা এক ঘণ্টার বেশি সময় ব্যয় করে তারা হতাশায় ভুগছে। এজন্য অফলাইনে থাকার চেষ্টা করাই ভালো, এটি মানুষকে সুখি রাখে।

১০. জীবনকে ‘নির্ধারিত’ হিসেবে বিবেচনা এবং সেভাবেই পুনরাবৃত্তি করেনঃ ‘শনিবার শুরু হচ্ছে’ শনিবার, সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ বা নববর্ষ থেকে ‘নতুন জীবন’ শুরু হতে পারে না। একটা কথা মনে রাখুনঃ ‘আগামীকাল কখনোই আজ না! যদি কোন কিছু পরিবর্তন করতে চান, তাহলে কোন একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের দিন বা একটি ভাল তারিখের জন্য অপেক্ষা করবেন না। যা পরিবর্তন করতে চান তা আজকের মধ্যে এখনি শুরু করে দিন।

(www.theoffnews.com - Bangladesh)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours