দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন যে একেবারে ক্যালেন্ডারের দুয়ারে। তাই তৃতীয়বারের জয়ের লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী নাকি বনে গেলেন গৃহস্থের রাধুনী। সমালোচকদের তেমনই মন্তব্য। আর টিপন্নি কেটে নিন্দুকেরা বলছেন, ঠেলার নাম বাবাজী। তবে শাসক শিবিরের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এক মানব হিতৈষীর প্রতিমুর্তি। 

ছোট বেলাটা কেটেছে রামপুরহাটের কাছে কুসুম্বায় মামার বাড়িতে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাঠের আলপথে হেঁটে কড়াইসুঁটি তুলে খাওয়ার গল্প সবার জানা! 

বোলপুরে এদিন গ্রামের সেই আটপৌরে মেয়েকে দেখা গেল বল্লভ পুর ডাঙার রাস্তার ধারে একটি খাবারের দোকানে। হঠাৎ সাইরেন বাজিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের গাড়ি রাস্তার ধারে "দাদা বৌদি" খাবারের দোকানের ভাঙাচোরা চালাঘরে  দাঁড়াতেই চমকে গেলেন বাগদি দম্পতি। উরিব্বাস! এতো আমাদের দিদি!

 বাবু বাগদি ও মেনকা বাগদি - স্বামী স্ত্রী দুজনে মিলে এই হোটেল চালান। সেখানে গরম চাও পাওয়া যায়। 

তখন কাঠের উনুনে কড়াইয়ে কেবল কাঁচা সবজি আলু, বরবটি, কুমড়ো ছাড়া হয়েছে। একটু হকচকিয়ে গেলেন দোকানের মালিক দম্পতি। 

দোকানে আলো নেই। সেটা নজরে আসতেই মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বললেন, দোকানে বিদ্যুৎ নেই। তারপর সচিব আধিকারিকদের বললেন,  বিদ্যুৎ পাচ্ছে না কেন? দুয়ারে সরকার প্রকল্পে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দাও। এরপর দোকানের মালিক বাবু বাগদির  উদ্যেশে তিনি বলেন,  দুয়ারে সরকার প্রকল্প আছে না? সেখানে আমার দোকানে বিদ্যুৎ নেই বলে তুমি একটা দরখাস্ত করে দাও। তারপর, মোড়ায় বসে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, আমায় একটু চা দেবে।

তারপর উঠে নিজেই কেটলির ঢাকনা খুলে দেখে বললেন, চা আছে এতে?

সিকিউরিটির লোকেরা, একটু সরে বসতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী কে, কারণ কাছেই কাঠের উনুন। তাই মোড়া সরিয়ে বসলেন তিনি।

মোড়ায় বসে চা খেয়ে বেশ তারিফ করে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, বেশ হয়েছে। ভালো চা। তারপর জিজ্ঞেস করলেন, কি রান্না হচ্ছে? মেনকা বাগদি আপ্লুত হয়ে জানালেন,  আলু, বরবটি,কুমড়ো দিয়ে একটা পাঁচ মেশালি বা পাঁচ তরকারি।  দোকানের মালিক বাবু বাগদির স্ত্রী মেনকা বাগদীকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি খুব ভালো পারি, রান্না করতে। আমি রান্না করতে খুব ভালোবাসি। কী কী মশলা এই তরকারিতে দিয়েছো? কাঁচা লঙ্কা ফাটিয়ে দিলে আরোও ভালো  লাগবে।“  

তারপর নিজেই  খুন্তি নাড়িয়ে কিছুক্ষণ রান্না করেন তিনি। আলু সবজিকে ভালো করে কষে, তিনি বললেন, এবার জল ঢেলে দাও। দেখবে, হয়ে গেছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আচমকাই ঝটিকা সফরে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ছিলেন বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং।

(www.theoffnews.com - cooking Chief Minister Bengal Mamata Banerjee) 


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours